বিশ্বকাপের দলগুলোতেও ইউরোপিয়ান ক্লাবের দাপট

বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় বায়ার্ন মিউনিখেরছবি: টুইটার

ক্লাব নাকি জাতীয় দল—ইউরোপিয়ান ফুটবলে এই দ্বন্দ্ব লম্বা সময় ধরে চলে আসছে। বিশ্বকাপ শুরুর এক সপ্তাহ আগেও খেলোয়াড়েরা ছিলেন ক্লাবের সঙ্গে। এর মাঝে ক্লাবের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক বড় নাম কাতার বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছে। এ নিয়ে অনেক সমর্থকের মধ্যে ক্ষোভও আছে।

আবার বিপরীতে এটাও সত্য যে এই ক্লাবগুলো খেলোয়াড়দের তৈরি হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেখানে খেলে তাঁরা বিশ্বসেরার কাতারে উঠে আসেন। যেমন লাতিন দেশ আর্জেন্টিনার মহাতারকা লিওনেল মেসি তাঁর প্রায় পুরো ক্যারিয়ার কাটিয়েছেন ইউরোপে।

সাদিও মানে সেনেগাল ছেড়ে কৈশোরে পাড়ি জমান ইউরোপে। আর সেখানেই নিজেকে বিশ্বমানের খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নেইমার ব্রাজিল ছাড়েন বয়স ২১ হওয়ার আগে।

আর্জেন্টিনা দলের ২৩ জন খেলোয়াড়ই নন–ইউরোপিয়ান ক্লাবে খেলেন
ছবি: টুইটার


তাই ইউরোপীয় ক্লাবগুলো থেকে বিশ্বকাপের দলগুলোতে বেশির ভাগ খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ থাকাটাই স্বাভাবিক। জানা গেছে, এবারের বিশ্বকাপে ৭৩ শতাংশ খেলোয়াড় আসবেন ফুটবলের সবচেয়ে দামি এ অঞ্চল থেকে। যদিও বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া ৩২টি দেশের ১৩টি খেলবে ইউরোপ থেকে, শতকরা হারে যা দাঁড়ায় ৪০ শতাংশ।

ক্লাব বিবেচনায় নিলে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় আসবেন বায়ার্ন মিউনিখ থেকে। কাতারে বাভারিয়ান জায়ান্টদের ১৭ খেলোয়াড় নিজ নিজ দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন।

আরও পড়ুন

পরের অবস্থানটি যৌথভাবে বার্সেলোনা ও ম্যানচেস্টার সিটির। এই দুটি ক্লাব সরবরাহ করবে ১৬ জন করে খেলোয়াড়। ইউরোপীয় ফুটবল পরামর্শক এলটিটি স্পোর্টসের এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য।

অন্যদিকে বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া ৮৩০ খেলোয়াড়ের মাত্র ২৭ শতাংশ আসবে অন্য মহাদেশগুলো থেকে। এলটিটি বলছে, স্বাগতিক দেশ কাতারের ক্লাব আল সাদের ১৫ খেলোয়াড় এবার বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন।

বিশ্বকাপে খেলোয়াড়সংখ্যাও আগেরবারের চেয়ে বেড়েছে। ২০১৮ সালে অংশগ্রহণকারী ৩২টি দল ২৩ জন করে খেলোয়াড় স্কোয়াডে রাখার সুযোগ পেয়েছিল, যা এবার কোভিড সতর্কতার কারণে বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন

ইউরোপের বাইরে যেসব দেশের ক্লাবগুলো সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় সরবরাহ করতে যাচ্ছে, সেগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। এই দুটি দেশের ক্লাব ৩৫ জন করে খেলোয়াড় সরবরাহ করতে যাচ্ছে।

আবার ফেবারিট হিসেবে খেলতে যাওয়া অনেক নন-ইউরোপীয় দেশের বেশির ভাগ খেলোয়াড় এসেছেন ইউরোপ থেকে। যেমন আর্জেন্টিনা দলে জায়গা পাওয়া ২৬ জনের ২৩ জনই খেলেন ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাবে।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, ইতালি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন না করলেও দেশটির বিভিন্ন ক্লাবে খেলা ৭০ জন খেলোয়াড় বিশ্বকাপে অংশ নেবেন। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সারির লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের ২৯ জন খেলোয়াড় বিশ্বকাপে থাকবেন, তবে এ তালিকার একজনও ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ দলে নেই।