সমাধিক্ষেত্রে পাওয়া গেল অর্ধশতাধিক প্রাচীন কফিন

মিসরের কায়রোয় কফিন প্রদর্শন করে কর্তৃপক্ষ। গত রোববার
ছবি: এএফপি

মিসরে নতুন করে প্রাচীন সম্পদের সন্ধান পেয়েছেন গবেষকেরা। ওই প্রাচীন নিদর্শনগুলোর মধ্যে তিন হাজারের বেশি পুরোনো অর্ধ শতাধিক কফিনও রয়েছে। গত রোববার এই তথ্য জানিয়েছে মিসর। দেশটির প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ জাহি হাওয়াস এই আবিষ্কারকে মিসরের ইতিহাসের ‘নতুন অধ্যায়’ বলে মন্তব্য করেছেন।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, মিসরের প্রত্নতত্ত্বের জন্য বিখ্যাত সাকারা। রাজধানী কায়রোর খুব কাছে অবস্থিত সাকারা প্রাচীন মিসরের রাজধানী মেমফিসের বিশাল সমাধিক্ষেত্র। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ মেমফিসে এক ডজনের বেশি পিরামিড, পুরোনো বিহার ও প্রাণী সমাধিস্থান রয়েছে।

সাকারায় পুরাকীর্তি নিদর্শনের সন্ধানকারী দলের নেতৃত্ব দেন প্রত্নতত্ত্ববিদ জাহি হাওয়াস। মিসরের ওল্ড কিংডমের ষষ্ঠ রাজবংশের প্রথম শাসক কিং তেতির পিরামিডের কাছে প্রাচীন ওই নিদর্শনের সন্ধান পায় দলটি। রোববার এএফপিকে হাওয়াস বলেন, সমাধিক্ষেত্রের একটি গর্তে ৫০টির বেশি পুরোনো কাঠের কফিন পাওয়া গেছে। কফিনগুলো নিউ কিংডমের সময়কালের (খ্রিষ্টপূর্ব ১৬০০ থেকে ১১০০)।

এই আবিষ্কার সাকারা এবং বিশেষ করে নিউ কিংডমের ইতিহাস নতুন করে লেখা হবে। মিশরে নিউ কিংডম শুরু হয়েছিল তিন হাজার বছর আগে।

হাওয়াস বলেছেন, তাঁর দল সমাধিক্ষেত্রে মোট ২২টি সমাধি গর্ত আবিষ্কার করেছে। এর মধ্যে একটি ছিল এক সেনা সদস্যের। তাঁর মরদেহের পাশে যুদ্ধাস্ত্র রাখা ছিল। ওই সমাধিক্ষেত্রে পাথরের একটি কফিনও পাওয়া গেছে। এ ছাড়া প্রায় পাঁচ মিটার লম্বা একটি প্যাপিরাস, মাস্ক, কাঠের নৌকা, প্রাচীন মিসরীয়দের খেলার যন্ত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, এটা একটি বিরল এবং নতুন আবিষ্কার। কারণ, এসব প্রাচীন নিদর্শনগুলোর বেশির ভাগই নিউ কিংডমের আগের সময়কালের।

রোববার সাংবাদিকদের জন্য ওই প্রাচীন নিদর্শনগুলো প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। যদিও ওই প্রত্নতত্ত্ব স্থানটির খননকাজ এখন চলছে।

হাওয়াস বলেছেন, সমাধিক্ষেত্র থেকে প্রাচীন নিদর্শন সন্ধানের কাজ অব্যাহত রয়েছে। খনন কার্যক্রম এখনো ৭০ শতাংশ বাকি। ফলে আরও নতুন নতুন প্রাচীন নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।

মিশরের পর্যটন ও পুরাকীর্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, এ যাবৎকালের ‘সবচেয়ে বড়’ পুরাকীর্তি আবিষ্কারের ঘটনা এটি।

২০১১ সালের আরব বসন্তের সময় থেকেই মিসরে পর্যটন খাতে মন্দা চলছে। এই মন্দা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে। এখন মিসর সরকারের প্রত্যাশা, এই নতুন আবিষ্কার দেশের পর্যটন খাতকে চাঙ্গা করবে।