২৫ বছরে আগে কম্পিউটার শুল্কমুক্ত হওয়ার ফলে দেশে এর প্রসার ঘটেআনপ্ল্যাশ

১১ জুন ১৯৯৮
বাজেটে কম্পিউটারের সব শুল্ক ও কর প্রত্যাহার
১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরের বাজেটে কম্পিউটার আমদানি ও বিক্রির ওপর সব রকমের শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এর ফলে দেশে কম্পিউটারের প্রসার ব্যাপক হারে বাড়ে। তখন যে পার্সোনাল কম্পিউটারের দাম ছিল ৫০ বা ৬০ হাজার টাকা, বাজেটের পর সেই মানের কম্পিউটারের দাম ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় নেমে আসে।

আজ থেকে ২৫ বছর আগে ১৯৯৮ সালের ১১ জুন জাতীয় সংসদে ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। প্রস্তাবিত বাজেটে তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাকশিল্পের পর কম্পিউটার সফটওয়্যার ও ডেটা প্রসেসিংকে আমাদের সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সফটওয়্যারকে সব প্রকার শুল্ক, করমুক্ত করাসহ এ খাতকে বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। আমি ইতিপূর্বে প্রদত্ত শুল্ক–কর সুবিধা আরও সম্প্রসারণ করে কম্পিউটার ও শুধু কম্পিউটারে ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রাংশের ওপর প্রযোজ্য ২ দশমিক ৫ ও ১৫ শতাংশ শুল্ক এবং ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের প্রস্তাব করছি। কম্পিউটারের সঙ্গে একটি ইউপিএস আমদানি হলে তার ওপরও উপরোক্ত সুবিধা প্রযোজ্য হবে।’
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এসব পদক্ষেপে প্রায় ২০ কোটি টাকা রাজস্ব কমবে। তবে এ রাজস্ব ক্ষতির বিনিময়ে শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং দেশে কম্পিউটার সংযোজন ও সফটওয়্যার তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

দেশ থেকে সফটওয়্যার রপ্তানি সম্ভাব্যতা ও করণীয় নিয়ে ১৯৯৬ সালের দিকে অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে একট কমিটি গঠন করা হয়েছিল, যা ‘জেআরসি কমিটি’ নামে পরিচিত। সেই কমিটির একজন সদস্য ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। প্রথম আলোকে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘১৯৯৭ সালে জেআরসি কমিটি সরকারের কাছে প্রতিবেদন পেশ করে। এতে ৪৫টি সুপারিশ ছিল। ১ নম্বর সুপারিশটি ছিল কম্পিউটারের ওপর সব ধরনের শুল্ক ও কর প্রত্যাহার। এর পাশাপাশি বাজেটের আগে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনও (এফবিসিসিআই) একই প্রস্তাব করে। শুল্ক ও করমুক্ত হওয়ায় দেশে কম্পিউটারের দাম কমে যায়। সেই সময় আমি ৫১২ কিলোবাইটের অ্যাপল কম্পিউটার বিক্রি করতাম ৬০ হাজার টাকায়। করমুক্ত হওয়ার পর সেটি ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পেরেছি।’

শুল্কমুক্ত কম্পিউটার বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। ১৯৯৩ সালে দেশে প্রথমবারের মতো ‘বিসিএস কম্পিউটার শো’-এর আয়োজন করে সংগঠনটি। মেলার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ কম্পিউটার সম্পর্কে জানতে পারেন। এরপর প্রতিবছরই এ মেলার পরিসর ও দর্শক বাড়তে থাকে। ১৯৯৮ সালে বাজেট ঘোষণার আগে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে প্রমাণ আকারের বিলবোর্ডে কম্পিউটারের ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে প্রচারণা চালিয়েছিল বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি।

স্টিভ বলমার (জন্ম ১৯৫৬, ডেট্রয়েট, যুক্তরাষ্ট্র)
রয়টার্স

১১ জুন ১৯৮০
মাইক্রোসফটে যোগ দেন স্টিভ বলমার
৩০তম কর্মী হিসেবে ১৯৮০ সালের ১১ জুন শীর্ষ সফটওয়্যার নির্মাতা মাইক্রোসফট করপোরেশনে যোগ দেন স্টিভ বলমার। স্টিভেন অ্যান্থনি ‘স্টিভ’ বলমার পরবর্তী সময়ে মাইক্রোসফটের শীর্ষ পদে আসীন হয়েছিলেন। তিনি ২০০০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গুগল আর্থ
গুগল

১১ জুন ২০০১
গুগল আর্থ চালু
পৃথিবীর ত্রিমাত্রিক মানচিত্র গুগল আর্থ চালু করে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগল। কম্পিউটার প্রোগ্রাম গুগল আর্থে কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) থেকে পাওয়া পৃথিবীর যেকোনো স্থানের মানচিত্র দেখা যায়। এ প্রোগ্রামটি স্যাটেলাইট ছবি, ওপর থেকে তোলা আলোকচিত্র এবং জিআইএস (জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম) থেকে পাওয়া তথ্য একটি ত্রিমাত্রিক ভূগোলক (গ্লোব) আকারে উপস্থাপন করে। ব্যবহারকারী কম্পিউটার বা স্মার্টফোনে গ্লোবের ডানে-বাঁয়ে ও ওপর-নিচে গিয়ে বিভিন্ন কোণ থেকে জায়গা দেখতে পান। জুম করে নির্দিষ্ট স্থান ভালোভাবে দেখা যায়। গুগল আর্থ লেখা হয়েছে সি+‍+ প্রোগ্রামিং ভাষায়। বিশ্বের বেশ কটি ভাষায় পাওয়া যায় গুগল আর্থ।

নির্মাতাদের হাতে স্পিক অ্যান্ড স্পেল
কম্পিউটার হিস্ট্রি ডটওআরজি

১১ জুন ১৯৭৮
শিশুদের ভাষা শেখানোর খেলনা ‘স্পিক অ্যান্ড স্পেল’
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্ট (টিআই) স্পিক অ্যান্ড স্পেল নামে কথা বলার একটি খেলনা বাজারে আনে। এটি ছিল ৭ বছর ও এর বেশি বয়সী শিশুদের জন্য। মানুষের মতো কণ্ঠস্বর তৈরি করতে পারে এমন প্রথম ইলেকট্রনিক যন্ত্র ছিল এটি। স্পিক অ্যান্ড স্পেল তৈরি হয়েছে সিলিকনের একক চিপের ওপর ভিত্তি করে। এটি একটি ফিল্টারের মাধ্যমে ডিজিটাল তথ্য প্রক্রিয়া করে কৃত্রিম কথা শোনাত। সেই কথা যন্ত্রটি ১০০ সেকেন্ড পর্যন্ত ধরে রাখতে পারত।

তথ্যসূত্র: দৈনিক ভোরের কাগজ, কম্পিউটার হোপ, উইকিপিডিয়া ও কম্পিউটার হিস্ট্রি ডটওআরজি