মহিলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি প্রত্যাহার না হলে প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাওয়ার হুমকি

নতুন কমিটি পেয়েছে বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থাফেসবুক/বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থা

সাড়ে আট বছর ধরে অ্যাডহক কমিটি দিয়ে জাতীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা চালানোর পর অবশেষে গতকাল আবারও নতুন একটি অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ১৯ সদস্যের এ কমিটি ঘোষণা করেছে।

নতুন কমিটি দেখে ক্ষুব্ধ অনেক সাবেক নারী ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক। তাঁদের অভিযোগ, ঘোষণায় হয়েছে অনিয়ম। প্রতিবাদ জানাতে আজ বিকেলে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ছয়জন সাবেক ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক। সেখান থেকে তাঁরা দাবি জানান—নতুন কমিটি দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন।

প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে ক্রীড়াঙ্গনে পরিচিত সাবেক ব্যাডমিন্টন তারকা ও সংগঠক কামরুন নাহার ডানার নেতৃত্বেই হয় সংবাদ সম্মেলনটি। ডানা বলেন, ‘ক্রীড়াঙ্গন পরিচালনা করবে ক্রীড়াবিদ আর ক্রীড়া সংগঠকেরা। সেখানে আইনজীবী বা অধ্যাপক কেন? আমাদের দেশে অনেক যোগ্য নারী ক্রীড়াবিদ আছেন, যাঁরা সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন। আমরা চাই ক্রীড়া উপদেষ্টা দ্রুত এই কমিটি পরিবর্তন করুন। যদি তাতেও সুরাহা না হয়, আমরা প্রধান উপদেষ্টার শরণাপন্ন হব।’

বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি গঠনে অনিয়ম হয়েছে দাবি করে আজ বিকেলে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ছয়জন সাবেক ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক
প্রথম আলো

ফুটবল, ক্রিকেটের উদাহরণ টেনে ডানা প্রশ্ন তুললেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হয়েছেন সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ ও আমিনুল ইসলাম। ফুটবল ফেডারেশনে কাজী সালাহউদ্দিনের পর সভাপতি হয়েছেন সাবেক ফুটবলার তাবিথ আউয়াল। তাহলে মহিলা ক্রীড়া সংস্থায় সভাপতি বা সেক্রেটারি কেন সাবেক খেলোয়াড় থেকে হবেন না?’
২০১৮ সাল থেকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা ফিরোজা করিম এবারও নতুন অ্যাডহক কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ তুলে ডানা বলেন, ‘ফিরোজা করিম আওয়ামী লীগের প্রভাবে এসেছিলেন মহিলা ক্রীড়া সংস্থায়। এখন তিনি কীভাবে আবার সাধারণ সম্পাদক হলেন?’

আরও পড়ুন

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাবেক নারী ক্রীড়াবিদেরাও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সাবেক ভলিবল খেলোয়াড় নাসিমা পারভীন শিরিন বলেন, ‘আমি আগের কমিটিতে ছিলাম। নেলী (ফিরোজা করিম) আমাদের মতো সাবেক ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করত। তিনি কোনো খেলোয়াড় বা সংগঠক নন। আমরা তাঁকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মানতে পারি না।’

বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি গঠনে অনিয়ম হয়েছে দাবি করে আজ বিকেলে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন
প্রথম আলো

অন্যদিকে ফিরোজা করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার আমার ওপর আস্থা রেখেছে। এ জন্য আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’
শুটার সাবরিনা সুলতানার কণ্ঠেও ছিল হতাশা ও ক্ষোভ, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি ক্রীড়াঙ্গনে আছি। কিন্তু শুটিং ফেডারেশন বা মহিলা ক্রীড়া সংস্থায় আমার জায়গা হয় না। নতুন কমিটিতে দেখি অনেক “ক্রীড়ানুরাগী” আছেন, যাদের আমরা কেউ চিনি না। এই কমিটি অবিলম্বে প্রত্যাহারের আবেদন জানাই।’

আরও পড়ুন