
পাখির জগতে লাল রঙের আছে বিশেষ তাৎপর্য। এই রং তাদের সৌন্দর্যের অংশ; সঙ্গীকে কাছে টানে। পাখির গায়ের রং কীভাবে লাল হয়, তা খুঁজে বের করেছেন বিজ্ঞানীরা।
কারেন্ট বায়োলজি সাময়িকীতে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত পৃথক দুই গবেষণাপত্রে বলা হয়, শরীর বিষমুক্ত রাখার জন্য দায়ী কিছু জিনের কারণেই পাখির রঙের ওপর এমন বৈচিত্র্যময় প্রভাব পড়ে। তার মানে লাল রং পাখির শরীরকে শক্তসমর্থ রাখে এবং ক্ষতিকর উপাদান অপসারণ করে।
একটি গবেষক দলের সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লুইসে অবস্থিত ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক যোসেফ কোরবো বলেন, পুরুষ পাখির রং যত বেশি লাল, সঙ্গিনী খুঁজে পেতে তারা তত বেশি সফল হয়। অনেক পাখি প্রজাতির মধ্যে এমনটা দেখা যায়।
ওই গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়, ক্যানারি বার্ড ও জেব্রা ফিঞ্চ নামের পাখিরা নানা রকমের বীজ, ফলমূল ও পোকামাকড় খায়। এসব খাবারের প্রভাবেই তাদের শরীরে হলদে রঞ্জক পদার্থ তৈরি হয়, যার নাম ক্যারোটিনয়েড। কিছু পাখি এই হলদে অণুগুলোকে লাল রূপ দিতে পারে, যার নাম কেটোকেরোটিনয়েড। এ ক্ষেত্রে লাল ও হলদে পাখিরা নিজেদের চোখে সক্রিয় কিছু এনজাইম ব্যবহার করে। একই প্রক্রিয়ায় তাদের পালক ও ত্বক লাল হয়ে যায়।
গবেষক দলের আরেক সদস্য যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ নিক মান্ডি বলেন, ওই পাখিরা যে জিনের কারণে লাল রং দেখতে পায়, সেই একই জিন তাদের শরীরের রং বদলাতে সহায়তা করে। ব্যাপারটা নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর।
অপর গবেষণা দলের সদস্য পর্তুগালের পোর্তো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী মিগুয়েল কার্নেরিও বলেন, পাখির নিজ শরীরের রঞ্জক পদার্থের উপস্থিতি তাদের খাদ্যাভ্যাসের ওপর নির্ভর করে। সুতরাং খাবার তাদের রঙের ধারাবাহিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।