অস্ট্রেলিয়ান ওপেন কাভারে গিয়ে চলে গেলেন ‘মিস্টার উইম্বলডন’

খ্যাতিমান ক্রীড়া সাংবাদিক মাইক ডিকসনএক্স

৩৮ বছর ধরে পেশাদার ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন মাইক ডিকসন। এই দীর্ঘ সময়ে বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশে ৩০টিরও বেশি খেলা কাভার করেছেন। বিশেষ করে টেনিস অঙ্গনে নিজেকে আলাদাভাবে পরিচিত করে তুলেছিলেন। উইম্বলডন নিয়ে বেশ জানাশোনার কারণে কর্মক্ষেত্র ডেইলি মেইলে ‘মিস্টার উইম্বলডন’ নামে ডাকা হতো তাঁকে।

কাজের অংশ হিসেবেই নতুন বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন কাভার করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু এটাই হয়ে রইল তাঁর শেষ অ্যাসাইনমেন্ট। মেলবোর্নে গতকাল মারা গেছেন খ্যাতিমান ব্রিটিশ সাংবাদিক ডিকসন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর।

ডিকসনের এক্স অ্যাকাউন্টে পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। ডিকসনের স্ত্রী লুসি লিখেছেন, ‘আমরা বিধ্বস্ত মন নিয়ে ঘোষণা করছি যে, আমার প্রিয় স্বামী ও আমার সন্তানদের বাবা মাইক মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন কাভার করতে গিয়ে লুটিয়ে পড়েছেন এবং মারা গেছেন। ৩৮ বছর ধরে তিনি বিশ্বজুড়ে খেলাধুলা কাভার করার স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে ছিলেন। তিনি সত্যিই এক বড় মাপের মানুষ ছিলেন। লুসি, স্যাম, রুবি এবং জো তোমাকে ভীষণ মিস করবে।’

তবে ডিকসন মেলবোর্নের ঠিক কোন জায়গায় বা কীভাবে পড়ে মারা গেছেন, সেটি জানানো হয়নি।

দক্ষিণ গ্লামরগান ইনস্টিটিউটের জাতীয় কাউন্সিল থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক সম্পন্ন করেন ডিকসন। ১৯৯০ সাল থেকে বিখ্যাত ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ডেইলি মেইলে যোগদানের আগে সাপ্তাহিক পত্রিকা চেস্টার ক্রনিকল, ওয়েম্বলি অবজারভার ও রেডিও নেটওয়ার্ক ২সিআর-এ কাজ করেছেন।

সাংবাদিকতা জীবনের শুরুর দিকে ক্রিকেট কাভার করলেও পরবর্তীতে টেনিসে ঝুঁকে পড়েন ডিকসন। টেনিসে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৬ সালে রন বুকম্যান মিডিয়া এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন। বেশ কিছু বইও লিখেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক বব উইলিসকে নিয়ে লেখা ‘অ্যা ক্রিকেটার অ্যান্ড অ্যা জেন্টেলম্যান’, উদীয়মান টেনিস তারকা এমা রাদুকানুকে নিয়ে লেখা ‘হোয়েন টেনিস কেম হোম’ ইত্যাদি।

টেনিস কিংবদন্তি রজার ফেদেরারের সঙ্গে সাংবাদিক মাইক ডিকসন
এক্স

ডিকসনের জন্ম ইংল্যান্ডের মার্সেসাইডের উইরাল এলাকায়। বেড়ে ওঠাও সেখানে। ফুটবলে সমর্থনও করতেন মার্সেসাইডের দুই ক্লাব এভারটন ও ট্রানমিয়ারকে। টেনিস সাংবাদিকতায় মনোনিবেশ করায় পরিবার নিয়ে থাকতেন উইম্বলডন এলাকায়। আগামী ২৭ জানুয়ারি মেলবোর্নে বসেই হয়তো নিজের ৬০তম জন্মদিনের কেক কাটতেন। কিন্তু সেটা আর হলো না।

আরও পড়ুন

ডিকসনের আকস্মিক মৃত্যুতে টেনিস অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ডেইলি মেইল ক্রীড়া বিভাগের আন্তর্জাতিক প্রকাশক লি ক্লেটন বলেছেন, ‘একজন সংবাদদাতার যেসব গুণ থাকা চাই, ডিকোর (ডিকসন) মধ্যে তার সবকিছুই ছিল। এক অসাধারণ সংবাদ শিকারি, একজন দুর্দান্ত লেখক, ক্রীড়াঙ্গনে অনেকের বন্ধু। তিনি অনেক বড় মাপের সাংবাদিক ছিলেন। টেনিস বিশ্ব আমাদের শোকে শামিল হবে।’

মৃত্যুর আগে ডিকসনের পোস্ট করা শেষ ছবি
এক্স

আলোচিত ক্রীড়া সাংবাদিক পিয়ার্স মরগান এক্সে লিখেছেন, ‘শুনে খুব খারাপ লাগল। মাইক একজন দুর্দান্ত সাংবাদিক ছিলেন। শান্তিতে ঘুমান।’