সাড়ে ১৬ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপের সন্ধান
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডশায়ারের একটি পাথরের খাদে প্রায় ১৬ কোটি ৬০ লাখ বছরের পুরোনো ডাইনোসরের পায়ের ছাপের সন্ধান পাওয়া গেছে। প্রায় ২২০ মিটার দীর্ঘ ডাইনোসরের চলাচলের পথে থাকা পায়ের ছাপগুলো বিরল গোল্ডিলকস এফেক্টের কারণে সংরক্ষিত ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডাইনোসরের পায়ের ছাপযুক্ত ডেওয়ার্স ফার্ম কোয়ারি নামের চলাচলের পথটিকে বিশ্বের দীর্ঘতম ডাইনোসর ট্র্যাকওয়ের একটি বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
অতীতে বিচরণ করা ডাইনোসরদের জগৎ সম্পর্কে নতুন তথ্য জানার সুযোগ থাকায় যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই আবিষ্কারের জন্য কাজ করেছেন। বিজ্ঞানীদের তথ্য মতে, ডাইনোসর নরম কাদার ওপর দিয়ে হাঁটার সময় এদের পা গভীরভাবে মাটিতে চাপা পড়েছিল। এরপর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সূর্যের তাপে পৃষ্ঠটি শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায়। সেখানে দ্রুত পলির নতুন স্তর জমা হয়, যা পরে চুনাপাথরে রূপান্তরিত হয়। চুনাপাথরের স্তরের নিচে লুকানো প্রাচীন পায়ের ছাপ পর্যালোচনার পর ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে একসময় বিশাল সরোপড ও অন্যান্য জুরাসিক প্রাণী চলাফেরা করত। অসাধারণ এই আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের প্রাগৈতিহাসিক জীবনের তথ্য জানার সুযোগ করে দিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, পায়ের ছাপগুলো সম্ভবত বিশাল চার পায়ের লম্বা গলাযুক্ত তৃণভোজী ডাইনোসরের। এ ধরনের ডাইনোসর ১৮ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতো এবং মাথা উঁচু করে বিচরণ করত। ডেওয়ার্স ফার্ম কোয়ারিতে মেগালোসরাস নামে পরিচিত একটি মাংসাশী ডাইনোসরের ছোট তিন পায়ের ছাপও শনাক্ত করা হয়েছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, তারাও একসময় একই ভূখণ্ডে শিকার করত।
পায়ের ছাপের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা অতীতের প্রাণীদের হাঁটার ধরন সম্পর্কে জানতে পারেন। হাড় ও কঙ্কালের বিপরীতে পায়ের ছাপ জীবনের গতিশীল মুহূর্তকে ধারণ করে। আর তাই লিভারপুল জন মুরস ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী পিটার ফালকিংহাম সন্ধান পাওয়া পায়ের ছাপ ব্যবহার করে ডাইনোসরদের চলাচলের ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া