বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের আগে বাংলাদেশ দলে করোনার হানা

করোনা পজিটিভ মোহাম্মদ ইব্রাহিমছবি: প্রথম আলো

শঙ্কাটাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো! শঙ্কার সঙ্গে প্রশ্নও ছিল, কেউ একজন করোনায় আক্রান্ত হলে অন্য খেলোয়াড়দের কী হবে? উইঙ্গার মোহাম্মদ ইব্রাহিম করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর জাতীয় ফুটবল দলের ক্যাম্পে এখন এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

আগামী মাসে কাতারে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব সামনে রেখে গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় দলের আবাসিক ক্যাম্প। করোনা পরীক্ষার ফল হাতে পাওয়ার আগেও দুই দিন অনুশীলন হয়। এরপর গতকাল খবর আসে করোনায় আক্রান্ত মোহাম্মদ ইব্রাহিম। অথচ এরই মধ্যে বাকি খেলোয়াড়দের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া থেকে মাঠে অনুশীলন ও জিমনেশিয়ামে ঘাম ঝরিয়েছেন তিনি।

এতে অন্য ফুটবলারদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কাটা থেকেই যাচ্ছে; বিশেষ করে ইব্রাহিমের সঙ্গে একই কামরায় থাকা সোহেল রানার ক্ষেত্রে। এরই মধ্যে অনুশীলনে দল থেকে আলাদা করা হয়েছে সোহেলকে। পুনরায় করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হয়ে আজ একাকী অনুশীলনও করেছেন এই মিডফিল্ডার। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, করোনা পরীক্ষার ফল পাওয়ার আগে অনুশীলন শুরু করার খেসারত না দিতে হয় বাংলাদেশকে!

ইব্রাহিমের করোনা হওয়ার পর বাকিরাও এখন ঝুঁকির মুখে।
ছবি: প্রথম আলো

আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে জাতীয় দলের ম্যানেজার ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আসলে খেলোয়াড়েরা খেলার মধ্যে ছিল। বসুন্ধরার মালদ্বীপে যাওয়ার কথা ছিল। সব খেলোয়াড়ই পরীক্ষার মধ্যে ছিল। আসার পরে প্রথম দিনে টেস্ট করানো হয়েছে। রিপোর্টটা পেতে হয়তো একটু দেরি হয়েছে। যাচাই–বাছাই করার জন্য দেরি হয়েছে।’

সোহেল রানা থেকে অন্যদের সংক্রমণের শঙ্কা দেখছেন কি না? ইকবালের জবাব, ‘ইব্রাহিমের রুমমেট ছিল সোহেল রানা। পুনরায় করানো পরীক্ষায় ওর নেগেটিভ এসেছে। ওকেও দল থেকে আলাদা রাখা হচ্ছে। এর আগে ইব্রাহিমকে তো আইসোলেশনে রাখা হয়েছেই।’

ইংল্যান্ড থেকে ছুটি কাটিয়ে ফিরে কোয়ারেন্টিন শেষে আজ জাতীয় দলের সঙ্গে আজ প্রথম অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন সহকারী কোচ স্টুয়ার্ট ওয়াটকিস। দলের মধ্যে করোনা সংক্রমণের শঙ্কার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ইব্রাহিম দুর্ভাগ্যজনকভাবে করোনা পজিটিভ। বাকিদের নেগেটিভ এসেছে। সোহেল রানা ইব্রাহিমের রুমমেট। ওকে আলাদা করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া হোটেলে খেলোয়াড়েরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে থাকতে বলা হয়েছে শুরু থেকেই।’

ইব্রাহিম দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়
ছবি: প্রথম আলো

সতীর্থ খেলোয়াড় করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় অন্য খেলোয়াড়দের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক সৃষ্টি হওয়ার কথা। কিন্তু সেটি নেই বলেই জানিয়েছেন মিডফিল্ডার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, ‘শুরু থেকেই কোচ বলে দিয়েছেন একে-অপরের কামরায় না যেতে। আমরাও যাই না। যেকেউ করোনায় আক্রান্ত হতেই পারে। আমরা জানি কীভাবে নিরাপদে থাকতে হয়। আমরা সেভাবেই হোটেলে অবস্থান করি।’

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের এখনো তিন ম্যাচ বাকি। আগামী ৩ জুন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের বাকি তিনটি ম্যাচ শুরু করবে বাংলাদেশ। কিন্তু এখনো বাংলাদেশের কাতার যাওয়ার সূচি চূড়ান্ত করতে পারেনি বাফুফে। প্রথমে ২১ অথবা ২২ মে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে এখন যাওয়া হবে চলতি মাসের শেষের দিকে। করোনাভাইরাসের কারণে সেখানে প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে না বলেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।

অথচ ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সূত্রমতে, আজ বিশেষ বিমানে অনুশীলনের জন্য কাতার যাওয়ার কথা রয়েছে ভারত দলের। সেটি নির্ভর করছে খেলোয়াড়দের করোনা পরীক্ষার রেজাল্টের ওপর। সেখানে গিয়ে করোনার নেগেটিভ ছাড়পত্র পেলেই অনুশীলন শুরু করতে পারবেন সুনীল ছেত্রীরা। তাঁদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেতেও সমস্যা নেই বলে জানা গিয়েছে। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি ৭ জুন ও ১৭ জুন শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ ওমান।