২০০৩ সাফজয়ী অধিনায়ক রজনীর পাশে প্রধানমন্ত্রী

রজনীকান্ত বর্মণছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশের ফুটবলে রজনী কান্ত বর্মণ নামটা চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। ডিফেন্ডার হিসেবে জাতীয় দলে ছিলেন তাঁর সময়ের সেরা। দীর্ঘদিন জাতীয় দলে খেলেছেন। দেশকে উপহার দিয়েছেন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ একবারই এই টুর্নামেন্ট জিতেছে, তাতে অধিনায়ক ছিলেন রজনীই। সম্প্রতি অসহায় অবস্থায় পড়ে যাওয়া রজনী এবার পাশে পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

আজ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে রজনীর হাতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ৩০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র তুলে দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আজ চারজন ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠককে চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে মোট ৫৯ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

রজনী ছাড়াও আজ সরকারের আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন আবাহনীর সাবেক অধিনায়ক কাজী আনোয়ার হোসেনও। তাঁকে ২৫ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র ও ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছে। ১৯৮২ সালে কাজী আনোয়ার ছিলেন আবাহনীর অধিনায়ক। সে বছর আবাহনীর যে চার ফুটবলারকে সামরিক আদালত জেলে পাঠিয়েছিল তার মধ্যে কাজী আনোয়ার অন্যতম। ফুটবল ছেড়ে তিনি এখন ক্রিকেট কোচিংয়ে। তাঁর একটি ক্রিকেট কোচিং সেন্টারও আছে।

আরও পড়ুন
নিজের সময় রজনী ছিলেন সেরা ডিফেন্ডার (ডান দিক দিয়ে প্রথম)
ফাইল ছবি

গত ১ নভেম্বর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে স্ত্রী মারা যান রজনীর স্ত্রী। ৩১ ডিসেম্বর ভারতের হুগলির চুঁচুঁড়ায় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন রজনী নিজেই। ডান পায়ের হাড় সব গুঁড়ো হয়ে গিয়েছিল তাঁর। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, পা কেটে ফেলতে হতে পারে। শেষ পর্যন্ত পা বেঁচে গেছে। তবে এক বছর ধরে চলাফেরায় সমস্যা হচ্ছে তাঁর।

২০১৪ সালে খেলা ছাড়ার পর থেকেই রজনী কর্মহীন। এএফসি ‘বি’ লাইসেন্স করেছিলেন কোচিংকে পেশা হিসেবে নিতে। তবে সড়ক দুর্ঘটনায় এখন আর কিছুই করতে পারছেন না। প্রায় এক দশক ধরে যা কিছু জমান, তার সবই শেষ। জমিজমা অনেক কিছু বিক্রি করতে হয়েছে করোনার সময়। এ অবস্থায় সরকার তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে। গাজীপুরের জেলা প্রশাসককে রজনীর জমির ওপর একটি বাড়ি করে দিতেও বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।

সরকারের সহায়তা পাওয়ার পর রজনী প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুঃসময়ে সহায়তা পেয়ে অবশ্যই ভালো লাগছে। অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। দেশকে দিয়েছি, দেশ আমাকে কিছু ফিরিয়ে দিয়েছে। উঠে দাঁড়ানোর জন্য সরকার আমাকে সহায়তা করেছে। আশা করি, আমি আবার উঠে দাঁড়াব। এই অর্থ অনেক কাজে লাগবে আমার।’

রজনী এখন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে থাকেন। বাড়িতে আছেন মা ও ভাই। তাঁর দুই কন্যা থাকেন পশ্চিমবঙ্গের চুঁচুঁড়ায়। সেখানেই বিয়ে করেছিলেন রজনী। দুই মেয়েই স্থানীয় বেসরকারি মেডিকেলে ডাক্তারি পড়ছেন।