স্টিভ জবসের যে অভ্যাস অনুকরণ না করার পরামর্শ দিলেন পিক্সারের শীর্ষ কর্মকর্তা
অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন স্টিভ জবস। প্রযুক্তি–দুনিয়ায় বিপ্লব ঘটানো স্টিভ জবস ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর মারা গেলেও প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছে এখনো বেশ জনপ্রিয়। তাই তো স্টিভ জবসের জীবন ও কাজের ধরন সম্পর্কে জানতে নিয়মিত অনলাইনে ঢুঁ মারেন অনেকে। স্টিভ জবসের নেতৃত্বের ক্ষেত্র ছিল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যানিমেশন স্টুডিও পিক্সারেও। ১৯৮৬ সালে মাত্র ১ কোটি মার্কিন ডলারে জর্জ লুকাসের কাছ থেকে পিক্সার কেনার সময় প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্যিকভাবে অসফল ছিল। কিন্তু তাঁর নেতৃত্বেই পরবর্তী দুই দশকে পিক্সার অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে। পরে ২০০৬ সালে ওয়াল্ট ডিজনি স্টুডিওস পিক্সার কিনে নেয়। এর মাধ্যমে জবস বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি একটি সৃজনশীল প্রতিষ্ঠানের ভিত নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তবে স্টিভ জবসের একটি অভ্যাস অনুকরণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন পিক্সারের বর্তমান চিফ ক্রিয়েটিভ অফিসার (সিসিও) পিট ডক্টর।
স্টিভ জবসের নেতৃত্বে কাজ করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে পিট ডক্টর বলেন, স্টিভ কখনোই পিক্সারের সৃজনশীল সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করেননি। কাজের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর কিছু অভ্যাস, যেমন গভীর রাতে ফোন করা বা ছুটির সময়েও কাজের বিষয়ে কথা বলা—এগুলো অনুকরণ করার মতো নয়। নেতৃত্বের মধ্যে যতই উদ্দীপনা থাকুক, কাজের বাইরের জীবনের সীমা ও ভারসাম্য বজায় রাখা উচিত।
স্টিভ জবসের ব্যতিক্রমী নেতৃত্বের বিষয়ে পিট ডক্টর জানান, অ্যাপলের শুরুতে জবসের যে কড়া ও নিয়ন্ত্রণকারী ভাবমূর্তি ছিল, পিক্সারের ক্ষেত্রে তা একেবারেই ছিল বিপরীত। তিনি পরিচালক বা চিত্রনাট্যকারদের কাজে হস্তক্ষেপ করেননি। যখন কেউ তাঁর পরামর্শ চাইত, তখনই মতামত দিতেন। স্টিভ সব সময় বলতেন, ‘এটা আমার কাজ নয়।’ তাঁর ভূমিকা ছিল মূলত একজন পরামর্শক ও অংশীদারের মতো।
জবসের কৌশলগত নেতৃত্বের বিষয়ে পিট ডক্টর জানান, স্টিভের অন্যতম বড় গুণ ছিল কোনো জটিল আলোচনা বা তর্কে তিনি দ্রুত বুঝে যেতেন আসল সমস্যা কী। ৫ মিনিটের মধ্যে তিনি ধরতে পারতেন, সবার মনের গভীরে কোন বিষয়গুলো কাজ করছে। এটাই ছিল জবসের কৌশলগত নেতৃত্বের আসল রূপ। তিনি কখনোই ক্ষমতাবলে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতেন না। বোঝাপড়ার মাধ্যমে সবার মধ্যে একধরনের ঐক্য তৈরি করতেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া