বায়ার্ন ম্যাচের আগে যে ৪ কারণে পিএসজির এমন দুরবস্থা

পিএসজিকে জেতাতে পারেননি নেইমারছবি: এএফপি

মৌসুমটা দারুণভাবে শুরু করেছিল পিএসজি। একের পর এক জয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল তারা। ছন্দে ছিলেন দলের তিন তারকা লিওনেল মেসি–নেইমার–কিলিয়ান এমবাপ্পেও। তবে বিশ্বকাপ বিরতির পর হঠাৎ করেই যেন পথ হারিয়েছে প্যারিসের পরাশক্তিরা। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখের মুখোমুখি হওয়ার আগে পিএসজি হেরেছে টানা দুই ম্যাচে।

মার্শেইয়ের কাছে হেরে ফ্রেঞ্চ কাপ থেকে বিদায় নেওয়ার পর গতকাল তারা লিগ ম্যাচেও মোনাকোর কাছে হেরেছে ৩–১ গোলে।  ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে নামার আগে এই দুই হার দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে দলটির কোচ ক্রিস্তফ গালতিয়েরের। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন হঠাৎ করে এমন দুঃসময় দেখছে পিএসজি?

আরও পড়ুন

মেসি–নেইমার–এমবাপ্পেকে একসঙ্গে না পাওয়া

বিশ্বকাপের পর একটি ম্যাচ ছাড়া মেসি–নেইমার–এমবাপ্পেকে একসঙ্গে মাঠে পায়নি পিএসজি। সর্বশেষ চার ম্যাচের কোনোটিতেই এ তিনজনকে একসঙ্গে দেখা যায়নি। যেখানে দুই ম্যাচে মেসি–জাদুতে জিতলেও বাকি দুই ম্যাচে হেরেছে তারা। এমএনএম ত্রয়ীকে একসঙ্গে না পেয়ে আক্রমণে বেশ ভুগছে পিএসজি।

গতকাল রাতে মোনাকোর বিপক্ষেও তিনজনকে একসঙ্গে পাওয়া যায়নি। নেইমার ফিরলেও চোটের কারণে বাইরে ছিলেন মেসি ও এমবাপ্পে। যার প্রভাব স্পষ্টভাবে পড়েছে দলটির পারফরম্যান্সে। এখন আগামী মঙ্গলবার বায়ার্নের বিপক্ষে প্রথম লেগেও এ তিনজনকে একসঙ্গে পাওয়া নিয়ে শঙ্কা আছে। যা ম্যাচের আগেই অনেকটা পিছিয়ে দিচ্ছে পিএসজিকে।

মেসি, নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পের একসঙ্গে খেলতে না পারায় পিএসজির সাম্প্রতিক ব্যর্থতার বড় কারণ
ছবি: এএফপি

নেইমারের চোট ও ছন্দহীনতা

বিশ্বকাপের আগে দারুণ ছন্দে ছিলেন নেইমার। গোল এবং গোলে সহায়তায় নিজেকে যেন নতুন করে খুঁজে পেয়েছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। বিশ্বকাপ থেকে ফিরে এসে প্রথম ম্যাচেই দেখেছেন লাল কার্ড। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে নেমে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিলেও নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরার আগেই পড়লেন চোটে।

মোনাকোর বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরলেও নিজের সেরা ছন্দে দেখা যায়নি নেইমারকে। প্রতিপক্ষের অ্যাটাকিং থার্ডেও খুব একটা প্রভাব রাখতে পারেননি। বায়ার্ন ম্যাচের আগে নেইমার নিজের সেরা ছন্দে ফিরতে পারেন কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।

আরও পড়ুন

বিকল্পের অভাব

মেসি–নেইমার–এমবাপ্পের যোগ্য বিকল্প না থাকাও বেশ ভোগাচ্ছে পিএসজিকে। এই তিনজনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা পিএসজিকে সামগ্রিকভাবে বিপদে ফেলছে। মোনাকোর বিপক্ষে গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মাকে বাদ দিলে দলের অন্যতম সেরা পারফরমার ছিলেন ১৬ বছর বয়সী ওয়ারেন জাইরে–এমেরি। আক্রমণে যোগ্য বিকল্প না থাকা বায়ার্ন ম্যাচে ভোগাতে পারে পিএসজিকে।

আরও পড়ুন

রক্ষণে দুর্বলতা

রক্ষণে বেশ ভুগছে পিএসজি। সর্বশেষ ৫ ম্যাচের প্রতিটিতে গোল হজম করেছে দলটি। গোলরক্ষক দোন্নারুম্মা বাধা হয়ে না দাঁড়ালে মোনাকোর বিপক্ষে হারের ব্যবধানটা আরও বড় হতে পারত। দলের রক্ষণ দুর্বলতার কথা ম্যাচ শেষে স্বীকার করেছেন পিএসজি কোচ ক্রিস্তফ গালতিয়েরও।

আরও পড়ুন

তিনি বলেছেন, ‘(বিশ্বকাপ শেষে) আবার মৌসুম শুরুর পর আমরা অনেক গোল হজম করেছি। রক্ষণে আমাদের অবশ্যই ভারসাম্য ফেরাতে হবে।’ হঠাৎ করেই পিএসজির এই রক্ষণ দুর্বলতার একটা কারণ চোটের কারণে লম্বা সময় প্রেসনেল কিমপেম্বের না থাকা। চোট কাটিয়ে অবশ্য গতকাল ফিরে ১০ মিনিট মাঠে ছিলেন এই ফরাসি তারকা। এ ছাড়া যাঁরা আছেন, তাঁরা ঠিক সেভাবে সংগঠিত নন। এখন দেখার বিষয়, বায়ার্ন ম্যাচের আগে সেই ভারসাম্য ফেরে কি না।