সিল্কের আভিজাত্যে

দোরগোড়ায় শীত। জমকালো পোশাক আর সাজের যথার্থ সময়। সারা বছর পরা গেলেও সিল্কের শাড়ি পরার আসল মজাটা শীতেই। ঐতিহ্যবাহী এ শাড়ির ফ্যাশন প্রতিবছরই ফিরে আসে নতুন রূপে আর নকশায়। এই শাড়ি খুব সহজেই সামলানো যায়। পুরো সাজে যোগ হয় আভিজাত্য ও পরিপাটি ভাব। পাশাপাশি মানিয়ে যায় যেকোনো বয়সের সঙ্গেই।

একই সুতার অনেক ভেলকি
মসলিন, বলাকা সিল্ক, অ্যান্ডি—সবই একই রেশম সুতায় বোনা। মসলিন কাপড়টি যে সুতায় বানানো হয়, একই সুতা মোটা করে টুইস্টিং মেশিনে পাকানো হলে বলাকা সিল্ক হয়ে যায়। একটি শাড়ি তৈরি করার পর রেশমের বাতিল সুতাগুলো দিয়ে অ্যান্ডি, দুপিয়ান ও মটকা তৈরি করা হয়।

বাজার ঘুরে

চকচকে ও একটু মোটা কাপড় হওয়ায় সিল্কের চাহিদা শীতের সময় তুলনামূলক বেশি হয়। নকশা ও রং ফুটিয়ে তোলা যায় মনের মতো করে। যেকোনো কাজই সিল্কের ওপর করা যায়। নকশার তালিকায় প্রিন্ট তুলনামূলকভাবে এগিয়ে আছে।
ফ্যাশন ডিজাইনার মায়া রহমান জানান, সবাই এখন পোশাকের নকশায় সারল্য পছন্দ করেন। শাড়ির কুঁচি, পাড় ও আঁচলে আলাদা আলাদা নকশা করা হচ্ছে। তবে পুরো শাড়িতে বাড়তি আভিজাত্য এনে দিচ্ছে কাঁথাস্টিচের কাজ। এ ছাড়া কাটওয়ার্ক, হ্যান্ডপেইন্ট, এমব্রয়ডারি, অ্যাপ্লিক, ভেজিটেবল ডাই, বাটিকের ছোঁয়ায় আলাদা মাধুর্য পাচ্ছে। হ্যান্ডলুমে জ্যার্কাড ও ডবি ব্যবহার করে আঁচল, পাড়ে আলাদা ডিজাইন করা হচ্ছে বলে জানান জি এম আলমগীর। ব্লাউজের গলায় বিভিন্ন ধরনের নকশা এবার বাড়তি আকর্ষণ। উঁচু গলার নকশাটাই বিভিন্নভাবে করতে পারেন।

কেনার আগে পুড়িয়ে দেখুন
বাজার ঘুরলেই ক্রেতাদের মধ্যে সিল্কের চাহিদা বোঝা যায়। তবে সিল্ক কেনার আগে যাচাই করে নেওয়া উচিত, এটা আসল কি না। ২৭ বছর ধরে রেশম উৎপাদনের সঙ্গে কাজ করছেন দোয়েল সিল্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এম আলমগীর। তিনি জানালেন সহজ একটি পদ্ধতি। কাপড়ের কোনার একটু অংশ আগুনে পুড়িয়ে দেখুন। ছাই হয়ে গেলে বুঝবেন এটি রেশমের সুতায় তৈরি সিল্ক। পৃথিবীর ৩৬টি দেশে রেশম উৎপাদন করা হয়। সব জায়গায় এই পদ্ধতিতেই সিল্ক চেনা হয়। পোড়ানোর পর গন্ধ বের হবে এবং ওই অংশটি পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।

আভিজাত্যের প্রতীক
রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন জানান, সিল্কের কাপড়ে চকচকে ভাব থাকে। এটি চেহারায় প্রতিফলিত হয়। একারণে চেহারায় আলাদা সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। এই শীতে সাজের সময় পুরো চেহারায় যেকোনো একটি জায়গাকে প্রাধান্য দিন। সেটা লিপস্টিক হতে পারে। চোখ ও অন্যান্য অংশের সাজকে কিছুটা হালকা রেখে ঠোঁটে গ্লসি লিপস্টিক ব্যবহার করুন। সিল্কের শাড়ির সঙ্গে মুক্তা, পাথরের গয়না ভালো লাগবে বলে জানান মায়া রহমান।

দরদাম
ড্রেসিডেলে সিল্কের শাড়িগুলোর দাম পড়বে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
দোয়েল সিল্কে দাম পড়বে এক হাজার ৮০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
অরণ্যতে ক্রেপ সিল্ক, বলাকা সিল্ক ও অ্যান্ডি সিল্কের ওপর ভেজিটেবল ডাই প্রিন্ট, কাঁথাস্টিচের কাজ করা হচ্ছে। দাম পড়বে ১৪ থেকে ১৮ হাজার টাকা।
আড়ং-এ সিল্কের ওপর বিভিন্ন কাজ করা শাড়িগুলো পাবেন ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকায়।