আর্জেন্টিনার জন্য ‘জীবন দিয়েছেন’ হিগুয়েইন

তিনটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে আর্জেন্টিনার হারের জন্য অনেকেই দুষে থাকেন হিগুয়েইনের ব্যর্থতাকেফাইল ছবি

গঞ্জালো হিগুয়েইন আর্জেন্টিনার জার্সি তুলে রেখেছেন ২০১৯ সালে। অবসর নেওয়ার আগে আর্জেন্টিনার জার্সিতে খেলেছেন ৭৫ ম্যাচ, করেছেন ৩১ গোল। আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় তাঁর অবস্থান পঞ্চমে। খেলেছেন তিনটি বিশ্বকাপ। আছে বিশ্বকাপ হ্যাটট্রিকও। তবে এসব কীর্তির জন্য নয়, আর্জেন্টিনার সাবেক এই স্ট্রাইকারকে অনেকেই মনে রাখেন জাতীয় দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করার জন্য।

২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানির কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। সে ম্যাচে গোলের নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট করেন হিগুয়েইন। বিশ্বকাপ ফাইনালের পরের বছর কোপা আমেরিকা ফাইনালেও সুযোগ পেয়ে গোল করতে পারেননি । এরপর ২০১৬ কোপা আমেরিকা ফাইনালেও একই গল্প। গোলের সহজ সুযোগ পেয়ে আবারও নষ্ট করেছেন। এই তিনটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে আর্জেন্টিনার হারের জন্য অনেকেই দুষে থাকেন হিগুয়েইনের ব্যর্থতাকে।

আরও পড়ুন

হিগুয়েইন ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করেছেন ইউরোপিয়ান ফুটবলে। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে খেলছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে। ইন্টার মায়ামির হয়ে ছন্দেও আছেন এই ফুটবলার। এই মৌসুমে ২৫ ম্যাচে করেছেন ১৩ গোল। ইউরোপিয়ান ফুটবল থেকে মেজর লিগ সকার—হিগুয়েইন যে দলে যেমনই খেলেছেন, আর্জেন্টিনার হয়ে তিনটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে ব্যর্থতার ভার তাঁকে বয়ে বেড়াতে হয়েছে।

কোনো সমালোচনাই আগের মতো বিদ্ধ করতে পারে না হিগুয়েইনকে
ছবি: এএফপি

এখনো আর্জেন্টিনার আক্ষেপের গল্প লিখতে গেলে সমর্থকেরা তাঁকেই দোষেন। তবে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসে হিগুয়েইন স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন, কোনো সমালোচনাই আগের মতো তাঁকে আর বিদ্ধ করতে পারে না।

আর্জেন্টিনার জন্য তিনি নিজের জীবন দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন দলটির সাবেক স্ট্রাইকার, ‘জীবনের এমন একটা পর্যায়ে আছি , যখন প্রশংসা কিংবা সমালোচনা—কোনোটাই আগের মতো গায়ে মাখি না। কারণ, আর সব সতীর্থের মতো আমিও আমার দলের জন্য, দেশের জন্য জীবন বিলিয়ে দিয়েছি। কিংবা জীবনের চেয়ে বেশি কিছু দিয়েছি। আর্জেন্টিনার হয়ে আমি যা করেছি, সে জন্য আমি গর্বিত, আক্ষেপের কিছুই নেই।’

আরও পড়ুন

হিগুয়েইন মনে করিয়ে দিয়েছেন, ফুটবলারদের জীবন মোটেই সহজ নয়। ব্যর্থতার শঙ্কা, প্রত্যাশার চাপ সামলানোর পাশাপাশি নিজের মতো অনেক কিছুই করতে পারেন না তাঁরা। ইন্টার মায়ামির এই স্ট্রাইকারের কাছে এই জীবনটা ছিল অস্বাভাবিক, ‘১৫ বছর অস্বাভাবিক জীবন যাপন করেছি। মানুষ ভাবে, আমাদের জীবনটা অনেক সহজ। কিন্তু একদমই তা নয়। আমরা আর পাঁচজনের মতো রাস্তায় যেতে পারি না। কেউ অপমান করলে জবাব দিতে পারি না। যদি কেউ জবাব দেয়, তাহলে তার ফলাফল হয় আরও খারাপ। খেলায় হারলে, গোলের সুযোগ নষ্ট করলে আপনি রাস্তায় বের হতে পারবেন না। জীবনের এই সময়ে এসে আমি আর এসব সহ্য করতে পারব না।’