রাখাইনে আরাকান আর্মির হামলায় ৮০ জান্তা সেনা নিহত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি ছোট শহরে জান্তা বাহিনীর প্রায় ৮০ সেনা নিহত হয়েছেন। রাখাইনের রামরি দ্বীপে অবস্থিত এ শহরের নামও রামরি। তিন দিনের লড়াইয়ে এসব সেনা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে রাখাইনের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)।

রাখাইনে আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য গত শনিবার রামরিতে নতুন করে সেনা পাঠায় জান্তা সরকার। শনিবার চারটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে ১২০ সেনা আসেন রামরিতে। আরাকান আর্মির দাবি, দুই দিনে এসব সেনার তিন ভাগের দুই ভাগ নিহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন

আরাকান আর্মি বলছে, গত শনিবার এসব সেনার প্রায় ৬০ জন তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত হন। এসব সেনার মরদেহ উদ্ধার করার সময় বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে তারা।

বিদ্রোহী আরাকান আর্মি বলছে, শনিবারের পর গতকাল সোমবার রামরি দ্বীপ থেকে পিছু হটার সময় তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে জান্তা বাহিনীর আরও ২০ সেনা নিহত হন। তাঁদের কাছ থেকেও গোলাবারুদ ও খাদ্যসামগ্রী জব্দ করা হয়।

রামরি শহরে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহীদের সশস্ত্র লড়াই শুরু হয় গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। শহরটিতে জান্তা বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে আরাকান আর্মি হামলা করার পর এ লড়াই শুরু হয়।

আরাকান আর্মি বলছে, এর পর থেকে শহরটিতে বিদ্রোহীদের অবস্থান নিশানা করে জল, স্থল ও আকাশপথে বোমা হামলা চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী। জান্তার হামলায় শহরটির অনেক বাড়িঘর ধসে পড়েছে। এ ছাড়া শহরের একটি হাসপাতাল ও বিপণিবিতানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আরও পড়ুন

আরাকান আর্মি বলছে, ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে এ হামলা শুরুর পর তারা জান্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বেশ কিছু সেনাচৌকির দখল নিয়েছে। রামরি ছাড়াও রাখাইনের মিনবিয়া শহরে একটি সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রক্ষায় গতকাল থেকে বিমান হামলা শুরু করেছে জান্তা বাহিনী।

এদিকে রাখাইনের পনাগিউন, মংডু ও বুথিডং শহরে নিয়ন্ত্রণ নিতে জান্তা বাহিনীর ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে আরাকান আর্মি। তারা বলছে, রাখাইনে একের পর এক এলাকা ও সেনাচৌকির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জান্তা বাহিনী বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে এখন।

আরাকান আর্মির প্রধান মেজর জেনারেল তুন মিয়াত নাইং মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্ল্যাইং ও তাঁর অনুগত জেনারেলদের প্রতি রাখাইনে পরাজয় স্বীকার করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর হামলা বন্ধ করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন

তুন মিয়াত নাইং গতকাল সোমবার এক এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘আপনাদের সামরিক দক্ষতা ও কঠোর পরিশ্রমকে আমি সম্মান জানাই। তবে আপনারা নিশ্চিতভাবেই এ যুদ্ধে পরাজিত হবেন। ভালোয় ভালোয় পরাজয় মেনে নেওয়াটাই হবে আপনাদের জন্য সর্বোত্তম উপায়।’