উইকিলিকস

উইকিলিকস অনলাইনভিত্তিক একটি অলাভজনক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। অজ্ঞাত সূত্র থেকে পাওয়া গোপন তথ্য ও দলিল জনসমক্ষে প্রকাশ করা প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য।

২০০৬ সালের ৪ অক্টোবর উইকিলিকসের ওয়েবসাইটটি নিবন্ধিত হয়। ওয়েবসাইট চালু হয় ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে। চীন, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কয়েকজন সাংবাদিক, গণিতবিদ ও প্রযুক্তিবিদ মিলে ওয়েবসাইটটি পরিচালনা করেন। প্রতিষ্ঠাতা অস্ট্রেলিয়ান জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। তিনি প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক ও পরিচালকও।

উইকিলিকসের নিজস্ব কোনো দপ্তর নেই। বেতনভুক্ত কোনো কর্মী নেই। কর্মীরা সবাই স্বেচ্ছাসেবী। উইকিলিকস চলে অনুদানের অর্থে।

সূত্রের গোপনীয়তা কঠোরভাবে রক্ষা করে উইকিলিকস। এ ছাড়া বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য ও দলিলের বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাইয়ে প্রতিষ্ঠানটি সাংবাদিকতার সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে। লাখ লাখ তথ্য ও দলিল সংরক্ষণে সুরক্ষিত সার্ভার ব্যবহার করে উইকিলিকস। বিশেষ করে ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধে মার্কিন সেনাবাহিনীর বর্বরতার গোপন তথ্য ফাঁস করে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে উইকিলিকস। এরপর দফায় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ গোপন কূটনৈতিক নথি ফাঁস করতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। উইকিলিকস অন্য দেশের সরকারের গোপন তথ্যও ফাঁস করে।

উইকিলিকসের তত্পরতায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে মার্কিন প্রশাসন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের চক্ষুশূলে পরিণত হয় অ্যাসাঞ্জ ও তাঁর প্রতিষ্ঠান। উভয়ের ওপর নেমে আসে খড়্গ। উইকিলিকস বন্ধে নানা অপচেষ্টা চালায় ওয়াশিংটন।

পাশাপাশি অ্যাসাঞ্জকে শায়েস্তার কৌশল চলে সমান তালে। সুইডেনে যৌন হয়রানির মামলায় লন্ডনে গ্রেপ্তার হন তিনি। পরে তিনি পালিয়ে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। সেখানে বসেই কাজ চালিয়ে যান তিনি। নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে উইকিলিকস তাদের লক্ষ্যে এগিয়ে যায়।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ও মানবাধিকার রক্ষায় অসামান্য অবদান রাখায় বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়েছে উইকিলিকস এবং অ্যাসাঞ্জ।

অনেকে উইকিলিকসকে বিকল্প ধারার সংবাদমাধ্যম হিসেবে অভিহিত করেন। তবে অ্যাসাঞ্জের ভাষ্যে, এটা বৈজ্ঞানিক সাংবাদিকতা।

আরও