সাক্ষাৎকারে নাহিদা আক্তার

‘এখন জানি আমাদের করণীয় কী’ 

কয় দিন আগেই ঘরের মাঠে পাকিস্তান নারী দলকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়েছে বাংলাদেশ নারী দল। দুই সিরিজেই সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার নাহিদা আক্তার। আজ রাতে বাংলাদেশ দল তিনটি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিমান ধরবে। নতুন একটি সিরিজের আগে কাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেছেন নিজের বোলিং ও নারী দলের বদলে যাওয়া প্রসঙ্গে—

প্রশ্ন:

পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন। দলও দুটি সিরিজ জিতেছে। দলের সাফল্যে অবদান রাখতে পেরে কেমন লাগছে?

নাহিদা আক্তার: খুবই ভালো লাগছে। শেষ দুটি সিরিজে দল ভালো করেছে। তাতে আমিও অবদান রাখতে পেরেছি। এমন অবস্থায় সব খেলোয়াড়ের চেষ্টা থাকে ভালো সময়টা লম্বা করার। আমিও সে চেষ্টা করছি।

আরও পড়ুন
প্রশ্ন:

২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ দলে খেলছেন। এখন কি মনে হচ্ছে ক্যারিয়ারের সেরা ছন্দে আছেন?

নাহিদা: হ্যাঁ। শুরু থেকেই তো সবার দলের জন্য অবদান রাখার লক্ষ্য থাকে। অভিজ্ঞতা আপনাকে সেটা ধারাবাহিকভাবে করতে শেখায়। এখন হয়তো সেটাই হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, এখন দল জিতছে। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের সঙ্গে যদি দলও জিততে থাকে, তখন সত্যিকারের সন্তুষ্টি কাজ করে। আমরা বাংলাদেশ দলটাকে একটা ভালো জায়গায় নিতে চাই। আমার লক্ষ্য, সবাই যেন বলে, ওই পর্যায়ে যেতে আমারও অবদান ছিল।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেট নেওয়ার পথে নাহিদার উদ্‌যাপন
ছবি: বিসিবি
প্রশ্ন:

বাংলাদেশ নারী দলের স্পিনশক্তির অনেক প্রশংসা শোনা যায়। একজন স্পিনার হিসেবে বিষয়টাকে কীভাবে দেখেন?

নাহিদা: ভালো লাগে, যখন সবাই বলে যে আমাদের স্পিন আক্রমণটা ভালো। ব্যাটিংয়েও অনেক উন্নতি হয়েছে। আমরা ভালো ফল পাচ্ছি সে কারণেই। শুধু বাংলাদেশ নয়, লক্ষ্য করলে দেখবেন, বিশ্বের বেশির ভাগ নারী দলের স্পিন বিভাগই শক্তিশালী।

আরও পড়ুন
প্রশ্ন:

কিন্তু ঘরের মাঠে তো স্পিনাররা একটু বেশি সুবিধা পাচ্ছেন...

নাহিদা: ঘরের মাঠে সবাই জিততে চাইবে। সব দেশই নিজের মাঠে খেলার সুবিধা নেবে। এটাই স্বাভাবিক। আমরা গত এক-দুই বছর ভালো করছি, বিশেষ করে ঘরের মাঠে। বিদেশেও যে করছি না, তা নয়। বাইরেও বেশ কিছু সাফল্য আছে।

প্রশ্ন:

আপনি বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়কও। দলের সাম্প্রতিক সাফল্যের কারণ কী?

নাহিদা: জাতীয় দলে আমরা পাঁচ-ছয়জন একসঙ্গে অনেক দিন ধরে খেলছি। আমরা এখন জানি আমাদের করণীয় কী। একজনের সাফল্যে আরেকজন আনন্দিত হচ্ছি। আমাদের চিন্তাটা এখন দলগত। এই মানসিকতাটা কাজে লাগছে।

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সাম্প্রতিক সাফল্যের আত্মবিশ্বাসটা কাজে লাগবে, বলছেন নাহিদা আক্তার
ছবি: জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট টুইটার উইমেনস
প্রশ্ন:

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কেমন সম্ভাবনা দেখছেন?

নাহিদা: সাম্প্রতিক সাফল্যের আত্মবিশ্বাসটা তো কাজে লাগবেই। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশন ভিন্ন হবে। আমাদের স্পিন আক্রমণে যারা আছে, তাদের দলগতভাবে বোলিং করতে হবে।

আরও পড়ুন
প্রশ্ন:

নারী চ্যাম্পিয়নশিপে জায়গা করে নেওয়ার পর নারী দলের ম্যাচ বেড়েছে। খেলার চাপ বাড়ায় ফিটনেসের গুরুত্বও নিশ্চয়ই বেড়েছে...

নাহিদা: ফিট থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন যে পরিমাণ খেলা, ফিট থাকতেই হবে। এখন আমরা ফিটনেসে যতটা জোর দিচ্ছি, আগে ততটা দেওয়া হতো না। এখন প্রতিবছর আগের তুলনায় দ্বিগুণ ম্যাচ হচ্ছে। এখন ফিট থাকতেই হবে। তাহলেই একটার পর একটা সিরিজ খেলা সম্ভব। ফিট থাকাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন:

বাংলাদেশের মেয়েদের পরের ধাপে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটিই নিশ্চয়ই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ...

নাহিদা: বিষয়টা কে কীভাবে নিচ্ছে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যতটা ফিট, ঠিক ততটুকুই খেলতে পারবেন। ম্যাচ বেশি হলে আপনি যদি দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হন, তাহলে আপনাকে দল পেতে চাইবেই। দলের সে চাহিদা পূরণ করতে হলে পেশাদার হতে হবে, ফিট থাকতে হবে।