৮ ম্যাচে ৮ জয়, ২২ গোল, কোনো গোল খায়নি—বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইংল্যান্ডের অবিশ্বাস্য রেকর্ড
ম্যাচ ৮
জয় ৮
গোল ২২
বিপক্ষে গোল ০
২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে এমন নিখুঁত পরিসংখ্যান ইংল্যান্ডের।
ওয়েম্বলিতে গত ২১ মার্চ আলবেনিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাই শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। টমাস টুখেলের ইংল্যান্ডের কোচ হিসেবে সেটা ছিল প্রথম ম্যাচ। ২৪০ দিন পর তিরানায় গতকাল রাতে সেই আলবেনিয়াকেই একই স্কোরলাইনে হারিয়ে ইউরোপিয়ান অঞ্চলে নিজেদের বিশ্বকাপ বাছাই শেষ করল টুখেলের দল। ইউরোপের প্রথম দল হিসেবে অক্টোবরেই বিশ্বকাপে খেলার টিকিট তো পেয়েছেই, বাছাইপর্বটা শেষ করার পথে দারুণ এক রেকর্ডও গড়েছে ‘থ্রি লায়ন্স’রা।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের এক আসরে ইউরোপের প্রথম দল হিসেবে সব ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি কোনো গোল হজম না করার রেকর্ড গড়েছে ইংল্যান্ড। বাছাইপর্বে অন্তত ছয় ম্যাচ খেলতে হয়েছে—হিসাবটি করা হয়েছে এই বিবেচনায়। তিরানায় আলবেনিয়ার জালে ২ গোল করা ইংল্যান্ড স্ট্রাইকার হ্যারি কেইনও আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোলের পরিসংখ্যানে পেছনে ফেলেছেন এডসন অরান্তেস দো নাসিমেন্তোকে। ইংল্যান্ডের হয়ে ১১২ ম্যাচে এ নিয়ে ৭৮ গোল হলো কেইনের। ব্রাজিলের হয়ে নাসিমেন্তোর গোলসংখ্যা ৯২ ম্যাচে ৭৭টি—ওহ ভদ্রলোকের আরেক নাম পেলে!
বিশ্বকাপের শুরুর বছরগুলো বাদে (যখন দলগুলো বাছাইয়ে খুব কম ম্যাচ খেলত) ইউরোপে এর আগে মাত্র তিনটি দল শতভাগ সাফল্য নিয়ে বাছাইপর্ব শেষ করতে পেরেছে। জার্মানি (দুবার), স্পেন ও নেদারল্যান্ডস।
ইউরোপে ইংল্যান্ডের আগে সর্বশেষ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে শতভাগ (সব ম্যাচ জয়) সাফল্য পেয়েছে জার্মানি। ২০১৮ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১০ ম্যাচের সবগুলোই জিতেছিল চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু সে পথে ৪৩ গোল করার পাশাপাশি ৩টি গোল হজম করেছিল ২০১৮ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়া জার্মানি।
২০১০ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা স্পেন ও নেদারল্যান্ডস বাছাইপর্বে শতভাগ সাফল্য পেয়েছে। সেবারের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে স্পেন ১০ ম্যাচের সবগুলোই জিতেছিল। ২৮ গোল করার পথে খেয়েছিল ৫ গোল। নেদারল্যান্ডস ৮ ম্যাচের সবগুলোই জয়ের পথে ১৭ গোল করার বিপরীতে হজম করেছিল ২ গোল।
১৯৮২ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পশ্চিম জার্মানি খেলেছিল ৮ ম্যাচ। সবগুলো জিতলেও ৩৩ গোল করার পথে ৩টি গোল হজম করেছিল সেবার বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা পশ্চিম জার্মানি।
এবার অবশ্য শুধু ইংল্যান্ড নয়, নরওয়েও বাছাইপর্বে সব ম্যাচ জিতেছে। ৮ ম্যাচে ৮ জয়ের পথে ৩৭ গোলের বিপরীতে ৫ গোল হজম করেছে নরওয়ে। তবে সব ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি কোনো গোল না হজমের রেকর্ড গড়ার সুযোগ আছে স্পেনের।
এবার বাছাইপর্বে এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচের সবগুলো জেতা স্পেন ১৯ গোল করার পথে কোনো গোল হজম করেনি। ১৮ নভেম্বর রাতে তুরস্কের বিপক্ষে বাছাইয়ে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে স্পেন। সেদিন কোনো গোল হজম না করে জিতলেই ইংল্যান্ডকে ছুঁয়ে ফেলবে ২০১০ বিশ্বকাপজয়ীরা।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ইংল্যান্ড সর্বশেষ ম্যাচ হেরেছে ২০০৯ সালে। ইউক্রেনের কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল তারা। এরপর বিশ্বকাপ বাছাইয়ে টানা ৩৯ ম্যাচে অপরাজিত ইংল্যান্ড। এই পথে শুধু ৮টি ম্যাচে তারা জয় পায়নি। ১১৫ গোল করার পথে হজম করেছে মাত্র ১০ গোল—যেটা প্রতি ৩৪২ মিনিটে একটি করে।
প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে গোল হজম ছাড়াই টানা সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের ইউরোপিয়ান রেকর্ডেও এখন ভাগ বসিয়েছে ইংল্যান্ড। স্পেনের গড়া টানা ১০ ম্যাচের সেই রেকর্ড এখন ইংল্যান্ডেরও।