৩০ বছর পর একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাচ্ছে এএনসি

প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাছবি: রয়টার্স

দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি)। প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে যাচ্ছে দলটি। গত বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে এমনটাই দেখা যাচ্ছে। অবশ্য চূড়ান্ত ফলাফল পেতে আগামী রোববার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ২০ দশমিক ২২ শতাংশ ভোট গণনা শেষে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার নেতৃত্বাধীন এএনসি পেয়েছে ৪৩ দশমিক ৫১ শতাংশ ভোট। বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (ডিএ) পেয়েছে ২৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ ভোট।

মার্ক্সবাদী ইকোনমিক ফ্রিডম ফাইটার (ইএফএফ) পেয়েছে ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ ভোট। আর এএনসি থেকে বাদ পড়া সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার নতুন দল উমখুনটো উই সিজ (এমকেপি) পেয়েছে ৮ দশমিক ১১ শতাংশ ভোট।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী শাসনামল অবসানের পর ১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বাধীন এএনসি জয়লাভ করে। এএনসি ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পায়। এরপর প্রতি পাঁচ বছর পরপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতা ধরে রাখলেও ধারাবাহিকভাবেই এএনসির ভোট কমছিল। সর্বশেষ ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৫৭ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পায় এএনসি।

জোট গঠনে এএনসির চ্যালেঞ্জ

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনে ৫০ শতাংশ ভোট বা ২০১ আসন না পেলে এএনসিকে জোট সরকার গঠনের পথে হাঁটতে হবে। এ ক্ষেত্রে ইকোনমিক ফ্রিডম ফাইটার্সের জুলিয়াস মালেমা ‘কিং মেকারের’ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন। তিনি এএনসি থেকে বের হয়ে নতুন দল গঠন করেছিলেন। এ ছাড়া জ্যাকব জুমার এমকেপির সঙ্গেও জোট সরকার গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।

অবশ্য দল দুটির সঙ্গে জোট সরকার গঠন কঠিন হবে এএনসির জন্য। জোট সরকার গঠনের শর্ত হিসেবে ডেপুটি প্রেসিডেন্ট এবং অর্থমন্ত্রীর পদ দাবি করেছে ইকোনমিক ফ্রিডম ফাইটার্স। অন্যদিকে এমকেপি শর্ত দিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রামাফোসাকে সরে যেতে হবে এবং প্রেসিডেন্টের ক্ষমা ঘোষণার মাধ্যমে জ্যাকব জুমার সব দুর্নীতি মামলা বাতিল করতে হবে। দুটি দলের দেওয়া শর্তই এএনসির জন্য রীতিমতো অপদস্থ হওয়ার মতো।

এ ক্ষেত্রে আরেকটি বিকল্প হতে পারে ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের নেতৃত্বাধীন মাল্টি-পার্টি চার্টার (এমপিসি) জোটের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করা। তাহলে সেটা হবে অনেকটা জাতীয় ঐক্যের সরকারের মতো। তবে এএনসি ৪০ শতাংশের কম ভোট পেলে জোট সরকার গঠনের চেষ্টা চালাতে পারে ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স।

আরও পড়ুন