ঘোষণার আগেই তিনি নোবেলজয়ীদের নাম জেনে যান
নিকলাস এলমেহেদ পর্দার অন্তরালের মানুষ। ছবি আঁকেন। ভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট হিসেবে সুইডেনে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তবে যে কাজটা তাঁকে গোটা বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় তা হলো, নোবেলজয়ীদের অফিশিয়াল পোর্ট্রেট আঁকেন তিনি। প্রতি বিভাগে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণার পর কালো আউটলাইনের সঙ্গে সোনালি টেক্সচার মিলিয়ে যে ছবিগুলো অন্তর্জালে ঘোরেফেরে, সেগুলো নিকলাসেরই আঁকা।
সুইডেনের স্টকহোমে আজ সোমবার থেকে এ বছরের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু হবে। প্রথম দিন আমরা চিকিৎসাবিজ্ঞানে পুরস্কারজয়ীর নাম জানতে পারব। ৮ অক্টোবর পর্যন্ত একে একে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেলের ঘোষণা আসবে। ১১ অক্টোবর অর্থনীতির ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হবে নোবেলের এবারের আসর। স্বাভাবিক কারণেই নিকলাসের এখন ব্যস্ততার দিন। ই-মেইলের জবাবে প্রথম আলোকে সে কথাই জানালেন তিনি। বললেন, আজ থেকে শুরু হলো আমার ব্যস্ততার সপ্তাহ।
নোবেল মিডিয়ার নির্দেশনায় ২০১৭ সাল থেকে নোবেলজয়ীদের পোর্ট্রেটে কিছুটা ভিন্নতা এনেছেন নিকলাস। সে বছর কালো মোটা অউটলাইনের সঙ্গে যুক্ত হয় সোনালি রাংতার ব্যবহার। পাতলা এই রাংতা বিশেষ আঠার সাহায্যে ছবিতে লাগিয়ে দেন নিকলাস। এভাবে ছবি আঁকার পেছনে কারণ হলো, ব্রেকিং নিউজের আবহ দেওয়া। গত বছর প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিকলাস বলেছিলেন, এতে বলিষ্ঠ ভিজ্যুয়াল ইমপ্রেশন তৈরির চেষ্টা থাকে। আজ জানালেন, এবারও সে ধারাই অনুসরণ করা হবে। কালো-সোনালি মিলিয়ে আঁকবেন নোবেল বিজয়ীদের ছবি।
প্রক্রিয়াটি দেখতে পারবেন নিচের ভিডিওতে
নোবেলজয়ীদের পোর্ট্রেট আঁকার জন্য গত কয়েক দিন অনুশীলন করছেন নিকলাস। ১৯০৯ সালে সাহিত্যে নোবেলজয়ী সেলমা ল্যাগারলফের ছবি এঁকেছেন নতুন ধাঁচে। খানিকবাদে সরাসরি এবারের বিজয়ীর ছবি আঁকা শুরু করবেন। কিংবা কে জানে, হয়তো এরই মধ্যে শুরু করে দিয়েছেন। কারণ, বিজয়ীদের নাম প্রকাশ্যে আসার ‘কয়েক ঘণ্টা’ আগেই জানতে পারেন তিনি। তবে সে সময়টা ঠিক কতক্ষণ, নোবেল কমিটির নিষেধাজ্ঞা থাকায়, তা জানাননি নিকলাস।
শিল্পনির্দেশক হিসেবে ২০১২ সালে নোবেল মিডিয়াতে যোগ দেন নিকলাস এলমেহেদ। সে সময় বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে নোবেলজয়ীদের সবার ভালো ছবি পাওয়া যেত না ইন্টারনেটে। সে অভাব পূরণ করতে শুরু করেন নিকলাস। ২০১৪ সালে নোবেল মিডিয়ার চাকরি ছেড়ে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করলেন। তবে নোবেলজয়ীদের ছবি আঁকার কাজটা তাঁরই থাকল। সেবার সব নোবেলজয়ীর বেলায় একই নিয়ম প্রযোজ্য হলো, সবার ছবি আঁকতে শুরু করেন নিকলাস। সে নিয়মই এখনো চলছে।