ব্রজেন-মোশাররফদের পথ ধরে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি বাংলাদেশের দুই সাঁতারুর
সাঁতারু ব্রজেন দাস, আবদুল মালেক ও মোশাররফ হোসেনের পর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন বাংলাদেশের আরও দুই সাঁতারু নাজমুল হক ও মাহফিজুর রহমান। আজ লন্ডন থেকে এমন দারুণ কীর্তির কথা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন সাঁতারু নাজমুল।
বাংলাদেশের দুই সাঁতারুর সঙ্গে ভারতের দুজন রিলে পদ্ধতিতে সফলভাবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। সোমবার ইংল্যান্ডের স্থানীয় সময় রাত আড়াইটার দিকে সাঁতার শুরু করার পর ৩৪ কিলোমিটার শেষ করতে তাঁদের সময় লেগেছে ১২ ঘণ্টা ১০ মিনিট। এমন মাইলফলক ছুঁয়ে নাজমুল যেন অনুভূতি প্রকাশের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন, ‘সত্যি বিশ্বাস হচ্ছে না। এই অনুভূতি প্রকাশ করার মতো ভাষা জানা নেই। বাংলাদেশের হয়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিলাম, এটা ভাবতেই গর্ব হচ্ছে।’
ইংলিশ চ্যানেল যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ অংশকে ফ্রান্সের উত্তর অংশ থেকে আলাদা করেছে। সেখানে সাঁতার কাটা ঐতিহাসিকভাবে মর্যাদাকর। এমন ইতিহাসের অংশই হলেন দুই বাংলাদেশি।
নাজমুল কিশোরগঞ্জের ছেলে। তাঁর বাবা আবুল হাসেম ছিলেন আশির দশকের জাতীয় সাঁতারু। জাতীয় পর্যায়ে একাধিক পদক জিতেছেন নাজমুল। এর মধ্যে আছে জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতারে ২০টি সোনা, ১৫টি রুপা। এ ছাড়া ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালে জাতীয় সাঁতারে জেতেন পাঁচ সোনা ও চার রুপা।
বিকেএসপির সাবেক ছাত্র নাজমুল উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান চীনে। বেইজিং স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি থেকে শারীরিক শিক্ষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ২০১২ সালে চীনে অল বেইজিং ইন্টারন্যাশনাল ফরেন স্টুডেন্টস সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন হন।
আরেক সাঁতারু মাহফিজুর ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করেছেন। ২০১৬ সালে রিও ডি জেনিরোর পুলে নেমেছেন। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ৫০টির মতো সোনা জিতেছেন। ২০১০ এসএ গেমসে দুটি রুপা ও একটি ব্রোঞ্জ, ২০১৬ গুয়াহাটি এসএ গেমসে সাতটি ব্রোঞ্জ, ২০১৯ নেপাল এসএ গেমসে একটি ব্রোঞ্জ জেতেন। ২০১৬ থাই ওপেনে সোনা জেতেন মাহফিজুর।
১৯৫৮ সালে প্রথম ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেছিলেন ব্রজেন দাস। আরও পাঁচবার একই ইংলিশ চ্যানেল পেরোন তিনি। ১৯৬৫ সালে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন আবদুল মালেক।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম সাঁতারু হিসেবে ইংলিশ চ্যানেল পেরোন মোশাররফ হোসেন। ১৯৮৮ সালে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেন মুন্সিগঞ্জের এই সাঁতারু।