মোটরবাইক কেনার কথা ভাবছেন? কিন্তু আপনার জন্য কোন মোটরবাইক উপযুক্ত, সেটা ঠিক করতে পারছেন না। শহুরে কর্মব্যস্ত জীবনে দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য মোটরবাইক আপনাকে চলার পথকে প্রশান্তিময় করে তুলবে। বাঁচবে মূল্যবান সময়, সাশ্রয় করবে অর্থ আর কমাবে ক্লান্তি। আপনার জন্য কোন মোটরবাইকটি উপযুক্ত, এটা ভেবেই হয়তো হয়রান হয়ে গেছেন বা যাচ্ছেন। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অবস্থিত লাবণী বাইক সেন্টারের ব্যবস্থাপক মো. মিনহাজ ইসলাম বলেন, আপনি কী কী কারণে বাইক কিনবেন, তারপর ওপর নির্ভর করেই ধরন ঠিক করা উচিত।
যদি বেশি চলতে হয়
আপনি যদি বাইকে অনেক বেশি চলাচল করেন বা রাইড শেয়ারিং করেন, তাহলে আপনার আরামদায়ক ও তেলসাশ্রয়ী বাইক কেনা উচিত। এটি প্রতিদিনের যাতায়াতের জন্য আপনার জন্য উপযুক্ত বাইক। দেশের বাজারে এ ধরনের বাইকই বেশি পাওয়া যায়। ক্রেতাদের পছন্দের কথা চিন্তা করে প্রায় প্রতিটি মোটরসাইকেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এ ধরনের বাইক তৈরি করে। এসবের দামও তুলনামূলক কম। একই সঙ্গে ইঞ্জিনের শক্তির দিক থেকে সাধারণ মানের হলেও দেখতে চলনসই। এ ধরনের বাইকের ইঞ্জিন সাধারণত ৮০ থেকে ১২৫ সিসি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ অপেক্ষাকৃত সহজ। বাইকগুলোয় দৈনন্দিন যাতায়াতের খরচ কমে যাবে বেশ খানিকটা। মান ও ব্র্যান্ডের ওপর নির্ভর করে বাইকগুলোর দাম ৬৫ হাজার থেকে থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
স্টাইলিশ বাইক
যদি ফ্যাশন ও স্টাইলের কথা চিন্তা করে বাইক কিনতে চান, তাহলে আপনার জন্য হালফ্যাশনের বাইকেই কেনা উচিত। এ বাইকের খুব বেশি তেলসাশ্রয়ী নয়। তবে বাইকগুলো বেশ ফ্যাশনেবল। এ ধরনের বাইক দেশের বাজারে প্রচুর দেখা মিলবে। বাংলাদেশে বর্তমানে ১৬০ সিসির ইঞ্জিন পর্যন্ত মোটরবাইকের অনুমতি রয়েছে। তাই বাংলাদেশের মোটামুটি সব বিশেষ বাইকই ১৫০ থেকে ১৬০ সিসি ইঞ্জিনের হয়ে থাকে। কেতাদুরস্ত এ বাইকগুলো আপনাকে দেবে শক্তিশালী ইঞ্জিন, নিয়ন্ত্রণ আর গতির উদ্দামতা। আর এ ধরনের বাইকের দাম সাধারণত দেড় লাখ থেকে তিন লাখ টাকার মধ্যে।
গতির জন্য
যাঁরা গতি ভালোবাসেন, তাঁদের প্রথম পছন্দ স্পোর্টস বাইক। তবে বাংলাদেশের রাস্তায় এই বাইকগুলো খুব বেশি চোখে পড়বে না। সিসির সীমাবদ্ধতা থাকায় প্রকৃত স্পোর্টস বাইক পাওয়া না গেলেও একই রকম দেখতে এবং সিসিসীমার মধ্যে শক্তিশালী ইঞ্জিন দিয়ে তৈরি বেশ কিছু বাইক বাজারে রয়েছে। এ বাইকগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি শক্তিশালী ইঞ্জিন। মসৃণ গিয়ার পরিবর্তন, কেতাদুরস্ত স্পোর্টিং-শৈলীর এই বাইকগুলো আপনাকে দেবে একজন রেসারের অনুভূতি। ভারী ফ্রেম আর আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা রয়েছে এ বাইকগুলোয়। এ বাইক কেনার সময় তেল খরচ ও দাম মাথার থেকে সরিয়ে রাখতে হবে। কারণ, এ বাইকগুলো তেমন দাম, তেমনি তেলের খরচও বেশি। এ স্পোর্টস বাইকগুলো দাম দেশের বাজারে তিন লাখ থেকে পাঁচ বা ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত।
ঝামেলাহীন চলাচল
তবে আপনি যদি কোনো ঝামেলা ছাড়া বাইক চালাতে চান, তাহলে আপনার জন্য স্কুটি। একবার চালু করে সহজ ও ঝামেলাহীনভাবে এ বাহনগুলো চলতেই থাকে। বাংলাদেশে প্রায় সব বাইক প্রস্তুতকারকেরই স্কুটার বা স্কুটি রয়েছে। অনেকের মনে একটা ধারণা আছে, স্কুটি মানেই নারীদের বাহন। বাংলাদেশে পুরুষেরা স্কুটি কম চালালেও অনেক দেশেই আছে নারীদের চেয়ে পুরুষেরাই বেশি স্কুটি চালান। পুরুষ ও নারীদের জন্য রয়েছে মনোরম নকশার বিভিন্ন স্কুটার বা স্কুটি। এগুলোর সুবিধা হচ্ছে, বাইক চালানো অপেক্ষাকৃত সহজ, ইঞ্জিনগুলো বেশ তেলসাশ্রয়ী এবং প্রায় প্রতিটি স্কুটারেই প্রয়োজনীয় কিছু টুকটাক জিনিসপত্র রাখার জন্য রয়েছে ছোটখাটো কুঠুরির ব্যবস্থা। ব্র্যান্ড অনুযায়ী স্কুটারের দাম বাজারে সাধারণত এক থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত।