নিজে সফল হয়েছেন, উদ্যোক্তাও তৈরি করেছেন আম্বারীন রেজা

আম্বারীন রেজাসংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) বিষয়ে পড়ালেখার সময়ই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে জীবনকে সহজ করার চিন্তা মাথায় আসে আম্বারীন রেজার। পড়ালেখা শেষ করে অস্ট্রেলিয়ার একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করলেও ২০১৩ সালে বাবার মৃত্যুর পর বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। যোগ দেন রকেট ইন্টারনেটের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে। কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করলেও নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করতে থাকেন। এমন সময় অনলাইনে খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহকারী আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ফুডপান্ডা বাংলাদেশের সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে কাজের সুযোগ পান আম্বারীন। নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নে যোগ দেন প্ল্যাটফর্মটিতে। বৈশ্বিকভাবে ফুডপান্ডার বয়স তখন মাত্র এক বছর। ফলে আর্থিকভাবে খুব সুদৃঢ় অবস্থান ছিল না প্ল্যাটফর্মটি। অনেক সীমাবদ্ধতার পরও এক বছর না পেরোতেই বাংলাদেশে ফুডপান্ডা জনপ্রিয় হতে শুরু করে। তখন দেশের মানুষের অনলাইননির্ভরতা তেমন গড়ে ওঠেনি। কিন্তু দমে যাননি আম্বারীন, দেশের জন্য একটি শক্তিশালী ডিজিটাল ইকোসিস্টেম তৈরির মাধ্যমে নিজের স্বপ্ন সফল করতে কাজ শুরু করেন। ধীরে ধীরে বিভিন্ন রেস্তোরাঁ, দোকান, ক্রেতা ও সরবরাহকারীদের একই নেটওয়ার্কের মধ্যে এনে নিজের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেন তিনি। একসময়ের অপরিচিত অনলাইনে খাবার সরবরাহব্যবস্থা আমাদের জীবনযাপনের অংশ হয়ে যায়।

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ফুডপান্ডায় হোম শেফ কর্মসূচি চালু করেন আম্বারীন। এর মাধ্যমে কোনো বিনিয়োগঝুঁকি ছাড়া ঘরে বসেই নারী উদ্যোক্তারা আয় করতে পারছেন। শুধু তা–ই নয়, পণ্য পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে তরুণ-তরুণীরাও আয় করছেন।
ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে এরই মধ্যে দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন পুরস্কারও পেয়েছেন আম্বারীন রেজা। দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে তরুণদের আয়ের সুযোগ তৈরিতে বিশেষ অবদান রাখায় জাতীয় পর্যায়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার ও দেশি স্টার্টআপের প্রসার ও বিকাশে অবদান রাখায় বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের ‘সিইও অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।

আম্বারীন রেজা বলেন, ‘শুরুর যাত্রাটা সাদামাটা ছিল। নিরলসভাবে কাজ করে অনলাইনে খাবার সরবরাহ খাতকে দেশে জনপ্রিয় করেছি। বর্তমানে ফুডপান্ডার মাধ্যমে সারা দেশের ৬০ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং রেস্তোরাঁকে অফলাইন থেকে অনলাইনে এনে ক্রেতাদের সঙ্গে যুক্ত করেছি। গত কয়েক বছরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১০ লাখের বেশি মানুষের জন্য আয়ের সুযোগ তৈরি করেছে ফুডপান্ডা।’