মিয়ানমার সংকট নিরসনে জাতিসংঘের ভূমিকায় হতাশ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব
ছবি: টুইটার

মিয়ানমারের অব্যাহত রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব। গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ হতাশা প্রকাশ করেন। খবর আল-জাজিরার

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিরাপত্তা পরিষদ ‘কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ নেয়নি। জাতিসংঘের ভূমিকা ‘খুবই দুঃখজনক’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন

ইয়াকুব বলেন, কেউ কেউ দেখেছেন, কীভাবে মিয়ানমার ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদ হাত গুটিয়ে নিয়েছে এবং বিষয়টি আসিয়ানের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। আসিয়ান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট।

অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। জাতিসংঘের কয়েকজন বিশেষজ্ঞের ভাষায়, এ ঘটনা দেশটিকে ক্রমবর্ধমান গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইতিমধ্যে এতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবিলম্বে সহিংসতার অবসান, নতুন বিশেষ দূত নিয়োগ, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনাসহ আসিয়ানের যে ‘পাঁচ বিষয়ে ঐকমত্য’ রয়েছে, সেগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন

ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব বলেন, জান্তা সরকার কর্তৃক আসিয়ানের ‘পাঁচ বিষয়ে ঐকমত্য’ বাস্তবায়নে অর্থবহ অগ্রগতি না হওয়ায় মালয়েশিয়া হতাশ। বর্তমান বাস্তবতায় আসিয়ানের ‘পাঁচ বিষয়ে ঐকমত্য’ আর বেশি দূর চালিয়ে নেওয়ার মতো নয়।

মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে মালয়েশিয়া। সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত রাজনীতিকদের গঠিত জাতীয় ঐক্যের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও আসিয়ানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরও মিয়ানমারের জেনারেলদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিতে জোর দিয়ে আসছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সংকট মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ শরণার্থীর অবস্থা আরও জটিল করছে। এসব শরণার্থীর অধিকাংশই মুসলিম রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর। প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বর্তমানে বাংলাদেশে শরণার্থীশিবিরে নিঃস্ব জীবন যাপন করছে।

ইয়াকুব বলেন, ১৯৫১ সালের কনভেনশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব রিফিউজি এবং ১৯৬৭ সালের প্রটোকলে স্বাক্ষরকারী দেশ না হয়েও মালয়েশিয়া দুই লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মানবিক দিক বিবেচনায় আশ্রয় দিয়েছে।