খেলা ছেড়ে লেখার জগতে বার্টি

২৫ বছর বয়সেই টেনিস ছেড়েছেন তিনবারের গ্র্যান্ড স্লাম চ্যাম্পিয়ন অ্যাশলেই বার্টিরয়টার্স ফাইল ছবি

ছেলেবেলা থেকেই টেনিসের প্রতি ভালো লাগা অ্যাশলেই বার্টির। বয়স যখন মাত্র চার বছর, তখনই ওয়েস্টার্ন ব্রিসবেন টেনিস সেন্টারে হাতেখড়ি। একসময় ঢুকে পড়লেন র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরা দশে। তারপর হঠাৎ টেনিসকে দূরে সরিয়ে বেছে নিলেন সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী খেলা ক্রিকেট। অংশ নিলেন মেয়েদের বিগ ব্যাশে। কিন্তু মন তো টেনিসে। তাই আবার ফিরলেন সেই ভালোবাসার কাছে। প্রত্যাবর্তনটা হলো স্বপ্নের মতো। ২০১৯ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনে জিতলেন প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম। উঠে গেলেন র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে। ২০২১ সালে করোনার ধাক্কা সামলে জিতলেন উইম্বলডন।

সেখানেই না থেমে ঘুচিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার ৪৪ বছরের অপেক্ষা। এ বছরের শুরুতে ক্রিস ও’নিলের পর প্রথম অস্ট্রেলীয় হিসেবে জিতলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। মেয়েদের টেনিসে বার্টি-যুগের সূচনা নিয়ে কথা শুরু হয়ে গেল। কিন্তু মাস দেড়েক পরই সবাইকে চমকে দিয়ে টেনিস ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে দিলেন বার্টি। মাত্র ২৫ বছর বয়সে টেনিসকে বিদায় বলতে গিয়ে বার্টি সেদিন বলেছিলেন, ‘আমার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। এখন অন্য স্বপ্নপূরণের পথে হাঁটতে চাই।’

২০২১ সালে উইম্বলডন জিতেছেন বার্টি
রয়টার্স ফাইল ছবি

বার্টির ঘোষণায় স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল টেনিস-বিশ্ব। ক্রিকেটের পুরনো সতীর্থদের অনেকেই আবার বার্টিকে ফিরে পাওয়ার আশা করতে শুরু করলেন। কিন্তু বার্টি সরাসরি কিছু বলেননি। বলেননি বলেই রহস্যটা আরও বেড়েছিল। কী স্বপ্ন পূরণ করতে চাইছেন অস্ট্রেলীয় তারকা? সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল অবসর ঘোষণার সপ্তাহ দুয়েক পরে। নাহ্‌, এবার আর কোনো খেলাধুলা নয়, লেখালেখিতে নাম লিখিয়েছেন বার্টি। সিরিজ গল্প লিখছেন শিশুদের জন্য। বইয়ের নামধাম ও প্রকাশের সময়ও ঠিক হয়ে গেছে। বইয়ের নাম ‘লিটল অ্যাশ’। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ছয় খণ্ডের বই। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম নিউজকর্পের সঙ্গে আলাপচারিতায় গতকাল রোববার বার্টি জানিয়েছেন, বিখ্যাত প্রকাশনা সংস্থা হারপারকলিন্স থেকে আগামী জুলাইয়ে বের হবে বইয়ের প্রথম পর্ব।

খেলা থেকে লেখালেখির জগতে ঢুকে রীতিমতো রোমাঞ্চিত বার্টি। জানালেন, এমন কিছু করার স্বপ্ন সারা জীবনই দেখে এসেছেন তিনি, ‘এই প্রকল্পটা যে কী মজার! আমি সব সময়ই এমন কিছু করতে চেয়েছি।’

মেয়েদের টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ে ১২১ সপ্তাহ এক নম্বর ছিলেন বার্টি
রয়টার্স ফাইল ছবি

নিজের ভাইয়ের মেয়ের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজে নেওয়ার কথাও জানালেন বার্টি। পাঁচ বছর বয়সী ভাতিজিকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘লুসি ছিল ধ্রুবতারা। গল্প বা কাহিনি বোঝা ও বই পড়ার উপযুক্ত বয়স তাঁর। সে কী ভাবে, কী চিন্তা করে এবং যখন কোনো বই পড়ে, তখন তার কেমন লাগে, এগুলো সে আমাকে বলে। আমার এটা ভালো লাগে। তাকে এবং শহরের বাইরের বাচ্চাদের বই পড়ে শোনানো দারুণ হবে। আমি সত্যি এমন কিছুই করতে চেয়েছিলাম।’

আত্মজীবনী লেখার পরিকল্পনাও করেছেন বার্টি। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ও ক্রীড়াজীবনের স্মৃতিকথা নিয়ে একই প্রকাশনী থেকে আগামী নভেম্বরে বেরোবে সেই আত্মজীবনী।

বই নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বার্টি আবারও জানালেন, অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো অনুশোচনা নেই তাঁর। কেন? সেটিও ব্যাখ্যা করেছেন তিনবারের গ্র্যান্ড স্লামজয়ী, ‘আমি আমার পরিবারের সঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। গত কয়েক সপ্তাহ অনেক ভালো সময় কেটেছে।’

আরও পড়ুন