১২০ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি করার দাবি হ্যাকারের, সত্য না মিথ্যা
বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রায় ১২০ কোটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার দাবি করেছে ‘বাইটব্রেকার’ নামের এক হ্যাকার। বাইটব্রেকার জানিয়েছেন, ফেসবুকের অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস বা এপিআইয়ের একটি দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে তিনি এই বিপুল পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করেছেন। সাধারণত এপিআইয়ের মাধ্যমে অনুমোদিত অ্যাপ্লিকেশনগুলোয় ব্যবহারকারীর নির্দিষ্ট কিছু তথ্য দেখা গেলেও তিনি বিপুল পরিমাণ ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেছেন। শুধু তা–ই নয়, প্রাথমিকভাবে প্রায় এক লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য ডার্ক ওয়েবে বিক্রির জন্য প্রকাশও করেছেন।
তথ্য চুরির ঘটনাটি সত্য হলে এটি হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক সবচেয়ে বড় সাইবার হামলার ঘটনা। এর আগে ২০২১ সালে ফেসবুকের ৫৩ কোটি ব্যবহারকারীর এবং ২০২২ সালে লিংকডইনের ৭০ কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি হয়েছিল। তবে বাইটব্রেকারের দাবি অস্বীকার করে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা জানিয়েছে, এটি নতুন কোনো তথ্য ফাঁসের ঘটনা নয়। ২০২১ সালে ফাঁস হওয়া তথ্যগুলোই নতুন করে প্রচার করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি তখনই ব্যবহারকারীদের জানিয়েছিলাম এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনারোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সাইবার গবেষণা প্রতিষ্ঠান হ্যাকরিড জানিয়েছে, বাইটব্রেকার যে এক লাখ ব্যবহারকারীর তথ্যের নমুনা প্রকাশ করেছেন, তার অনেক অংশই ২০২১ সালের ঘটনার সঙ্গে মিলে গেছে। বাইটব্রেকারের তথ্যমতে, ১২০ কোটি অ্যাকাউন্টের তথ্য মাত্র ২০ কোটি ‘রো’ বা সারিতে সংরক্ষণ করা রয়েছে। কিন্তু তথ্যভান্ডারের প্রযুক্তিগত গঠনের দিকে নজর দিলে বোঝা যায়, সাধারণত একজন ব্যবহারকারীর তথ্য একটি সারিতে রাখা হয়। তাই ১২০ কোটি ব্যবহারকারীর জন্য ১২০ কোটি সারি হওয়া স্বাভাবিক। এই গরমিলের কারণে বিশেষজ্ঞরা বাইটব্রেকারের দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের তথ্য চুরি শুধু গোপনীয়তাই নয়, ব্যবহারকারীর আর্থিক নিরাপত্তা ও পরিচয়গত সুরক্ষার ওপরও বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করে। তাই ফেসবুক ব্যবহারকারীদের এখনই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনলাইনে নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকার জন্য প্রথমেই ফেসবুকসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা উচিত। যদি কোনো অ্যাকাউন্টে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সেটিও দ্রুত পরিবর্তন করতে হবে। পাশাপাশি টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবস্থা চালু করা উচিত। একই সঙ্গে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক লেনদেন নজরে রাখা প্রয়োজন।
সূত্র: ডেইলি মেইল