সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সংলাপে প্রথমবারের মতো যোগ দেবে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার এ ঘোষণা দিয়েছে। অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় আগামীকাল শুক্রবার থেকে এ সংলাপ শুরু হচ্ছে। খবর এএফপির।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ ভিয়েনা বৈঠকে যোগ দেবেন। আলোচনায় অন্য যে দেশগুলো অংশ নেবে তাদের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, তুরস্ক, মিসর ও ইরাক। ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও (ইইউ) সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ওই বৈঠকে অংশ নেবেন।
সিরিয়ায় চার বছর ধরে চলমান গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটানোই ভিয়েনা বৈঠকের লক্ষ্য। ২০১২ ও ২০১৪ সালে জেনেভায় একই ধরনের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে আগের দুই দফা সংলাপে ইরান আমন্ত্রণ পায়নি। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জন কারবি গত মঙ্গলবারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, তেহরান এবারের আলোচনায় আমন্ত্রণ পাবে।
মিত্র হিসেবে পরিচিত ইরানের কাছ থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার বিপুল অঙ্কের আর্থিক সহায়তা পেয়েছে বলে ধারণা করা হয়। পাশাপাশি গৃহযুদ্ধে দামেস্ককে অস্ত্র-সহায়তাও দিয়ে থাকতে পারে তেহরান। সিরিয়ায় বাশারপন্থী বাহিনীগুলোকে সাহায্য করার জন্য লেবাননের সংগঠন ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহরও প্রভাব থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ নিজ জনগণের বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি আইএস জঙ্গিদের অগ্রযাত্রা থামানোর জন্য গঠিত একটি বাহিনীকে বাধা দিচ্ছেন।
প্রেসিডেন্ট বাশারকে সরিয়ে সিরিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন ঐক্যের সরকারকে ক্ষমতায় বসাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু রাশিয়া এখনো মিত্র বাশারের পক্ষে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
সিরিয়ায় ২০১১ সাল থেকে চলমান গৃহযুদ্ধে অন্তত আড়াই লাখ মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় ১০ লাখ। এ ছাড়া এক কোটির বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। প্রতিবেশী কয়েকটি দেশ ছাড়াও ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপ পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছে সিরিয়ার বহু মানুষ।