‘বলবয়’ থেকে অভিষেকেই গোল করা ছেলেটিকে যেভাবে ভুলে গিয়েছিলেন গার্দিওলা

ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে গতকাল রাতে অভিষেকেই গোল পেয়েছেন মিকা হ্যামিল্টনএএফপি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একসঙ্গে দুটি ছবি ভাসছে। খুদে এক ছেলেকে কানে কানে কী যেন বলছেন পেপ গার্দিওলা। পাশেই আরেকটি ছবি। দেখলে বোঝা যায় প্রথম ছবিতে গার্দিওলা যে ছেলেটির কানপড়া দিচ্ছিলেন, সেই ছেলেটিই বড় হয়ে ওঠার পর ছবিটি তোলা হয়েছে। নাম তাঁর মিকা হ্যামিল্টন। ২০ বছর বয়সী উইঙ্গারের গতকাল অভিষেক হলো ম্যানচেস্টার সিটির মূল দলে। সেটাও চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো প্রতিযোগিতায়। সিটি কোচ গার্দিওলা অবশ্য পাকা জহুরী। অভিষেকে মিকার গোল পাওয়াই বলে দেয় গার্দিওলা রত্ন চেনেন।

আরও পড়ুন

কিন্তু সিটি কোচ সম্ভবত মিকার অতীত ভুলে গিয়েছিলেন। ৯ বছর বয়সে সিটির একাডেমিতে ভর্তি হন এই ইংরেজ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। আগেই শেষ ষোলো নিশ্চিত করা সিটি রেড স্টার বেলগ্রেডের বিপক্ষে ৩-২ গোলে জেতার পর গার্দিওলাকে মিকার সেই ছবিটি দেখানো হয়, যেখানে বলবয়ের ভূমিকায় এই উইঙ্গার। আর কানে কানে তাঁকে কিছু একটা বোঝাচ্ছিলেন গার্দিওলা। ছবিটি ২০১৭ সালে সিটি এবং ক্রিস্টাল প্যালেসের মধ্যকার ম্যাচের। সে ম্যাচে খেলোয়াড়দের মন্থর গতির খেলায় মন ভরছিল না গার্দিওলার। সিটি কোচ তাই বলবয় মিকা এবং তাঁর সাঙ্গ-পাঙ্গদের ডেকে ম্যাচের গতি বাড়াতে বল নিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলেছিলেন। কারণ ম্যাচের মধ্যে ফাউল বা বল দাগের বাইরে যাওয়ার পর খেলা পুনরায় শুরু হতে দেরি হচ্ছিল।

ছয় বছর আগের সেই ছবিটি দেখে শুরুতে মিকাকে চিনতে পারেননি গার্দিওলা। অথচ ম্যাচে তাঁকেই খেলিয়েছেন! মেইল অনলাইন জানিয়েছে, ছবিটিতে চোখ রেখেই গার্দিওলা বলেছেন, ‘মনে ছিল না! ছয় বছর আগে? কী গোলটা করল! আর ম্যাচটাও হয়েছে দারুণ। ওকে নিয়ে আমি সন্তুষ্ট।’ গার্দিওলা এরপর মিকা সমন্ধে বলে যান, ‘ও আমাদের সঙ্গে প্রায়ই অনুশীলন করে। ওয়ান-ওয়ানে আমরা ওর দক্ষতা দেখেছি। দারুণ একটি গোলের পাশাপাশি পেনাল্টিও এনে দিয়েছে। যখন ও ওয়ান-ওয়ানে খেলতে পারছে না তখন প্রচুর পাস দিয়েছে। রক্ষণেও আক্রমণাত্মক মানসিকতায় খেলেছে।’

আরও পড়ুন

২০০৩ সালে জন্ম নেওয়া মিকা সিটির অনূর্ধ্ব-৯ দল দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। তাঁকে নিয়ে সিটির ওয়েবসাইটে লেখা হয়েছে, ‘বৈচিত্র্য আছে। মাঝমাঠে খেলার পাশাপাশি দুই প্রান্তেও গতি দিয়ে রক্ষণে চিড় ধরাতে পারেন এবং সেটা সবগুলো বয়সভিত্তিক দলেই দেখিয়ে এসেছেন।’ মিকা মূলত বাঁ উইংয়েই বেশি খেলেন। কিন্তু অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের পাশাপাশি ডান প্রান্তের উইঙ্গার হিসেবেও দক্ষ। সিটির অনূর্ধ্ব-১৮ দলে ভালোভাবে নিজের জাত চেনানোর পর তাঁর উঠে আসার পথটা সুগম হয়।

গোল করা পরাবাস্তব অনুভূতি হয়েছে মিকার
এএফপি

সিটির মূল দলে অভিষেকের ১৯ মিনিটেই গোল পেয়ে যাওয়ায় মিকার শুরুটা নিশ্চয়ই স্বপ্নের মতোই হলো? উত্তর শুনুন এই তরুণের মুখেই, ‘সত্যি বলতে কী বলা উচিত বুঝতে পারছি না। পরাবাস্তব অনুভূতি হচ্ছে। গোলটাও সবাই দেখেছেন। তখন ঠিক কী করা উচিত ছিল জানি না। তিনি (গার্দিওলা) আমাকে ডান উইংয়ে রেখেছিলেন, যেটা আমার জন্য একটু আলাদা। ওই পজিশনে সেভাবে খেলিনি। তাই চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি এবং প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি।’

আরও পড়ুন