২০১৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার বিশেষ প্রস্তুতি-৫৫

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 

প্রিয় পরীক্ষার্থীরা, আজ অর্থনীতি ২য় পত্র থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের ওপর আলোচনা করা হচ্ছে।

প্রশ্ন: নিম খাজনা কাকে বলে?
উত্তর: কেবল জমিই উদ্বৃত্ত আয় সৃষ্টি করে না, মানুষের তৈরি উপকরণগুলোও উদ্বৃত্ত আয় সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং খাজনা শুধু জমির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, বরং যেকোনো উপাদানের আয়ের মধ্যে খাজনার অস্তিত্ব থাকে। এ ধারণা থেকেই নিম খাজনা আলোচিত হয়। অধ্যাপক পি এ স্যামুয়েলসনের মতে, ‘যেকোনো উপকরণের দাম যদি সাময়িকভাবে স্থির থাকে, তাহলে তার আয়কে নিম খাজনা বলা চলে।’ অধ্যাপক ডি স্যালভেটর মনে করেন, নিম খাজনা হলো মোট আয় থেকে মোট পরিবর্তনীয় ব্যয়ের বিয়োগফল।
অতএব, মনুষ্য নির্মিত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দ্বারা স্বল্পকালে যে অতিরিক্ত আয় পাওয়া যায়, তাকে অর্থনীতিতে নিম খাজনা বলা হয়।
প্রশ্ন: মজুরি কী?
উত্তর: মজুরি হলো শ্রমিকের দাম। কোনো শ্রমিক তাঁর শারীরিক ও মানসিক শ্রমের বিনিময়ে উৎপাদন কাজে সহায়তা করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়ে যে পারিশ্রমিক পান, তাকে মজুরি বলে। অর্থনীতিবিদ কে কে ডুয়েট এ বিষয়ে বলেন, ‘শ্রমিকের সেবার বিনিময়ে যে দাম দেওয়া হয়, তাকেই মজুরি বলা হয়।’ অর্থনীতিবিদ ওরলের মতে, ‘দ্রব্যসামগ্রী ও সেবাকর্ম উৎপাদনের ক্ষেত্রে শ্রমিকের অবদানের পরিপ্রেক্ষিতে যে পারিতোষিক দেওয়া হয়, তা-ই মজুরি।’
সুতরাং বলা যায়, উৎপাদন কাজে নিযুক্ত শ্রমিক তাঁর দৈহিক ও মানসিক শ্রমের বিনিময়ে বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে যে পারিশ্রমিক পান, তাকেই মজুরি বলে।
প্রশ্ন: ব্যাংক কাকে বলে?
উত্তর: ব্যাংক হলো এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা মানুষের অব্যবহূত অর্থ আমানত হিসাবে জমা রাখে এবং ব্যাংক তা ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে ঋণ হিসেবে প্রদান করে থাকে। এ ক্ষেত্রে আমানতের বিপরীতে প্রদত্ত সুদ অপেক্ষাকৃত কম হয় এবং ঋণ প্রদানের বিপরীতে প্রাপ্ত সুদ বেশি হয়ে থাকে। দুই সুদের ব্যবধানই ব্যাংকের লাভ।
অর্থনীতিবিদ সেয়ার্সের মতে, ‘ব্যাংক এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যার ঋণ অন্যান্য লোকের ঋণ পরিশোধের জন্য গৃহীত হয়। অধ্যাপক কেয়ার্নসের মতে, ‘ব্যাংক হলো আর্থিক মধ্যস্থতাকারী ধার ও ঋণের কারবারি।’
সুতরাং বলতে পারি, ব্যাংক হলো আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে ওঠা একটি প্রতিষ্ঠান, যা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তুলনামূলক কম হারে সুদ প্রদান করে অর্থ জমা রাখে এবং উচ্চসুদে ঋণ প্রদান করে মুনাফা লাভ করে। পাশাপাশি মুনাফা লাভের নিমিত্তে বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি, অর্থ স্থানান্তর, আর্থিক লেনদেনসহ বিভিন্ন কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে।
প্রশ্ন: প্রকৃত মজুরি কাকে বলে?
উত্তর: একজন শ্রমিক তাঁর শারীরিক ও মানসিক শ্রমের বিনিময়ে মজুরি হিসেবে যে পরিমাণ অর্থ লাভ করেন, তার দ্বারা যে পরিমাণ পণ্যসামগ্রী ও সেবা ক্রয় করতে পারে, তাদের সমষ্টিকে প্রকৃত মজুরি বলে।
অর্থাৎ প্রকৃত মজুরি = আর্থিক মজুরি + অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। সংক্ষেপে আর্থিক মজুরির ক্রয়ক্ষমতাকে প্রকৃত মজুরি বলা যায়।
প্রকৃত মজুরিকে w/p প্রকাশ করা হয়।
এ ক্ষেত্রে w = আর্থিক মজুরি, p = দামস্তর।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক কাকে বলে?
উত্তর: স্বাধীনতা-উত্তরকালে দেশে শিল্পকারখানা স্থাপন, দ্রুত শিল্পায়ন, শিল্পকাঠামো মজবুতকরণের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির এক আদেশবলে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানকে শিল্প ব্যাংক বলে। এটা পাকিস্তান আমলের শিল্প উন্নয়ন ব্যাংক এবং ‘ইকুয়িটি পার্টিসিপেশন ফান্ড’ নিয়ে গঠিত হয়। বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ২০০ কোটি টাকা। এ মূলধনের ৫১ শতাংশ সরকার কর্তৃক পরিশোধিত এবং বাকি ৪৯ শতাংশ বাংলাদেশি নাগরিক অথবা দেশি বা বিদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিশোধযোগ্য।
বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংকের কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য একটি পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে। একজন চেয়ারম্যান, একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মোট নয়জন পরিচালকের সমন্বয়ে এ পরিচালনা পর্ষদ গঠিত। বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় অবস্থিত। এ ছাড়া তিনটি আঞ্চলিক কার্যালয় ও ১৫টি শাখা কার্যালয় রয়েছে।

প্রভাষক
সিলেট ক্যাডেট কলেজ, ফেনী