ড্রয়ে খুশি রাকিব, কাবরেরা বললেন ‘বিশ্বাস রাখুন’
৩৬ মিনিটে গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল হংকং। এরপর ১০ জনের দল নিয়ে লড়াই করছে স্বাগতিকেরা। ১০ জনের দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচে ফিরেছে। সব মিলিয়ে আজ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে হংকংয়ের বিপক্ষে ১–১ গোলে ড্র করেছে বাংলাদেশ।
স্বাগতিকদের বিপক্ষে এক পয়েন্ট পেয়েই খুশি বাংলাদেশের গোলদাতা রাকিব হোসেন। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এই ফরোয়ার্ড বলেন, ‘গত ১৫ দিন আমরা অনেক কষ্ট করেছি, এটা সেই কষ্টের ফল। আজ আমরা অনেক ভালো ফুটবল খেলেছি। প্রতিটি খেলোয়াড় কঠোর পরিশ্রম করেছে। যে কারণে ম্যাচটা ড্র করতে পেরেছি। তবে ম্যাচটা জিততে পারতাম; কিন্তু আমরা অনেকগুলো সুযোগ নষ্ট করেছি।’
৮৪ মিনিটে বাংলাদেশের সম্মিলিত এক আক্রমণে স্তব্ধতা নামে হংকংয়ের কাই তাক স্পোর্টস পার্কে। লাল উৎসব ফিকে করে ব্যতিক্রম এক উদ্যাপনে মাতেন রাকিব হোসেন–ফয়সাল আহমেদ–ফাহমিদুল ইসলামরা। ফাহিমের ক্রস নিচু হেডে বক্সে পাঠান ফাহামিদুল, সেখানে থেকে ঠান্ডা মাথায় বলটা হংকংয়ের জালে পাঠিয়েই উদ্যাপন শুরু রাকিবের। ততক্ষণে ৫০ হাজার দর্শকের কাই তাকে সুনসান নীরবতা। স্বাগতিক দর্শকদের এভাবে চুপ করাতে পারাটাও কম কী!
রাকিব বললেন, এত দর্শকের সামনে খেলাটা কঠিনই ছিল। তবে বাংলাদেশে এমন একটা স্টেডিয়াম থাকলে অ্যাওয়েতে তাদের পারফরম্যান্স আরও ভালো হতো, ‘এত দর্শকের সামনে খেলা সহজ ছিল না। আমরা এমন একটা মাঠ পাওয়ার যোগ্য। যখন বাইরে ম্যাচগুলো খেলতে আসি, তখন আমাদের প্রতিকূলতার মধ্যে খেলতে হয়। এ রকম যদি একটা মাঠ থাকত বাংলাদেশে, তাহলে আমরা আরও ভালো ফল উপহার দিতে পারতাম।’
১–১ ড্রয়ের পরও আফসোসটা থেকে গেল বাংলাদেশের। রেফারির শেষ বাঁশির পর শমিত সোম–সাদ উদ্দিনদের মলিন চেহারাই বলে দেয় তৃষ্ণাটা মেটেনি। হয়তো ভাবেননি এত দ্রুত ম্যাচের সময়টা ফুরিয়ে যাবে। ম্যাচের শেষ দিকে হামজা চৌধুরীও রেফারিকে বারবার সময়ের কথা মনে করিয়ে দেন।
বাছাইপর্বে চার ম্যাচ খেলে দুই পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু পয়েন্টটা আরও বেশি হতে পারত। এখানেই আক্ষেপ রাকিবের, ‘শেষ দুই ম্যাচেই আমরা ভালো খেলেছি। যদি ভাগ্য একটু সহায় হতো, তাহলে প্রথম ম্যাচটা আমরা ড্র করতে পারতাম এবং এই ম্যাচটা জিততে পারতাম।’
বাংলাদেশ কোচ অবশ্য শিষ্যদের পারফরম্যান্সে ততটা অসস্তুষ্ট নন। বললেন বিশ্বাসটা রাখতে, ‘আমরা আবার বলব, বিশ্বাস রাখুন। এই বিশ্বাসের পথটা সার্থক। আমরা সবাই একই লক্ষ্যে একতাবদ্ধ। আমরা জানি আমরা খুব ভালো খেলছি, পারফর্ম করছি, কিন্তু তিন পয়েন্টটাই আমাদের অভাব। একবার সেই তিন পয়েন্ট আমরা পেলে নিশ্চিতভাবেই পরবর্তী ধাপে পৌঁছাতে পারব। আশা করি, ভারতের বিপক্ষে পরের ম্যাচেই সেটা হবে।’
৬৫ মিনিট পর বাংলাদেশ যখন ম্যাচে একছত্র আধিপত্য নেয়, তখনই খেলার কৌশলটা বদলে ফেলে হংকং। ঢাল হিসেবে রক্ষণাত্মক ফুটবলকে বেছে নেয় ১০ জনের দলটি। পাশাপাশি সময় নষ্ট করার জন্য বারবার বল নষ্ট করা, খেলোয়াড় বদল এবং ছোটখাটো ফাউলে কালক্ষেপণ। এ সবই যেন ছিল তাদের পরিকল্পনার অংশ। শেষ পর্যন্ত যদিও সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। একের পর এক আক্রমণ করে হংকংয়ের রক্ষণদেয়াল ঠিকই ভেঙেছে বাংলাদেশ।
তবে তিন পয়েন্ট পেলে বেশি খুশি হতেন বাংলাদেশ কোচ। ম্যাচের পর তেমনটাই বলেছেন তিনি, ‘আমরা আরও বেশি প্রাপ্য ছিলাম, আরও পয়েন্ট পাওয়ার যোগ্য ছিলাম। কিন্তু এই উইন্ডো শেষ করছি এক পয়েন্ট নিয়ে। পয়েন্টের দিক থেকে যা-ই হোক, ম্যাচটা ছিল খুব প্রতিযোগিতামূলক, বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা ওদের বিপক্ষে ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করেছি। আমার মনে হয়, আজ আমরা জয়ও আদায় করে নিতে পারতাম।’