নাইজেরিয়ায় স্কুল থেকে ১৪০ শিক্ষার্থীকে অপহরণ

নাইজেরিয়ার কাদুনা রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে বেথেল ব্যাপ্টিস্ট হাইস্কুলের ছাত্রাবাসে হামলা চালিয়ে ১৪০ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে বন্দুকধারীরা।
ফাইল ছবি: এএফপি

নাইজেরিয়ার কাদুনা রাজ্যের একটি আবাসিক বিদ্যালয়ে বন্দুকধারীদের হামলার পর থেকে ১৪০ শিক্ষার্থী নিখোঁজ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের অপহরণ করে নিয়ে গেছে বন্দুকধারীরা। গত ডিসেম্বেরের পর থেকে নাইজেরিয়ার ওই অঞ্চলের বিদ্যালয়ে হামলা চালিয়ে অপহরণের এটা দশম ঘটনা।

সোমবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাদুনা রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে বেথেল ব্যাপ্টিস্ট হাইস্কুলে ছাত্রাবাসে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। রাতভর চালানো হামলায় ওই বিদ্যালয়ের ১৪০ শিক্ষার্থী অপহরণ করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে একজন শিক্ষিকাসহ ২৬ জনকে।  

ওই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন রেভারেন্ড জন হায়াব বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ২৫ জন শিক্ষার্থী পালিয়ে আসতে পেরেছে। তাদের মধ্যে তাঁর ১৭ বছরের ছেলেও রয়েছে।

জন হায়াবের ভাষ্যমতে, স্কুলে ১৮০ জনের মতো শিক্ষার্থী ছিল। তারা পরীক্ষায় বসার প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিল।

ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইমানুয়েল পল বলেন, ‘আমাদের ১৪০ জন শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়েছে। মাত্র ২৫ জনকে উদ্ধার করা গেছে। আমরা এখনো জানি না শিক্ষার্থীদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

তবে কাদুনা রাজ্যের পুলিশের মুখপাত্র মুহাম্মদ জালিগে হামলার ঘটনা নিশ্চিত করলেও ঠিক কতজন অপহরণ হয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।’ এখন পর্যন্ত কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি। মুক্তিপণ চাওয়া হয়নি।

হাসপাতাল ও পুলিশের দপ্তরে হামলা, অপহরণ
আবাসিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি নাইজেরিয়ার কাদুনা রাজ্যের জারিয়া এলাকায় একটি হাসপাতালের কোয়ার্টার থেকে সাতজন স্টাফকে তুলে নিয়ে গেছে বন্দুকধারীরা।

তাদের সঙ্গে নিয়ে গেছে একজন নার্সের এক বছর বয়সী এক শিশুকেও। স্থানীয় সময় রোববার ভোরে সেখানকার ন্যাশনাল টিউবারকিউলোসিস অ্যান্ড লেপ্রোসি সেন্টার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও হাসপাতাল কর্মকর্তাদের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

হাসপাতালের মুখপাত্র মরিয়াম আবদুলরাজ্জাক রয়টার্সকে বলেন, রোববার ভোরের দিকে ঘণ্টাব্যাপী এ হামলা চলে। হামলাকারীরা ছয়জনকে তুলে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে দুজন নার্স ও তাদের মধ্যে একজনের এক বছরের শিশুকে তুলে নেওয়া হয়।

অপহৃতদের মধ্যে হাসপাতালের একজন ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান, একজন নিরাপত্তারক্ষী ও একজন স্টাফও রয়েছেন।

এ হামলার বিষয়ে আবদুলরাজ্জাক বলেন, ‘তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে অপহরণকারীদের কাছ থেকে এখনো কেউ মুক্তিপণ দাবি করেনি।’ তবে স্থানীয় পুলিশ বলছে, হামলার পরে হাসপাতালের কোয়ার্টার থেকে আটজনকে তুলে নিয়ে গেছে বন্দুকধারীরা। পুলিশ অপহৃত হাসপাতাল কর্মীদের উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে কাদুনা পুলিশের মুখপাত্র মুহাম্মদ জারিজ পৃথক এক বিবৃতিতে জানান, একই সময়ে বন্দুকধারীরা বিভাগীয় পুলিশ সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছে। দায়িত্বরত পুলিশ কমকর্তাদের ছারখার করে দিতে এ হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে হামলাকারীদের ব্যাপক গুলিবিনিময় হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন হামলাকারী আহত হয়েছে।

আরও পড়ুন