স্মার্টফোনে থাকা সব ছবি গোপনে দেখবে ফেসবুক, কেন

ফেসবুকরয়টার্স

স্মার্টফোন এখন শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, ছবি তোলার ক্ষেত্রেও হয়ে উঠেছে অন্যতম প্রধান যন্ত্র। আধুনিক স্মার্টফোনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিসহ উন্নত সেন্সর ও ম্যানুয়াল নিয়ন্ত্রণ–সুবিধা যুক্ত থাকায় সহজেই ডিএসএলআর ক্যামেরার মতো ভালো মানের ছবি তোলা যায়। তাই স্মার্টফোনে দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন স্মৃতি সংরক্ষণ করেন অনেকে। কেউ আবার পছন্দের এক বা একাধিক ছবি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। আর তাই এবার ব্যবহারকারীদের আপলোড করা ছবির পাশাপাশি স্মার্টফোনে থাকা সব ছবি সংগ্রহ করতে ‘ক্লাউড প্রসেসিং’ নামের নতুন সুবিধা চালু করেছে ফেসবুক। এআইনির্ভর এই সুবিধা স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্মার্টফোনে থাকা সব ছবি সংগ্রহ করে মেটার সার্ভারে জমা করবে।

ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ব্যবহারকারীদের জন্য চালু হওয়া ক্লাউড প্রসেসিং সুবিধাটি ব্যবহারকারীদের অনুমতি নিয়ে ফোনের গ্যালারিতে থাকা অপ্রকাশিত ছবিগুলোও সার্ভারে জমা করবে। এরপর সার্ভারে থাকা ছবিগুলোর কোলাজ তৈরি করে নির্দিষ্ট সময়ে ব্যবহারকারীদের উপস্থাপন করা হবে। এসব ছবির মধ্যে বিভিন্ন স্ক্রিনশট ও রসিদও থাকতে পারে। এই সুবিধা চালুর উদ্দেশ্য হলো ব্যবহারকারীদের ছবি ও ভিডিওকে আরও ‘শেয়ারযোগ্য’ করে তোলা।

ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করায় আগেও নানা প্রশ্নের মুখে পড়েছে মেটা। নতুন সুবিধাটি চালুর পর আবারও ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, মেটা চাইলে ব্যবহারকারীদের অনুমতি ছাড়াই গোপনে ফেসবুক অ্যাপের প্রাইভেসি সেটিংস পরিবর্তন করে স্মার্টফোনে থাকা সব ছবি সংগ্রহ করে নিজেদের এআই মডেলকে প্রশিক্ষণ দিতে পারে। তবে এ বিষয়ে মেটা জানিয়েছে, আমরা ব্যবহারকারীদের ক্যামেরা রোলের ছবি বা ভিডিও মেটার এআই উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করি না। তবে ব্যবহারকারীরা যদি আমাদের এআই টুল দিয়ে ছবি সম্পাদনা বা শেয়ার করেন, তবে তা ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুন

প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট দ্য ভার্জের এক প্রশ্নের জবাবে মেটার মুখপাত্র মারি মেলগুইজো জানান, এই সুবিধার মাধ্যমে আপলোড করা ছবিগুলো ব্যবহারকারীদের প্রস্তাব পাঠানোর জন্য ব্যবহার করা হবে, এআই প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য নয়। তবে ব্যবহারকারীরা যদি সেই প্রস্তাবিত ছবি মেটা এআই টুল দিয়ে সম্পাদনা বা প্রকাশ করেন, তখন সেগুলো এআই প্রশিক্ষণে কাজে লাগানো হতে পারে। অর্থাৎ ব্যবহারকারী কিছু না করলেও ফেসবুকের সার্ভারে তাঁর ছবির কপি সংরক্ষণ করা হবে।

আরও পড়ুন

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে মেটা স্বীকার করেছিল, ২০০৭ সাল থেকে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ছবি ও লেখা ব্যবহার করে তারা তাদের এআই মডেলকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এ ছাড়া ফেসবুক অ্যাপের প্রাইভেসি সেটিংস গোপনে পরিবর্তন করে ব্যবহারকারীদের স্মার্টফোনে থাকা ছবি গোপনে দেখার অভিযোগও রয়েছে মেটার বিরুদ্ধে।

সূত্র: দ্য ভার্জ

আরও পড়ুন