তিন চাকার ‘সঙ্গী’

‘সঙ্গী’সংগৃহীত

শীতে মোটরবাইক চালানো বেশ কষ্টের। বাতাস বেশি থাকলে তো কথাই নেই, হিম ঠান্ডায় মনে হয় জমে যায় পুরো শরীর। বাতাসে ধুলাবালুর পরিমাণও থাকে অনেক বেশি। আবার গরমের সময় প্রখর রোদে হেলমেট পরায় মাথা যায় ঘেমে, চুলেরও ক্ষতি হয় বেশ। কেমন হতো, যদি একটি গাড়ি থাকত আপনার। ভালো হতো নিশ্চয়। তবে চাইলেই কি আর গাড়ি কেনা যায়। ভালো মানের গাড়ির দাম যে হাতের নাগালের বাইরেই থেকে যায় অনেকের। জমানো টাকা বা কিস্তিতে গাড়ি কেনা যায় বটে, কিন্তু মাসের জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচের কথা ভেবে গাড়ি আর কেনা হয়ে ওঠে না। তবে মোটরবাইকের দামেই যদি মেলে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাহন, কেমন হবে বলেন তো। শুনতে অবাক লাগলেও ‘সঙ্গী’ নামের তিন চাকার বাহনটিতে গাড়ির প্রায় সব সুবিধাই মিলবে। অটোরিকশার মতো দেখতে হলেও আকিজ মোটরসের তৈরি বৈদ্যুতিক বাহনটিতে প্রবেশের জন্য দুই পাশেই দরজা রয়েছে। সর্বোচ্চ ২৪০ কেজি ওজন নিয়ে পথ চলতে সক্ষম বাহনটির চালকের পেছনে দুজন যাত্রীর বসার জন্য আসন রয়েছে। ফলে ছোট পরিবারের বাহনের প্রয়োজন মিটবে অনায়াসেই।

সঙ্গীর ভেতরে রয়েছে একটি মাল্টিমিডিয়া ইনফোটেইনমেন্ট ডিসপ্লে। এতে গতি, ব্যাটারিতে চার্জের পরিমাণ জানার পাশাপাশি তারহীন ব্লুটুথ, গান শোনা ও ভিডিও দেখার সুবিধা মিলবে। রয়েছে ইউএসবি পোর্টও।

হাতের ও পায়ের ব্রেকের সাহায্যে সামনের ও পেছনের চাকা নিয়ন্ত্রণ করা যায় সঙ্গীর। টিউবহীন চাকায় রয়েছে ডিসব্রেক ও ১২ ইঞ্চি অ্যালয় রিম। গরম ও ঠান্ডা বাতাস পেতে এয়ারকুলার, পুশ স্টার্ট, হাতে ঘোরানো গিয়ার অপশন এবং ব্যাক ক্যামেরাও রয়েছে। স্বয়ংক্রিয় কাচ নামানো ও ওঠানোর পাশাপাশি রিমোটের সাহায্যে দরজা বন্ধ বা খোলা যায়।

‘সঙ্গী’তে আরও রয়েছে সানরুফ। ম্যানুয়েল এই সানরুফ হাতের সাহায্যে খোলা যায়। পেছনে থাকা গ্লাসটি কিছুটা সরিয়ে চাইলে ভেতরে বাতাস প্রবেশ করানো যায়। রাতের রাস্তায় সহজ চলাচলের জন্য রয়েছে এলইডি বাল্ব, হাই বাম্পার স্টপলাইটসহ এলইডি টেইললাইট। সামনের গ্লাসে উইপার সুবিধার পাশাপাশি পেছনের যানবাহন দেখার জন্য রয়েছে লুকিং গ্লাস। পণ্য বহনে রয়েছে দুটি ছোট বাক্স।

দেড় হাজার ওয়াটের শক্তিশালী মোটর এবং ৬০ ভোল্টের ৪৮ অ্যাম্পিয়ার আওয়ার (এএইচ) ব্যাটারি থাকায় বাহনটি ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। ১৯০ কেজি ওজনের বাহনটি ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা চার্জে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত পথ পাড়ি দিতে পারে। তবে চাইলে ব্যাটারির ক্ষমতা বাড়িয়ে আরও বেশি পথ যাওয়া যাবে।

রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তায় রয়েছে আকিজ মোটরসের প্রদর্শনী কেন্দ্র। বাহনটি রাস্তায় চালাতে কোনো আইনি বাধা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আকিজ মোটরসের বৈদ্যুতিক মোটরবাইক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইত্তেহাদুল ইসলাম বলেন, ‘বৈদ্যুতিক গাড়িসংক্রান্ত আইনটি এখনো খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। এই কারণে সঙ্গীর বাণিজ্যিক বিপণন আমরা এখনো শুরু করিনি। তবে ব্যক্তিগত স্থাপনার ভেতরে বাহনটি ব্যবহার করা যাবে।’

বাহনটির মূল্য চার লাখ টাকা। ব্যাটারি, মোটর এবং কন্ট্রোলারে ছয় মাসের বিক্রয়োত্তর সেবাসহ বিনা মূল্যে এক বছর সার্ভিস সুবিধাও পাওয়া যাবে।