বড়দিনের উপহার, চাঁদে যাচ্ছে বিটকয়েন

পেরিগ্রিন লুনার ল্যান্ডারছবি: অ্যাস্ট্রোবায়োটিক টেকনোলজি

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন ২৫ ডিসেম্বর। দিনটি সামনে রেখে চাঁদে বিভিন্ন গবেষণাযন্ত্রের পাশাপাশি বড়দিনের উপহার যৌথভাবে পাঠাতে কাজ করছে সাতটি দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার নেতৃত্বে বিভিন্ন যন্ত্র ও বড়দিনের উপহার নিয়ে ২৪ ডিসেম্বর চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে পেরিগ্রিন লুনার ল্যান্ডার। চাঁদের বে অব স্টিকিনেস বা সাইনাস ভিসকোসিটাটিস নামে পরিচিত প্রাচীন লাভাপ্রবাহের একটি অঞ্চলে নামবে রকেটটি। রকেট উৎক্ষেপণের প্রায় সব প্রস্তুতি শেষ হওয়ায় এখন চলছে ক্ষণগণনা।

চাঁদে অভিযানের এই মিশন বিভিন্ন কারণে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, এটি নাসার বেসরকারি বাণিজ্যিক মহাকাশযান কার্যক্রম ‘কমার্শিয়াল লুনার পেলোড সার্ভিসেস’ নামের উদ্যোগের আওতায় পরিচালনা করা হচ্ছে। নতুন এ উদ্যোগের মাধ্যমে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রোবায়োটিক টেকনোলজির তৈরি রকেটের মাধ্যমে চাঁদে পণ্য পাঠানো হচ্ছে। এ বিষয়ে অ্যাস্ট্রোবায়োটিক টেকনোলজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জন থর্নটন বলেন, ‘আমরা চাঁদে যাওয়ার জন্য প্রথম বাণিজ্যিক রকেট তৈরি করেছি। একজন বিজ্ঞানীকে মহাকাশে গবেষণার জন্য অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়। নতুন এই অংশীদারত্বমূলক কাজ বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের নিয়মিতভাবে চাঁদের পৃষ্ঠ স্পর্শ করার সুযোগ করে দেবে।’

এই অভিযানে রকেটের সঙ্গে পেরিগ্রিন আয়ন ট্র্যাপ ম্যাস নামের স্পেকট্রোমিটার (পিআইটিএমএস) পাঠানো হচ্ছে। এই পিআইটিএমএস চাঁদের চারপাশে থাকা পাতলা গ্যাসীয় পরিবেশ নিয়ে গবেষণা করবে। এ বিষয়ে নাসার এক্সপ্লোরেশন সায়েন্স স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন বিজ্ঞানী রায়ান ওয়াটকিনস বলেন, পিআইটিএমএস থেকে পাওয়া ফলাফল চাঁদে উদ্বায়ী পদার্থের প্রকৃত অবস্থা জানতে সহায়তা করবে। পেরিগ্রিন চাঁদে একটি নিউট্রন স্পেকট্রোমিটার সিস্টেম (এনএসএস) নিয়ে যাবে, যা চাঁদের পৃষ্ঠের নিউট্রনের পরিমাণ জানার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করবে।

এই অভিযানে লুনার রেট্রোরেফ্লেক্টর অ্যারে (এলআরএ), নিয়ার-ইনফ্রারেড ভোলাটাইলস স্পেকট্রোমিটার সিস্টেম (এনআইআরভিএসএস) এবং লিনিয়ার এনার্জি ট্রান্সফার স্পেকট্রোমিটার (এলইটিএস) নামের যন্ত্রও চাঁদে পাঠানো হচ্ছে। এসব যন্ত্রের মাধ্যমে চাঁদের গঠন, সূক্ষ্মতা পরিমাপ ও তাপীয় পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

ভারী যন্ত্রপাতি ছাড়াও চাঁদে আরও ১৫টি জিনিস পাঠানো হচ্ছে। জার্মান অ্যারোস্পেস সেন্টারের এম-৪১ রেডিয়েশন ডিটেক্টরের মতো বৈজ্ঞানিক যন্ত্রও যাচ্ছে চাঁদে। এ ছাড়া রয়েছে ৮০ হাজার শিশুর বার্তা এবং ভার্চ্যুয়াল মুদ্রা বিটকয়েন। এটি হবে চাঁদে পাঠানো প্রথম কোনো আর্থিক বস্তু। ২৪ ডিসেম্বর পৃথিবী থেকে উৎক্ষেপণের পর ২০২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি রকেটটি চাঁদে অবতরণ করবে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: লাইভ সায়েন্স