কোর্তোয়ার বিশ্বাস, এবার প্রাপ্য সম্মানটা পাবেন

ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে কোর্তোয়া। গলায় বিজয়ীর পদকটাও আছেছবি: রয়টার্স

ম্যাচের আগে তাঁর কথাটা অনেকের কাছেই দম্ভ মনে হয়েছিল। রিয়াল মাদ্রিদেরই অনেক সমর্থক ভেবেছিলেন, ম্যাচের আগে এভাবে বলা ঠিক হয়নি, যদি কথাটা বুমেরাং হয়ে ফেরত আসে!

কিন্তু থিবো কোর্তোয়া বুঝি অন্য ধাতুতে গড়া! ম্যাচের আগে বলে রেখেছিলেন, রিয়াল মাদ্রিদ যখন ফাইনাল খেলে, তারাই জেতে। শেষ পর্যন্ত প্যারিসে কাল লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের ১৪তম চ্যাম্পিয়নস লিগটা রিয়াল মাদ্রিদই জিতেছে। জিতেছে কোর্তোয়ার কারণেই।

ভিনিসিয়ুস রিয়ালের গোলটা করেছেন, কিন্তু কোর্তোয়া না থাকলে কাল অন্তত ৩টি গোল খেয়ে যেত রিয়াল। এমন পারফরম্যান্সের আগে মাইক্রোফোনে ঝড় তোলা কোর্তোয়া পারফরম্যান্সের পর কী বলেছেন? রিয়ালের বেলজিয়ান গোলকিপারের চোখে, এবার অন্তত তাঁকে প্রাপ্য সম্মানটা দেওয়া হবে!

‘ক্যারিয়ারে যত পরিশ্রম করেছি, এরপর অন্তত একটা (চ্যাম্পিয়নস লিগ) ফাইনাল জেতা দরকার ছিল আমার। সেটি আমার নামের ওপর মানুষের সম্মান ফিরিয়ে আনার জন্যও। অসাধারণ মৌসুম কাটানোর পরও অনেকবার শুনেছি যে আমি নাকি অত ভালো নই। বিশেষ করে ইংল্যান্ডে এমনটা হয়েছে’ – ম্যাচ শেষে কোর্তোয়ার সোজাসাপ্টা কথা। সাত বছর যে ক্লাবে কাটানোর পর ২০১৮ সালে রিয়ালে গেছেন, সেই চেলসিকে খোঁচাও কি?

আরও পড়ুন

শুধু ফাইনালই কেন, এমন মৌসুমের পর কোর্তোয়াকে নিয়ে নেতিবাচক কিছু বলতে দু-তিনবার ভাবতে হবে যে কাউকে। এবারের মৌসুমে ১৩ ম্যাচে ৬১টি সেভ করেছেন কোর্তোয়া, যেখানে গতকাল ফাইনালে তাঁর উল্টো দিকে থাকা আলিসন সেভ করেছেন ১৫টি।

প্রতিপক্ষ লিভারপুলকে অবশ্য বেশ বড় সম্মানই দিয়েছেন কোর্তোয়া, ‘আমাদের দলের খেলায় আমি সত্যিই খুব খুশি, গর্বিত। আমরা বিশ্বের সেরা দুই ক্লাবকে হারিয়েছে (সেমিফাইনাল ও ফাইনালে)। সিটি আর লিভারপুল এই মৌসুমে অবিশ্বাস্য খেলেছে। আজ লিভারপুল অসাধারণ ম্যাচ খেলেছে, কিন্তু আমরা একটা সুযোগ পেয়েছি, সেটিতেই গোল করেছি।’

ট্রফিতে চুমু এঁকে দেওয়ার লোভ সামলানো দায়
ছবি: টুইটার

কিন্তু গোল করার চেয়েও কাল ফাইনালে কোর্তোয়ার একের পর এক গোল বাঁচানোই ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। একটা পুরস্কার তো হাতেনাতেই পেয়েছেন, অলিভার কান (২০০২) ও এডউইন ফন ডার সারের (২০০৮) পর তৃতীয় গোলকিপার হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ম্যাচসেরা হলেন কোর্তোয়া।

আরও পড়ুন

কাল এই অতিমানবীয় রূপে নেমে যাওয়ার পেছনে রহস্য কী? কোন মুহূর্তে মনে হয়েছে যে আজ দিনটা শুধু তাঁরই? কোর্তোয়ার ব্যাখ্যা, ‘কয়েক সপ্তাহ ধরেই ভালো একটা অনুভূতি কাজ করছিল। এরপর আজ প্রথম সেভটা করার পরই মনে হচ্ছে, আমার চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার তাড়ণা কোনোকিছুতেই কমবে না।’

আরও পড়ুন

তা যে কমেনি, সেটি তো সংবাদমাধ্যমের সৌজন্যেই জানা যাচ্ছে। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের জন্য যে ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানই মিস করেছেন রিয়াল গোলকিপার! ‘আমার ভাইয়ের জন্য খারাপ লাগছে। ওর কাল বিয়ে, কিন্তু আমি সেখানে থাকতে পারছি না। সোমবার আরেকটি সিভিল-ম্যারেজ আছে, সেখানে থাকব’ – কোর্তোয়ার ব্যাখ্যা।

ভাইকে বিয়েতে কী পুরস্কার দেবেন, সেটি ভিন্ন ব্যাপার। তার আগে নিজেকে ক্লাব ফুটবলে সবচেয়ে প্রার্থিত পুরস্কারটাই দেওয়ার তৃপ্তি রিয়াল গোলকিপারের, ‘অবিশ্বাস্য। এত বছর ধরে এত পরিশ্রম করেছি। সবচেয়ে পছন্দের ক্লাবে এসেছি। আজ আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, ইউরোপের রাজা কারা!’

আরও পড়ুন

তা নিয়ে সংশয় কারই-বা আছে! তবে এমন দিনে কোর্তোয়ার বাড়তি প্রাপ্তি হতে পারে রিয়ালের কিংবদন্তি গোলকিপার ইকার ক্যাসিয়াসের টুইট, 'অনেক বছরের মধ্যে কোনো গোলকিপারকে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে এভাবে ব্যবধান গড়ে দিতে দেখেছি বলে মনে পড়ছে না।'

আরও পড়ুন