প্রতিপক্ষের আচরণে প্যানিক অ্যাটাক, কান্নাভেজা চোখে চীনা টেনিস তারকার ‘বিদায়’

চীনা টেনিস তারকা ঝাং শুয়াইছবি: রয়টার্স

হাঙ্গেরিয়ান গ্রাঁ প্রিঁর প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ। লড়ছিলেন চীনের ঝাং শুয়াই এবং স্বাগতিক হাঙ্গেরির আমারিসা কিয়ারা টুথ। উত্তেজনাপূর্ণ প্রথম সেটে দুজন তখন ৫–৫ গেমে সমতায়। ঠিক সেই মুহূর্তে ক্রসকোর্ট ফোরহ্যান্ডে দারুণ একটি শট খেলেন শুয়াই, যা প্রথম দেখায় মনে হয়েছিল লাইনেই পড়েছে। কিন্তু লাইন আম্পায়ার সেটিকে আউট হওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। এরপর চেয়ার আম্পায়ার নেমে এসে বল যেখানে পড়েছে সেই জায়গাটি পরীক্ষা করে দেখেন এবং বল আউট হওয়ার সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন।

কিন্তু আম্পায়ারের এই সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি ঝাং। টেলিভিশন রিপ্লেতেও দেখা যায়, বল লাইনের ভেতরই পড়েছে। ক্ষুব্ধ ঝাং তখন টুর্নামেন্ট সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলার দাবিও করেছিলেন। এমন পরিস্থিতিতেও ঝাং অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে খেলা বন্ধ করেননি। তবে একটু পরই বিতর্কিত মুহূর্তটির জন্ম দেন টুথ। এগিয়ে এসে বল যেখানে পড়েছিল সেটি পা দিয়ে মুছে দেন। প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে এই কাণ্ড করতে দেখে ঝাংককে এ সময় চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘দাঁড়াও দাঁড়াও! চিহ্নটা রাখ। কী করছ তুমি? কেন এমনটা করলে?’

আরও পড়ুন

প্রতিদ্বন্দ্বী খেলোয়াড়ের এই কাজ মোটেই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি ঝাং। বিতর্কিত ওই গেম জিতলেও প্রথম সেট হেরে যান এই চীনা টেনিস তারকা। প্রথম সেট শেষে প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্তও হন ৩৪ বছর বয়সী ঝাং এবং ফিজিওর কাছ থেকে চিকিৎসাও নেন। এ সময় তাঁকে কাঁদতেও দেখা যায় এবং আর খেলা চালিয়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্তও নেন। ঝাংয়ের সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে উপস্থিত হাঙ্গেরির দর্শকেরা তাঁকে দুয়োও দেন। অন্য দিকে টুথ এসে তখন ঝাংয়ের সঙ্গে হাত মেলান এবং হাত উঁচিয়ে নিজের ‘জয়’ও উদ্‌যাপন করেন।

পরে ইনস্টাগ্রামে বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন ঝাং। তিনি লিখেছেন, ‘সব চেষ্টা ও অনুশীলন ভুল পথে গেছে। কারণ, আপনি বল লাইনের কাছকাছি মেরেছেন, এমনকি বল লাইন স্পর্শ করার পরও সেটি ‘আউট’ বলে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।’ যাঁরা এ ঘটনায় তাঁর পাশে ছিলেন, তাঁদের ধন্যবাদ দিয়ে ঝাং আরও লিখেছেন, ‘তোমাদের ভালোবাসি। যেসব মেয়েরা আমাকে সমর্থন দিয়েছ এবং আমার পাশে ছিলে তাদের জন্যও ভালোবাসা।’

আরও পড়ুন

ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২০ বছর বয়সী টুথের আচরণ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অস্ট্রেলিয়ার টেনিস তারকা আজলা তোমালজানোভিচ টুইটারে লিখেছেন, ‘একেবারেই বাজে আচরণ। (ঝাং) শুয়াই মানুষ হিসেবে আমাদের অনেকের চেয়ে ভালো। সে রেফারি এবং সেই মেয়েটির সঙ্গে হাতও মিলিয়েছে।’

অস্ট্রেলিয়ার ডাবলস খেলোয়াড় এলেন পেরেজও এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘অসম্মানের যে মাত্রা সেই মেয়েটি দেখিয়েছে, তা আমাকে স্তব্ধ করেছে। যদি আগামীকাল তার সঙ্গে আমার দেখা হয়, তবে আমি তাকে বলব, তার প্রতি আমি কতটা বিরক্ত।’