থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া নতুন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত: যৌথ বিবৃতিতে ঘোষণা
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া আজ শনিবার অবিলম্বে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকরের বিষয়ে সম্মত হয়েছে। তিন দিন ধরে আলোচনার পর আজ দুই দেশ এক যৌথ বিবৃতিতে এ ঘোষণা দিয়েছে।
কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে দুই দেশ কয়েক সপ্তাহের প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘাত অবসানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার সীমান্ত বিরোধটা দীর্ঘদিনের। চলতি মাসে নতুন করে দুই দেশের আন্তসীমান্ত সংঘাত শুরু হয়। এতে জুলাইয়ে হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেঙে যায়। সরকারি হিসেবে কয়েক সপ্তাহের সংঘাতে দুই দেশের অন্তত ৪৭ জন নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১০ লাখ মানুষ।
আজ দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘উভয় পক্ষ এই যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরের পরমুহূর্ত থেকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের বিষয়ে সম্মত হয়েছে, যা ২০২৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা (স্থানীয় সময়) থেকে কার্যকর হচ্ছে। এ যুদ্ধবিরতির আওতায় সাধারণ নাগরিক, নাগরিক অবকাঠামো এবং প্রতিপক্ষের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলাসহ সব ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ থাকবে।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষের সেনাদের কেউ অগ্রসর হবে না এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের যত দ্রুত সম্ভব তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেবে।
দুই দেশ মাইন অপসারণ এবং সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে সহযোগিতা করতেও একমত হয়েছে।
দুই দেশের সীমান্তবর্তী বিরোধপূর্ণ অঞ্চলের প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে চলমান লড়াই থামাতে দুপুর ১২টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পর থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত আলোচনা শুরু হয়। তিন দিনের আলোচনা শেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে। কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড দুই দেশই আসিয়ানের সদস্য।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং মালয়েশিয়াও বিবদমান দুই প্রতিবেশী দেশকে নতুন করে যুদ্ধবিরতি শুরু করার জন্য চাপ দিচ্ছিল।
এই তিন দেশ গত জুলাই মাসে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে পাঁচ দিনের প্রাণঘাতী সংঘাত থামাতে একটি যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছিল। তবে সেই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হয়নি।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সংঘাতের মূল কারণ হলো ঔপনিবেশিক যুগে এ দুই দেশের মধ্যে তৈরি হওয়া ৮০০ কিলোমিটার (৫০০ মাইল) দীর্ঘ সীমান্ত। সেখানে থাকা প্রাচীন মন্দিরগুলোকে উভয় দেশই নিজেদের বলে দাবি করে।
জুলাইয়ে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে অনেক মানুষ মারা যায়। পরে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তি হয়, কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই তা ভেঙে যায়।
চলতি মাসে নতুন লড়াই শুরু হলে উভয় পক্ষ একে অপরকে দায়ী করে এবং সাধারণ মানুষকে নিশানা করে হামলার অভিযোগ করে।