১০০ বছর বয়সেও ডাইভিংয়ে আসকর

দোহায় ডাইভিং প্লাটফর্মে শতবর্ষী তাগি আসকরস্ক্রিন শট

১৯৫১ সাল

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বসেছিল এশিয়ান গেমসের প্রথম আসর। সেই গেমসে ডাইভিংয়ে একটি রুপা ও একটি ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তাগি আসকর।

২০২৪ সাল

কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব অ্যাকুয়াটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ। গত শুক্রবার সেখানে ডাইভিং প্ল্যাটফর্মে দেখা গেল সেই তাগি আসকরকে।

অবাক হচ্ছেন! ভাবছেন ৭৩ বছর আগে-পরে একই ব্যক্তি কীভাবে ডাইভিং করে যেতে পারেন। অবাক করা কাণ্ড হলেও এটিই সত্যি। এবার দোহায় পুলে ঝাঁপিয়েছে ইরানের শতবর্ষী তাগি আসকর।

না, সরাসরি বিশ্ব অ্যাকুয়াটিকস চ্যাম্পিয়নশিপের ডাইভিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেননি আসকর। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে শেষে দুই সপ্তাহ পর দোহাতেই অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব অ্যাকুয়াটিকস মাস্টার্স চ্যাম্পিয়নশিপ। যেখানে অংশ নেবেন অবসরে যাওয়া সাঁতারু ও ডাইভাররা। সেই প্রতিযোগিতার ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে শুক্রবার। সেই উপলক্ষে ও মাস্টার্স চ্যাম্পিয়নশিপের প্রচারণা চালাতেই ১ মিটার স্প্রিংবোর্ড থেকে পুলে ঝাঁপিয়েছেন আসকর। তবে এখানেই থামছেন না তিনি। বিশ্ব সাঁতারের অভিভাবক সংস্থা ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিকস জানিয়েছে, ১০০ বছর বয়সী আসকর অংশ নেবেন মাস্টার্স চ্যাম্পিয়নশিপেও।

কোনো এক প্রতিযোগিতায় পদক নিচ্ছেন তাগি আসকর
তাগি আসকরের ব্যক্তিগত সংগ্রহ

সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেই ৫৯ বছর পর ডাইভিংয়ে ফেরা আসকর ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিকসের ওয়েবসাইটে বলেছেন নিজের ডাইভিং–জীবনের কথা। আসকর বললেন, মাথা উঁচু করেই ডাইভিং ছেড়েছিলেন তিনি, ‘৪১ বছর বয়সে সর্বশেষ (ইরানের) জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছিলাম। জাতীয় ওই প্রতিযোগিতায় সোনা জয়ের পর খেলাটিকে বিদায় বলে দিলাম।’

ডাইভিংয়ে ইরানের ঐতিহ্যের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন আসকর, ‘১৯৫১ সালে নয়াদিল্লিতে যখন প্রথমবার এশিয়ান গেমসে অংশ নিই, ইরানে ডাইভিংয়ের মান খুব উঁচুতে ছিল। আমি দুটি পদক জিতেছিলাম। কিন্তু ১৯৭৪ সালে যখন তেহরানে গেমস হলো, সুন্দর এই খেলাটিতে চীনারা আসতে শুরু করেছে। ওরা তো রীতিমতো বিপ্লব করেছে। যেভাবে ওরা উন্নতি করেছে, আমরা তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি; বরং যেখানে শুরু করেছিলাম, সেখানেই পড়ে আছি।’

আরও পড়ুন

সেই আসকর শুক্রবার আবার পুলে ঝাঁপ দিয়েছেন এই সময়ের সেরা সব ডাইভারের সামনে। পরে তাঁকে যখন ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিকসের সভাপতি ক্যাপ্টেন হুসেইন আল মুসাল্লাম বিশেষ একটি পদক পরিয়ে দিলেন, আবেগ সামলাতে না পেরে কেঁদেছেন আসকর।

এই সময়ের ডাইভারদের সঙ্গে তাগি আসকর
ওয়ার্ল্ড অ্যাকোয়াটিকস

এত বছর পর আবার ডাইভিং পুলে ফেরার অনুপ্রেরণা কোথায় পেলেন, সেটিও জানিয়েছেন আসকর, ‘সেই যে কিশোর বয়সে ডাইভিংয়ের প্রেমে পড়লাম, সেই প্রেম এখনো আছে। ১৯৫১ ও বর্তমানের মধ্যে আমার পারফরম্যান্স ছাড়া আর কোনো পার্থক্য দেখি না।’

তবে ভালোবাসা থাকলেই তো আর সবাই এই বয়সে পুলে ঝাঁপাতে পারেন না। আসকর কীভাবে পারলেন, সেটিও বললেন, ‘আমি শুধু একটি কথাই বলব, খেলাটির প্রতি ভালোবাসা ও নিজের স্বাস্থ্য ঠিক রাখা।’

আরও পড়ুন