আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের ‘সেঞ্চুরি’, ৪৪ বছর বয়সী গোলকিপার, বিশ্বকাপজয়ী ২৬—সংখ্যায় ক্লাব বিশ্বকাপ
১৪ জুন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হচ্ছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। বর্ধিত কলেবরের বিশ্বকাপে এবার অংশ নিচ্ছে ৩২টি ক্লাব। সব কটি ক্লাবই দল ঘোষণা করেছে। সেই দল নিয়ে বিশ্লেষণ করে ফিফা বের করেছে চমকপ্রদ সব সংখ্যা। যেমন কোন দেশের খেলোয়াড়েরা সবচেয়ে বেশি আছেন, সবচেয়ে বেশি বয়সী বা সবচেয়ে কম বয়সী কে, দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা কয়জন আছেন, সবচেয়ে লম্বা ও খাটো খেলোয়াড়ই–বা কে।
ক্লাবে বিশ্বকাপের দলগুলোয় সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় ব্রাজিলের—১৪২ জন। এ ছাড়া ১০০-র বেশি খেলোয়াড় আছে শুধু আর্জেন্টিনার (১০৪)। তালিকায় এরপর আছে স্প্যানিশ (৫৪), পর্তুগিজ (৪৯), আমেরিকান (৪২), মেক্সিকান (৪০), ফরাসি (৩৭), জার্মান (৩৬), ইতালিয়ান (৩৬), মরোক্কান (৩১) এবং দক্ষিণ আফ্রিকান (৩১) খেলোয়াড়েরা।
ক্লাব বিশ্বকাপে যাঁরা খেলবেন, তাঁদের মধ্যে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি গোল ইন্টার মায়ামির লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনার হয়ে ১১২ গোল করেছেন দলটির বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। এরপর আছেন হ্যারি কেইন (বায়ার্ন মিউনিখ, ইংল্যান্ড)—৭৩, লুইস সুয়ারেজ (ইন্টার মায়ামি, উরুগুয়ে)—৬৯, আলেকসান্দার মিত্রোভিচ (আল হিলাল, সার্বিয়া)—৬২, এদিনসন কাভানি (বোকা জুনিয়র্স, উরুগুয়ে)—৫৮, অলিভিয়ের জিরু (এলএ এফসি, ফ্রান্স)—৫৭, মেহদী তারেমি (ইন্টার মিলান, ইরান)—৫৫ ও কিলিয়ান এমবাপ্পে (রিয়াল মাদ্রিদ, ফ্রান্স)—৫০।
জাতীয় দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচও মেসির (১৯৩)। এরপর আছেন লুকা মদরিচ (রিয়াল, ক্রোয়েশিয়া, ১৮৮) এবং সের্হিও রামোস (মন্তেরেই, স্পেন ১৮০)।
ক্লাব বিশ্বকাপ শুরুর দিন ফ্লুমিনেন্সের গোলকিপার ফাবিওর বয়স হবে ৪৪ বছর ২৫৭ দিন। এবারের ক্লাব বিশ্বকাপে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় এই ব্রাজিলিয়ানই। এরপরই আছেন তার ক্লাব সতীর্থ এবং সেন্টারব্যাক থিয়াগো সিলভা (৪০), মামেলোদি সানডাউনসের গোলকিপার ডেনিস ওনিয়াঙ্গো (৪০), রিয়ালের মিডফিল্ডার লুকা মদরিচ (৩৯) এবং পাচুকার ডিফেন্ডার গুস্তাভো কাবরাল (৩৯)।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ফাবিও যুক্তরাষ্ট্রে এই টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছেন তাঁর প্রথম ফিফা টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার ২৮ বছর পর। ১৯৯৭ সালে রোনালদিনিওর সঙ্গে মিলে তিনি ব্রাজিলকে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন। বায়ার্ন মিউনিখের কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানির চেয়ে ফাবিও পাঁচ বছরের বড়।
ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে ২০২৫ সালে সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ২৬ বছর বয়সী ফরাসি খেলোয়াড় রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৩২ ম্যাচে ২৯টি গোল করেছেন। এমবাপ্পের পরে আছেন উসমান দেম্বেলে (পিএসজির হয়ে ৩০ ম্যাচে ২৫ গোল), সেরহু গিরাসি (বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে ২৬ ম্যাচে ২২ গোল) এবং ভানজেলিস পাভলিদিস (বেনফিকার হয়ে ২৯ ম্যাচে ২২ গোল)।
