উইম্বলডনে ‘লাকি লুজার’ আর্জেন্টাইন মেয়ের ইতিহাস, পকেটে এরই মধ্যে সাড়ে তিন কোটি টাকা
এক সপ্তাহ আগেও সোলানা সিয়েরা ব্যস্ত ছিলেন কীভাবে বাড়ি ফিরবেন, তা নিয়ে। উইম্বলডনের কোয়ালিফাইং রাউন্ড থেকেই যে বিদায় নিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন এই নারী খেলোয়াড়। সেই সিয়েরা আগামীকাল উইম্বলডনের নারী এককে চতুর্থ রাউন্ড খেলতে নামবেন অল ইংল্যান্ড ক্লাবে।
অন্যের দুর্ভাগ্যে সৌভাগ্যবান হয়ে উইম্বলডনের মূল পর্ব সুযোগ পাওয়া এই সিয়েরা ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন। ২১ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় ওপেন যুগে প্রথম ‘লাকি লুজার’ হিসেবে উইম্বলডনের নারী এককে চতুর্থ রাউন্ডে উঠেছেন।
‘লাকি লুজার’ বলা হয় সেই সব খেলোয়াড়কে, যাঁরা বাছাইপর্বে হেরে যান, কিন্তু মূল পর্ব শুরুর আগে কেউ চোটে ছিটকে গেলে তাঁদের জায়গায় সুযোগ পান।
তিনি যে লাকি লুজার হিসেবে সুযোগ পাচ্ছেন, সেই খবর পাওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যেই কোর্টে নামতে হয়েছিল সিয়েরাকে। ‘বেলজিয়ামের গ্রিট মিনেন চোটে ছিটকে গেছেন, আপনি সুযোগ পেয়েছেন, জলদি কোর্টে চলে আসুন’—উইম্বলডন কর্তৃপক্ষের কাছ এই বার্তাই পেয়েছিলেন সিয়েরা। এরপর তো ইতিহাস।
প্রথম রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার অলিভিয়া গাদেস্কি, দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রিটেনের কেটি বোল্টার ও সর্বশেষ তৃতীয় রাউন্ডে স্পেনের ক্রিস্টিনা বুশাকে ৭-৫, ১-৬, ৬-১ গেমে হারিয়ে ইতিহাস গড়লেন বিশ্বের ১০১ নম্বর নারী খেলোয়াড় সিয়েরা।
ইতিহাস গড়া সেই জয়ের পর বিবিসিকে সিয়েরা বলেন, ‘সেদিন বাছাইপর্বে হেরে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। তবে আজকের দিনটা জীবনের সেরা দিনগুলোর একটি। পুরোই পাগলাটে ব্যাপার। সাত দিন আগে টুর্নামেন্টে থেকে ছিটকে গেলাম, আর এখন দ্বিতীয় সপ্তাহে খেলতে যাচ্ছি। বিশ্বাসই করতে পারছি না। খুব খুশি লাগছে।’
কোয়ালিফাইং রাউন্ডে হেরে গিয়েছিলেন সোলানা সিয়েরা। ভাগ্যক্রমে সুযোগ পাওয়া আর্জেন্টাইন সেই মেয়ে এখন উইম্বলডনের চতুর্থ রাউন্ডে।
সিয়েরার সৌজন্যে ২১ বছর পর উইম্বলডনের নারী এককের চতুর্থ রাউন্ডে নিজেদের কোনো খেলোয়াড়কে দেখতে পেল আর্জেন্টিনা। সর্বশেষ ২০০৪ সালে পাওলা সুয়ারেজ উঠেছিলেন নারী এককের চতুর্থ রাউন্ডে।
শেষ ষোলোতে উঠেই সিয়েরা নিশ্চিত করে ফেলেছেন কমপক্ষে ২ লাখ ৪০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা) প্রাইজমানি। বিবিসি জানিয়েছে, এর আগে পুরো ক্যারিয়ারে ৩ লাখ ৩০ হাজার পাউন্ড প্রাইজমানি পেয়েছিলেন সিয়েরা।
স্বপ্নের মতো একটি সপ্তাহ কাটালেও একের পর এক জয়ে ঝামেলাও কম পোহাতে হচ্ছে না সিয়েরাকে। আগে থেকেই বুকিং করা না থাকায় প্রায় প্রতি রাউন্ডের পরই থাকার জন্য নতুন আবাস খুঁজতে হয়েছে সিয়েরাকে। তবে সর্বশেষ মঙ্গলবার পর্যন্ত বুকিং দিয়ে রেখেছেন হোটেলে, যার অর্থ আগামীকাল জার্মানির লরা সিগমুন্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেলে অন্তত দুই দিনের জন্য নিশ্চিত থাকার জায়গা।
মেয়েদের এককের প্রথম লাকি লুজার হিসেবে শেষ ষোলোয় উঠেছেন সিয়েরা। ছেলেদের এককে অবশ্য এর আগে পাঁচজন ‘লাকি লুজার’ শেষ ষোলোয় উঠেছেন। ২০২৪ সালে সর্বশেষ সেই কীর্তি গড়েছিলেন ফরাসি জোভান্নি এমপেতশি পেরিকার।
এবার পুরুষ এককে আলো ছড়াচ্ছেন আর এক ‘লাকি লুজারও’ হাঙ্গেরির মার্তন ফুকসোভিৎস। দ্বিতীয় রাউন্ডে ফরাসি তারকা গায়েল মঁফিসকে পাঁচ সেটে হারিয়ে উঠেছেন তৃতীয় রাউন্ডে।