০.০৫ শতাংশ সম্ভাবনা নিয়ে এসে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবের সামনে এখন ফাইনালের হাতছানি

ক্লাব বিশ্বকাপের শুরুতে ফ্লুমিনেন্সের শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা ছিল ০.০৫ শতাংশ। কিন্তু সেই দলটি এখন খেলছে সেমিফাইনালে। স্বপ্ন দেখছে ফাইনালে যাওয়ার।

ক্লাব বিশ্বকাপে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে ফ্লুমিনেন্সএএফপি

ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নিতে ফ্লুমিনেন্স যখন যুক্তরাষ্ট্রে আসে, তখন কেউ পাত্তা দেয়নি তাদের। গ্রুপ পর্ব থেকেই দলটির বিদায়ও দেখে ফেলেছিলেন অনেকে। ফুটবলের পরিসংখ্যানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অপ্টা জানিয়েছিল, ফ্লুমিনেন্সের শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা মাত্র ০.০৫ শতাংশ। এটুকু সম্ভাবনা থাকা আর না থাকা তো একই কথা!

সেই ফ্লুমিনেন্স অবশ্য বদলে দিয়েছে সব হিসাব–নিকাশ ও ভবিষ্যদ্বাণী। যাদের গ্রুপ পর্ব থেকে আগাম বিদায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তারাই এখন ক্লাব বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছে। এখন স্বপ্ন দেখছে শিরোপা জয়েরও। মাত্র দুটি ম্যাচ জিতলেই সেই স্বপ্ন পূরণ হবে তাদের।

সেমিফাইনালে আসার পথে গ্রুপ পর্বে অপরাজিত থেকে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে ফ্লুমিনেন্স। শেষ ষোলোয় তাদের প্রতিপক্ষ ছিল চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালিস্ট ইন্টার মিলান।

সে ম্যাচে ইন্টার ফেবারিট হলেও সবাইকে চমকে দেয় ফ্লুমিনেন্স এবং ইতিহাস গড়া ২–০ গোলের জয়ে নিশ্চিত করে কোয়ার্টার ফাইনাল। আর শেষ আটে ফ্লুমিনেন্স ধরাশায়ী করে সৌদি প্রো লিগের দল আল হিলালকে। আর এখন সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ চেলসি।

আরও পড়ুন

ফ্লুমিনেন্সের এই নাটকীয় উত্থান অবশ্য আকস্মিক কিছু নয়। এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন কোচ রেনাতো গাউচো। অবনমন ঠেকানোর লড়াই করা দলটিকে এখন তিনি ‘জায়ান্ট–কিলার’—এ রূপান্তরিত করেছেন। সেমিফাইনালেও তিনি অব্যাহত রাখতে চান সে ধারা। পাশপাশি বড় ক্লাবগুলোর সঙ্গে নিজেদের পার্থক্যের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

ফ্লুমিনেন্স কি পারবে ফাইনালে যেতে
এএফপি

সেমিফাইনালের আগে গাউচো বলেছেন, ‘আমি যখন অবহেলিত হওয়ার কথা বলি, সব ক্লাবের প্রতি সম্মান রেখে বলছি, আমি তখন আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা বলি। ফ্লুমিনেন্সের আর্থিক সামর্থ্য এসব বড় ক্লাবের মাত্র ১০ শতাংশ। ফলে বড় ক্লাবগুলোর কাছে সেরা খেলোয়াড়দের দলে নেওয়ার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও সম্পদ রয়েছে।’

তবে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার পরও কীভাবে সেমিতে আসার স্বপ্ন পূরণ হলো তা জানিয়ে গাউচো বলেছেন, ‘ফ্লুমিনেন্সের সেমিফাইনালে উঠে আসার মূল কারণ দলের মানসিকতা। খেলোয়াড়দের মাঠের পারফরম্যান্স, তাদের মনোযোগ, একাগ্রতা এবং পুরো দলের কঠোর পরিশ্রমই এত দূর নিয়ে এসেছে।’

আরও পড়ুন

এরপর কথা বলেছেন চেলসির বিপক্ষে সেমিফাইনাল ম্যাচ নিয়েও। কীভাবে এই ম্যাচ খেলতে চান জানিয়ে ফ্লুমিনেন্স কোচ বলেছেন, ‘এটা হবে ধৈর্যের খেলা। আমরা সতর্ক থাকব। নিশ্চয়ই বলের দখল অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে। কারণ, খেলাটা শুরু হবে বেলা তিনটায়। গরমটা তখন অসহনীয়! যদি প্রতিপক্ষের পেছনে শুধু দৌড়াতেই হয়, যদি তোমার দখলে বল না থাকে, তাহলে নিজেই ক্লান্ত হয়ে পড়বে। চেলসির প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা আছে। কিন্তু এটা একধরনের দাবা খেলা। আমার মতে, ম্যাচটি হবে খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং কম সুযোগই পাওয়া যাবে।’

ইস্ট রাদারফোর্ডে আজ বাংলাদেশ সময় রাত একটায় সেমিফাইনালে চেলসির মুখোমুখি হবে ফ্লুমিনেন্স।