বাদুড় কি অন্ধ

বাদুড়রয়টার্স

কথায় কথায় আমরা বলি, বাদুড়ের মতো অন্ধ। অনেকেরই ধারণা, বাদুড় চোখ দিয়ে নয়, শব্দ দিয়ে নিজের অবস্থান বুঝতে পারে। বাদুড়ের অন্ধত্ব আসলে একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বাদুড় মোটেও অন্ধ নয়। বাদুড়ের ছোট ছোট চোখ আছে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, বাদুড় আবছা আলোয় ভালো দেখে। মানুষের মতো তীক্ষ্ণ বা রঙিন না হলেও রাতের আঁধারে পথ খুঁজতে বা শিকার ধরার জন্য বাদুড়ের দৃষ্টিশক্তি যথেষ্ট কার্যকর।

বাদুড়ের নিশাচর স্বভাব ও শব্দ প্রতিধ্বনি ব্যবহার করে দিক নির্ণয়ের ইকোলোকেশন ক্ষমতার জন্য অনেকেই বাদুড়কে অন্ধ বলে ধরে নেন। বাদুড় অন্ধকারে উড়তে ও শিকার ধরতে উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ তৈরি করে। সেই শব্দের প্রতিধ্বনি শুনে চারপাশের বস্তু ও শিকারের অবস্থান, আকার ও গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা লাভ করে বাদুড়। এ জন্য অনেকেই মনে করেন বাদুড় চোখে দেখতে পায় না।

বিভিন্ন প্রজাতির বাদুড়ের দৃষ্টিশক্তির ভিন্নতা দেখা যায়। যেসব বাদুড় ফল খায় তাদের মেগাব্যাটও বলা হয়। এদের কিন্তু বড় বড় চোখ থাকে। এসব বাদুড় খাবার খুঁজে বের করার জন্য প্রধানত দৃষ্টিশক্তির ওপর নির্ভর করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এদের দৃষ্টিশক্তি কিছু ক্ষেত্রে মানুষের চেয়েও ভালো। আবার পোকামাকড় শিকার করে ছোট আকারের বাদুড় ইকোলোকেশন ব্যবহার করে শিকার ধরে ও পথ চলে। এসব বাদুড় চোখ ব্যবহার করে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে শিকারের গতিবিধি শনাক্ত করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, বাদুড় শিকার শনাক্তের পাশাপাশি দূরবর্তী বস্তু দেখার জন্য চোখ ব্যবহার করে। এমনকি ইকোলোকেশন ব্যবহার করার সময়ও বাদুড় দৃষ্টিশক্তির সাহায্য নেয়। উড়ন্ত বাদুড় যখন কোনো পোকামাকড়ের প্রতিধ্বনি শুনতে পায়, তখন চোখ ব্যবহার করে পোকামাকড়ের সঠিক অবস্থান ও গতিবিধি নির্ণয় করে শিকার ধরার জন্য প্রস্তুতি নেয়। শুধু তা–ই নয়, কিছু প্রজাতির বাদুড় অতিবেগুনি রশ্মি দেখতে সক্ষম। এরা ফুল ও ফল খুঁজে পেতে অতিবেগুনি রশ্মির সাহায্য নেয়। কিছু বাদুড় তাপ সংবেদী অঙ্গের সাহায্যে শিকারের দেহের তাপও অনুভব করতে পারে।  

সূত্র: ব্রিটানিকা