দূষণে বছরে ৯০ লাখ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন: গবেষণা

নাইজেরিয়ার দূষিত একটি ম্যানগ্রোভ বনে মরে পড়ে আছে একটি গাছ
ছবি: রয়টার্স

বায়ু ও বিষাক্ত বর্জ্যের দূষণে পরিবেশ দূষিত হয়ে ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে আনুমানিক ৯০ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এরপরও পরিবেশ দূষণ পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী একটি গবেষণা নিবন্ধে এসব তথ্য জানান। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

বিশ্বের মৃত্যুর তথ্য-উপাত্ত ও দূষণের মাত্রা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে তাঁরা বলছেন, শিল্পপণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরায়ণের ফলে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিশ্বে বায়ু দূষণ সংক্রান্ত কারণে মৃত্যু ৭ শতাংশ বেড়েছে।

পিওর আর্থ নামে দূষণ নিয়ে কাজ করা একটি অলাভজনক সংগঠনের প্রধান ও গবেষণার সহলেখক রিচার্ড ফুলার বলছেন, ‘আমরা একটি গরম পাত্রে বসে আছি এবং ধীরে ধীরে জ্বলছি। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন, ম্যালেরিয়া ও এইচআইভির মতো পরিবেশ দূষণে অত গুরুত্ব দিচ্ছি না।’

আরও পড়ুন

২০১৭ সালে একই গবেষণার একটি প্রাথমিক সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, দূষণে প্রতিবছর প্রায় ৯০ লাখ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। অর্থাৎ ছয়জনে একজনের মৃত্যুর কারণ দূষণ। এতে করে প্রতি বছর বিশ্ব অর্থনীতির ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলার ক্ষতি হচ্ছে। অথচ তুলনায় দেখা যাচ্ছে, করোনা মহামারিতে এখন পর্যন্ত ৬৭ লাখ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।

দূষণে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখা দশ দেশের অধিকাংশই আফ্রিকার
ছবি: রয়টার্স

সর্বশেষ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ল্যানচেট প্ল্যানেটারি হেলথ জার্নালে। গবেষণায় বিজ্ঞানীরা যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিসের ২০১৯ সালের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছেন। গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিস নামে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের চলমান গবেষণায় বিশ্বজুড়ে বায়ুদূষণ পরিস্থিতি ও বায়ুদূষণের কারণে কত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে সেই হিসাব করা হয়।

প্রথাগত দূষণে মৃত্যু কমলেও এখনো সেটা আফ্রিকা ও অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য প্রধান সমস্যা হিসেবে থেকে গেছে। আফ্রিকার তিন দেশ চাদ, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, নাইজারে এখনো দূষণ সংক্রান্ত মৃত্যুর বড় কারণ দূষিত বায়ু, মাটি ও ঘরের ভেতরের দূষিত বায়ু।

আরও পড়ুন

নিউইয়র্কভিত্তিক গ্লোবাল অ্যালায়েন্স অন হেলথ অ্যান্ড পলিউশনের নির্বাহী পরিচালক ও গবেষণা নিবন্ধের সহলেখক রাকায়েল কুপকা জানাচ্ছেন, ভারী ধাতু, কৃষি রাসায়নিক পদার্থ ও জীবাশ্ম জ্বালানি নির্গমনের সংস্পর্শে আসার কারণে মৃত্যু ২০০০ সালের তুলনায় ৬৬ শতাংশ বেড়েছে।

আরও পড়ুন

তবে ঘরের বাইরের বায়ু দূষণের প্রসঙ্গ আসলে ব্যাংকক, চীন ও মেক্সিকো সিটির মতো বড় বড় শহরগুলোর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু ছোট শহরগুলোতে দূষণের মাত্রা বাড়ছেই।

গবেষণা অনুযায়ী, দূষণে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে এমন ১০টি দেশের বেশির ভাগ আফ্রিকার। পরিবেশ দূষণে সর্বাধিক মৃত্যু দেখা দেশগুলো যথাক্রমে চাদ, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, নাইজার, সোলোমন দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ আফ্রিকা, উত্তর কোরিয়া, লেসোথো, বুলগেরিয়া, বুরকিনা ফাসো।