দক্ষিণ আফ্রিকায় নির্বাচন: এএনসি এগিয়ে, নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে শক্ত ঘাঁটিতে

৫০ শতাংশ ভোট না পেলে জোট সরকার গঠনের জন্য তাদের বিরোধী দলগুলোকে কাছে টানতে হবেছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

দক্ষিণ আফ্রিকায় সাধারণ নির্বাচনে ৯১ দশমিক ৬২ শতাংশ ভোটকেন্দ্রের ভোট গণনা শেষ হয়েছে। এতে ৪০ দশমিক ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছে ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস। গতকাল শুক্রবার রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচন কমিশনের তথ্যের ভিত্তিতে রয়টার্স এমন খবর জানিয়েছে।

আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এএনসি এগিয়ে থাকলেও এখন পর্যন্ত যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তাতে বলা যায়, ৩০ বছরে এই প্রথমবারের মতো দলটি ৫০ শতাংশ ভোট নিশ্চিত করতে পারছে না। আর তাহলে জোট সরকার গঠনের জন্য তাদের বিরোধী দলগুলোকে কাছে টানতে হবে।

এ পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (ডিএ) দল দ্বিতীয় এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার দল উমখুনটো উই সিজ (এমকে) তৃতীয় অবস্থানে আছে। তবে নির্বাচনে জ্যাকব জুমার দল উমখুনটো উই সিজ (এমকে) যে উল্লেখজনক সাফল্য পেয়েছে, তা বলাই যায়। এটি এমন কিছু জায়গায় জয়ী হয়েছে, যা একসময় এএনসির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। দলটি কোয়াজুলু নাটালে খুব সহজেই জয়ী হতে যাচ্ছে। এটি এমন এক প্রদেশ, যেখানে ১৯৯৪ সাল থেকে এএনসি কখনো পরাজিত হয়নি।

সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ওয়েস্টার্ন কেপ প্রদেশে ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আবারও ক্ষমতায় ফিরছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

শুধু কোয়াজুলু নাটাল ও ওয়েস্টার্ন কেপই নয়, গাওতেং প্রদেশেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে এএনসি। গাওতেংয়ের মতো কিছু প্রদেশে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে এএনসিকে জোট করতে হবে।

আরও পড়ুন

রাজনীতি–বিশ্লেষক সিজ মোপোফু-ওয়ালশ মনে করেন, এই ফলাফলের মধ্য দিয়ে ইঙ্গিত মিলছে যে ‘এএনসির আধিপত্যের সমাপ্তি’ ঘটতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটা ভালো। যতটা আশা, ততটা ভয়ও থাকা উচিত। কী ঘটতে যাচ্ছে, মানুষ উদ্বিগ্ন ও অনিশ্চিত। এর মধ্য দিয়ে পরিবর্তন ও জবাবদিহির নতুন পথ খুলবে।’

দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী শাসনামল অবসানের পর ১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বাধীন এএনসি জয়লাভ করে। এরপর পাঁচ বছর পরপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৩০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে এএনসি। তবে ক্ষমতা ধরে রাখলেও ধারাবাহিকভাবেই এএনসির ভোট কমছিল। সর্বশেষ ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৫৭ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পায় এএনসি।