জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে চালানো হামলার ঘটনাক্রম

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা আজ সকালে নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে পশ্চিম জাপানের ওয়াকাইয়ামা জেলায় গিয়েছিলেন। জাপানের পাঁচটি নির্বাচনী এলাকায় সংসদের উচ্চ ও নিম্ন কক্ষের শূন্য আসনগুলোতে ২৩ এপ্রিল ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ওয়াকাইয়ামা এর মধ্যে একটি।

বেলা ১১টা ২০ মিনিটে কিশিদা ওয়াকাইয়ামার সাইকাজাকি বন্দরে এসে উপস্থিত হন। জাপানের একটি প্রধান মৎস্য বন্দর হিসেবে এটি পরিচিত। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে তাঁর ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল।

জাপানের নাগরিক সম্প্রচার কেন্দ্র এনএইচকের প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার আগে তিনি মৎস্য বন্দর পরিদর্শন করেন এবং সদ্য ধরা মাছের তৈরি সুশি চেখে দেখেন।

এরপর নির্ধারিত গন্তব্যে উপস্থিত হয়ে ভাষণ শুরু করার আগে তিনি সেখানকার নির্বাচনে জাপানের প্রধান ক্ষমতাসীন উদার গণতন্ত্রী দলের প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলছিলেন, এ সময় সিলিন্ডার আকারের রুপালি রঙের ধাতব একটি বস্তু উড়ে এসে অল্প দূরে পড়ে। মানুষ এতে কিছুটা উদ্বিগ্ন হলেও তখন পর্যন্ত আতঙ্কিত হয়নি। অনেকেই সেলফি ব্যবহার করে বস্তুটির ছবি তোলার চেষ্টা করছিলেন। তবে এর অল্প পরেই বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় এবং মানুষ ছুটতে শুরু করে।

ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয় এক যুবককে (মাঝে)
ছবি: রয়টার্স

ঘটনাস্থল থেকে এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করে আটক করা হয়। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ প্রায় সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যক্তিকে আটক করে গাড়িতে উঠিয়ে দেয়।

প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্য বিস্ফোরণের পরপরই কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আটক ব্যক্তি বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে আছেন এবং তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

জাপানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তাঁর নাম বলা হয়েছে রিউজি কিমুরা। তাঁর বয়স ২৪ বছর। তিনি হিওগো জেলার কাওয়ানিশি শহরের বাসিন্দা। বর্তমানে তাঁকে নাগরিকদের কাজে বলপূর্বক বাধা দেওয়ার সন্দেহে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

পুলিশের সামনে কথা বলতে তিনি অবশ্য অস্বীকার করে আসছেন। আর তাই হঠাৎ এ রকম হামলা চালানোর পেছনের কারণ সম্পর্কে এখনো তেমন কিছুই জানা যাচ্ছে না। ফলে এই নীরবতা অন্যদিকে আবার হামলার কারণ নিয়ে নানা রকম গুজবের জন্ম দিচ্ছে জাপানে।

কেউ কেউ ধারণা করছেন, সাতটি অগ্রসর দেশের জোট জি-৭–এর আসন্ন শীর্ষ বৈঠক ও মন্ত্রী পর্যায়ের অন্যান্য বৈঠকের আগে এ হামলা জাপান সরকারের অনুসৃত নীতি নিয়ে একশ্রেণির মানুষের মধ্যে দেখা দেওয়া অসন্তোষের প্রতিফলন হতে পারে। ১৯ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া শীর্ষ বৈঠকের আগে সদস্যদেশগুলোর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের বেশ কিছু বৈঠক জাপানের বেশ কয়েকটি শহরে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে জি-৭–এর পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রীরা আজ থেকে উত্তরের শহর হোক্কাইডোতে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন এবং আগামীকাল ১৬ এপ্রিল থেকে নাগানো জেলার কারুইজাওয়ায় শুরু হচ্ছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক।

আরও পড়ুন