আর্জেন্টিনা দলে ম্যাক অ্যালিস্টারের ভাই, মনে করিয়ে দিল যে ইতিহাস

অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার (বাঁয়ে) ও কেভিন ম্যাক অ্যালিস্টারছবি: প্রথম আলো গ্রাফিক্‌স

আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলে ডাক পেয়েছেন কেভিন ম্যাক অ্যালিস্টার। বেলজিয়ামের ক্লাব রয়্যাল ইউনিয়ন সেঁ-জিলোয়াসের এই ডিফেন্ডার আর্জেন্টিনার তারকা মিডফিল্ডার অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের বড় ভাই। এনজো ফার্নান্দেজ চোটে পড়ায় আর্জেন্টিনার অ্যাঙ্গোলা সফরের দলে যুক্ত করা হয়েছে কেভিনকে।

এর ফলে আফ্রিকা সফরে একসঙ্গে থাকছেন দুই ভাই অ্যালেক্সিস ও কেভিন। এই দৃশ্যটা যেন ফিরিয়ে আনছে আর্জেন্টাইন ফুটবলের শতবর্ষের পুরোনো এক ঐতিহ্য। আর্জেন্টিনার শত বছরের বেশি ইতিহাসে এর আগে ২৯ জোড়া ভাই জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন একসঙ্গে। ম্যাক অ্যালিস্টার ভ্রাতৃদ্বয় সেই তালিকার ত্রিশতম জুটি। এর মধ্যে ১২ জোড়া ভাই আবার একই ম্যাচে একসঙ্গে মাঠে নামতে পেরেছিলেন।

দুই ভাইয়ের মধ্যে অ্যালেক্সিস তো বিশ্বকাপজয়ী। কিন্তু কেভিনের পথটা মোটেও সহজ ছিল না। ২০১৭ সালের সাউথ আমেরিকান অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপের দলে ডাক পেলেও বাঁ পায়ের গুরুতর চোটে (এএসিএল) টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যান তিনি। এখন, ২৮ বছর বয়সে সেই কেভিন আবার জাতীয় দলের জার্সিতে ফিরছেন—আর সেটা নিজের ভাইয়ের সঙ্গে। আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সে একসঙ্গে খেলার পর এবার জাতীয় দলে ডাক। দুই ভাইয়ের জন্যই মুহূর্তটা নিঃসন্দেহে বিশেষ।

আরও পড়ুন

আর্জেন্টিনার ফুটবলে ভাইদের একসঙ্গে খেলার গল্পের শুরুটা বহু আগে। এই তালিকায় কিংবদন্তি ব্রাউন পরিবার একটা বিশেষ জায়গা নিয়ে থাকবে। পরিবারের পাঁচ সদস্যই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে এরনেস্তো ও জর্জ গিবসন ব্রাউন ১৯০২ সালে অভিষেক ম্যাচেই একসঙ্গে মাঠে নামেন।

এক বছর পর ১৯০৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মাঠে ছিলেন ব্রাউন পরিবারের তিন ভাই। সেদিনই মাঠে নামেন মুর পরিবারের দুই ভাই, ইউজেনিও ও জুয়ান, যাঁরা আবার যমজ! এমন দৃশ্য হয়তো ফুটবল ইতিহাসেও বিরল।

ভাইদের একসঙ্গে বিশ্বকাপে খেলার ঘটনাও আছে আর্জেন্টিনার ইতিহাসে। ১৯৩০ উরুগুয়ে বিশ্বকাপে জাতীয় দলের হয়ে একসঙ্গে খেলেছিলেন দুই ভাই হুয়ান ও মারিনো এভারিস্তি। আর্জেন্টিনার হয়ে দুই ভাইয়ের একসঙ্গে বিশ্বকাপে খেলার সেটিই একমাত্র ঘটনা। শুধু খেলাই নয়, সেবার তাঁরা একসঙ্গে ফাইনালেও নামেন।

আরও পড়ুন

এ ধরনের গল্পগুলো আর্জেন্টাইন ফুটবলের শুরুর যুগে প্রায়ই দেখা যেত। কিন্তু আধুনিক সময়ে তা ক্রমেই বিরল হয়ে গেছে। দীর্ঘ বিরতির পর ১৯৬৬ সালে দানিয়েল ও এরমিনদো ওনেগা ভাইয়েরা আবার এই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনেন। এরপর ১৯৭৫ সালে দানিয়েল ও মারিও কিলার ভাইয়েরা একসঙ্গে খেলেন। তারপর আবার লম্বা বিরতি।

এই শতকে একমাত্র উদাহরণ মিলিতো ভাইদের—গ্যাব্রিয়েল ও দিয়েগো মিলিতো। তাঁরা শেষবার একসঙ্গে খেলেছিলেন ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর, সাইতামায় জাপানের কাছে ১–০ ব্যবধানে হারা ম্যাচে।

এরপর বুরদিসো, ফুনেস মোরি, সিমিওনে, কারবোনি—অনেক ভাই জুটি তৈরি হলেও, কেউই একসঙ্গে মাঠে নামার সুযোগ পাননি।

এবার ম্যাক অ্যালিস্টার ভাইয়েরা কি পারবেন সেই ইতিহাসে নাম লেখাতে?