জাতীয় দলের গোলরক্ষকের ভাগ্যেই জুটল না ক্লাব

অসীম কুমার গোপ (গোলাপি জার্সি)ফাইল ছবি

এবারের প্রিমিয়ার হকি লিগে দলই পেলেন না জাতীয় দলের মূল গোলরক্ষক অসীম গোপ। তিন বছর পর হতে যাচ্ছে হকির প্রিমিয়ার লিগ। এর আগে ৭ অক্টোবর শুরু হবে প্রস্তুতিমূলক ক্লাব কাপ। সে উপলক্ষে দল গুছিয়ে নেওয়ার পর্ব, অর্থাৎ প্রিমিয়ার লিগের দলবদল শেষ হয়েছে কাল। সেই দলবদলে অসীমকে নেয়নি প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেওয়া ১২টি ক্লাবের কেউ! হকি ফেডারেশনের নিয়ম অনুযায়ী, সার্ভিসেস বাহিনীর সর্বোচ্চ পাঁচ খেলোয়াড়কে দলে নিতে পারবে ক্লাবগুলো। এ নিয়মের গ্যাঁড়াকলে পড়েই মূলত আটকে গেছেন অসীম।

অসীম
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয় দল সর্বশেষ খেলেছিল ২০১৮ সালের আগস্টে, জাকার্তায় এশিয়ান গেমসের হকিতে। প্রায় তিন বছর পর আবার জাতীয় দলের সামনে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। আগামী ১১-১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হকি। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের আগে গ্যালারিতে বসেই সময় কাটবে অসীমের!

প্রিমিয়ার হকির দলবদল শুরু হলে অসীমকে নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাদা–কালো দলটি সার্ভিসেস সংস্থা থেকে নিয়েছে রাসেল মাহমুদ, মাইনুল ইসলাম, সারোয়ার হোসেন, আশরাফুল ইসলাম ও ইমরান হাসানকে। ফেডারেশনের কাছে মোহামেডানের দাবি ছিল, যেন গোলরক্ষকদের কোটার বাইরে রাখা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লিগ কমিটি এ দাবি মেনে নেয়নি। আর তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নৌবাহিনীর খেলোয়াড় অসীমকে নিতে পারেনি মোহামেডান।

বাংলাদেশের ম্যাচে অসীম
ফাইল ছবি

তিন বছর পর মাঠে ফিরছে প্রিমিয়ার হকি লিগ। সতীর্থরা যখন স্টিক হাতে মাঠে নামার অপেক্ষায়, তখন মাঠের বাইরে থাকতে হবে অসীমকে। হতাশ অসীম বলছিলেন, ‘সবাই খেলবে, আমি বসে দেখব। এটা ভাবতেই খুব খারাপ লাগছে।’

ক্লাব না পাওয়ায় জাতীয় দল থেকে অবসরের কথাও ভাবছেন অসীম, ‘যদি ক্লাবেই খেলতে না পারি, তাহলে জাতীয় দলে খেলে কী হবে? জাতীয় দল থেকে কোনো সম্মানী পাই না। লিগে খেলতে না পারলে জাতীয় দলেও পারফরম্যান্স করা কঠিন। যদি লিগে না খেলতে পারি, তাহলে হয়তো জাতীয় দলেও খেলব না।’

অসীমের দল না পাওয়ায় ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফও হতাশ, ‘জাতীয় দলের প্রধান গোলরক্ষক দল পাবে না, এটা দেখতেও খারাপ লাগে। এটা দুঃখজনক ঘটনা। আসলে বাইলজ যখন করা হয়েছে, তখন সব ক্লাবের প্রতিনিধি নিয়েই সেটা পাস করানো হয়েছে। তারা কোটার চার খেলোয়াড়ের কথা বললেও আমরা পাঁচজনকে দিয়েছি। গোলরক্ষককে কোটার মধ্যে হিসাব করেই সব ক্লাব দল গড়েছে। এ বিষয়ে তাই এখন আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।’

অসীম
ছবি: সংগৃহীত

অবশ্য মোহাম্মদ ইউসুফ আশায় আছেন অসীমকে ক্লাব দেওয়ার, ‘ওর সামনে একটা পথ আছে। যদি কোনো ক্লাবের কোটা পূরণ না হয়, তাহলে তারা চাইলে অসীমকে নিতে পারবে। তবে এর আগে সর্বশেষ যে ক্লাবে সে খেলেছে, ওই ক্লাব থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে।’

মোহামেডানের হকি দলের ম্যানেজার আরিফুল হক প্রিন্স অবশ্য অসীমের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ‘গোলরক্ষকদের কোটার বাইরে রাখার জন্য হকি ও খেলোয়াড়দের স্বার্থে অনেক আগে থেকেই দাবি জানানো হয়েছিল। সেটা ফেডারেশন মানেনি। আমরা অসীমকে দলভুক্ত না করতে পারলেও তাঁর পাশে আছি। ওর সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, সেটা (অগ্রিম অর্থ) আমরা নেব না। এতে হয়তো আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। অথচ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দুই মাস পর। এই টুর্নামেন্টের আগে একজন সেরা গোলরক্ষকের ম্যাচ প্র্যাকটিসও হবে না। বিষয়টা খুবই খারাপ হলো।’