বিশ্বকাপজয়ী ২৬ জন আছেন এবারের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে। তাঁদের মধ্যে সের্হিও বুসকেতস ও সের্হিও রামোস স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন ২০১০ সালে। জার্মানির হয়ে ২০১৪ বিশ্বকাপ জেতা দুজন টমাস মুলার ও মানুয়েল নয়্যার। ২০১৮ বিশ্বকাপজয়ী ফ্রান্স দলের আছেন ৯ জন—উসমান দেম্বেলে, অলিভিয়ের জিরু, আঁতোয়ান গ্রিজমান, লুকাস এর্নান্দেজ, প্রেসনেল কিমপেম্বে, তমাস লেমার, উগো লরিস, কিলিয়ান এমবাপ্পে ও বেঞ্জামিন পাভার। ২০২২ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার ১৩ জন আছেন ক্লাব বিশ্বকাপে—মার্কোস আকুনিয়া, হুলিয়ান আলভারেজ, ফ্রাঙ্কো আরমানি, আনহেল কোরেয়া, রদ্রিগো দি পল, আনহেল দি মারিয়া, এনজো ফার্নান্দেজ, লাওতারো মার্টিনেজ, লিওনেল মেসি, নাহুয়েল মলিনা, গঞ্জালো মন্তিয়েল, নিকোলাস ওতামেন্দি ও হেরমান পেসেলা।
আতলেতিকো মাদ্রিদেই সবচেয়ে বেশি ছয়জন বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড়—আলভারেজ, কোরেয়া, দি পল, গ্রিজমান, লেমার ও মলিনা।
জাপানের উরাওয়া রেড ডায়মন্ডসের মিডফিল্ডার তাকেশি ওয়াদা গত সপ্তাহেই ১৬ বছরে পা দিয়েছেন। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় ওয়াদাই। কম বয়সী খেলোয়াড়দের তালিকায় তার পরেই আছেন—ডর্টমুন্ডের উইঙ্গার মাটিস আলবার্ট (টুর্নামেন্ট শুরুর সময় ১৬ বছর ২৪ দিন), বায়ার্নের ডিফেন্ডার কাসিয়ানো কিয়ালা (১৬ বছর ১৫৪ দিন), এলএ এফসির মিডফিল্ডার জুড টেরি (১৬ বছর ২৪৯ দিন), বায়ার্নের ফরোয়ার্ড মাইক উইজডম (১৬ বছর ২৬৩ দিন)।
সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড়ের বয়স ২২ বছর (৮০ জন খেলোয়াড়), এরপর ২১ বছর (৭৭ জন), ১৯ বছর (৬৯ জন), ২৫ বছর (৬৬ জন) এবং ২৯ বছর (৬৪ জন)।
আল হিলালের উইংব্যাক জোয়াও কানসেলো ক্লাব বিশ্বকাপে মোট ছয়টি দলের হয়ে খেলেছেন। ৩১ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় এর আগে বেনফিকা, ইন্টার মিলান, জুভেন্টাস, ম্যানচেস্টার সিটি এবং বায়ার্নের হয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে মাঠে নেমেছেন।
ফ্লামেঙ্গোর রাইটব্যাক দানিলো এর আগে এফসি পোর্তো, রিয়াল, সিটি এবং জুভেন্টাসে খেলেছেন। আশরাফ হাকিমি চারটি দলের হয়ে খেলেছেন—রিয়াল, ডর্টমুন্ড, ইন্টার মিলান ও পিএসজি।
২.০১
ফ্লুমিনেন্সের গোলকিপার গুস্তাভো রামালিও সবচেয়ে লম্বা খেলোয়াড় ২.০১ মিটার (৬ ফুট ৭ ইঞ্চি) লম্বা। তার পরেই রয়েছেন আরও দুই গোলকিপার পিএসজির জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা (২.০ মিটার) এবং চেলসির মাইক পেন্ডার্স (২.০ মিটার)। গোলকিপারদের বাইরে সবচেয়ে লম্বা খেলোয়াড় হচ্ছেন বায়ার্নের ১৭ বছর বয়সী সুইডিশ স্ট্রাইকার ইয়োনাহ কুসি-আসারে (১.৯৮ মিটার)।
১.৬০
সবচেয়ে খর্বাকৃতির খেলোয়াড়রা আল হিলালের কাইয়ো সেজার এবং ফ্লুমিনেন্সের ইয়েফেরসন সোতেলদো, দুইজনই ১.৬০ মিটার বা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি লম্বা। তাদের পরেই মামেলোদি সানডাউনসের দুই খেলোয়াড় সিয়াবোঙ্গা মাবেনা এবং থাটো সিবিয়া (১.৬২ মিটার) রয়েছেন।