সামুদ্রিক প্রবালের রং বদলাচ্ছে কেন?

সামুদ্রিক প্রবালের রং বদলাচ্ছে, কারণ তাপমাত্রা বৃদ্ধিএএফপি

সাম্প্রতিক সময়ের রেকর্ড পরিমাণ সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন রঙের সামুদ্রিক প্রবাল সাদা হয়ে যাচ্ছে। মারা যাচ্ছে বিপুলসংখ্যক শৈবালও। ইউএস ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) তথ্যমতে, বিভিন্ন সমুদ্রে থাকা প্রবালগুলো বর্তমানে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে ব্লিচিংয়ের শিকার হচ্ছে। ব্লিচিংয়ের কারণে প্রবালের স্বাভাবিক বিকাশ বন্ধ হয়। রঙিন প্রবাল ধবধবে সাদা হয়ে যায়। সমুদ্রের পানির তাপ বেড়ে গেলে এমনটা দেখা যায়।

প্রবাল সমুদ্রের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক। মাছের আবাস থেকে শুরু করে অনেক সামুদ্রিক পানির বাস প্রবাল কাঠামোতে। কয়েক মাস ধরে মহাসাগরের তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও আগের প্রভাব এখনো রয়ে গেছে। এনওএএ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সমুদ্রের তথ্য বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে নতুন শঙ্কার কথা জানিয়েছে। সংস্থাটির মতে, আটলান্টিক, প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরে যুক্ত বিভিন্ন সাগর ও উপসাগরের প্রবাল বেশি সংকটে আছে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিজ্ঞানী নিল ক্যানটিন অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি বলেন, দুই হাজার কিলোমিটারের মতো দৈর্ঘ্যের এই প্রাচীরে উচ্চমাত্রার ব্লিচিং দেখা যাচ্ছে। অনেক প্রবাল মারা যাওয়ার আশঙ্কা আছে। প্রবালকে সমুদ্রের স্থপতি বলে ডাকা হয়। প্রবালের বিশাল কাঠামোতে প্রায় ২৫ শতাংশ সামুদ্রিক প্রজাতি বাস করে। গড় তাপমাত্রার চেয়ে ১ ডিগ্রি তাপমাত্রা বেশি হলে প্রবালপ্রাচীর সর্বোচ্চ দুই মাস বেঁচে থাকতে পারে। প্রবালপ্রাচীর ধ্বংস হলে মাছের মতো প্রাণীর আবাসও ধ্বংস হবে।

তিন দশক ধরে বিজ্ঞানী অ্যান হগেট অস্ট্রেলিয়ার লিজার্ড দ্বীপে প্রবাল নিয়ে গবেষণা করছেন। প্রবালের রং বদলে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বড় মাত্রায় ব্লিচিং দেখা যাচ্ছে। প্রবাল তাপের কারণে রং হারিয়ে ফেললেও ধীরে ধীরে নিজেদের গঠন করতে পারে। একবার সাদা হয়ে গেলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে কয়েক বছর সময় প্রয়োজন হয় প্রবালের। অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সিডনির বিজ্ঞানী এমা ক্যাম্প বলেন, প্রবালপ্রাচীর আসলে বেশ স্থিতিস্থাপক। প্রবালপ্রাচীর হারিয়ে গেলে পৃথিবীর ঝুঁকি আরও বাড়বে।

সূত্র: বিবিসি