সিডনিতে ১ মাসেও প্রবাসী বাংলাদেশিকে দাফন করা যায়নি

লাশ
প্রতীকী ছবি

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে মৃত্যুর এক মাস পরেও প্রবাসী বাংলাদেশিকে দাফন করা হয়নি। গত মাসে মেট্রাভিলে নিজ বাসায় মো. আহসানউল্লাহ (৭১) নামের ওই ব্যক্তির লাশ পাওয়া গিয়েছিল। লাশটি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের তত্ত্বাবধানে রাখা আছে। এমন ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ক্যাম্বেলটাউন কমিউনিটির নেতারা।

গত ১৫ জানুয়ারি পরিবার নিয়ে ফেরার পথে মো. আহসানউল্লাহর বাসায় যান প্রবাসী বাংলাদেশি মো. ওহিদুল ইসলাম সোহেল। সেদিনই তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘তাঁর (আহসানউল্লাহ) বাসার দরজায় বাইরে অনেকগুলো চিঠি পড়ে ছিল। আমি অনেকক্ষণ দরজায় ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ফিরে যাচ্ছিলাম। ফিরে যাওয়ার সময় হঠাৎ একটা চিঠিতে আমার নজর পড়ে। অস্ট্রেলিয়ায় এ চিঠিটা আসে কোনো বিল পরিশোধের বকেয়ার তারিখ পার হয়ে গেলে। চিঠিটা ছিল ১৩ ডিসেম্বরের। এ কারণে সন্দেহ হওয়ায় প্রতিবেশীর দরজায় ডাক দিলাম। সেখান থেকে একজন প্রবীণ অস্ট্রেলিয়ান বের হন। তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম আহসানউল্লাহকে দেখেছেন কি না। তিনি জানান অনেক দিন তাঁকে দেখেননি। তিনি বলেন, বাসার ভেতর থেকে দুর্গন্ধ আসছিল, মনে হয় সে মারা গিয়েছে।’

এরপর আহসানউল্লাহর খোঁজ চেয়ে হাউজিং এনএসডব্লিউতে কল করেন ওহিদুল ইসলাম। কিন্তু তাঁদের পক্ষ থেকে কোনো তথ্য না পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। সোহেল বলেন, ‘পুলিশ আমাকে কল করে জানায় তারা আহসান ভাইয়ের মৃতদেহ পেয়েছে। আমি তাদের আমার পরিচয় এবং কাজের সুবাদে তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্কের তথ্য দিই। তাঁর কোনো স্বজন নেই বলেই আমার ধারণা। তাই আমি পুলিশকে বারবার বলেছিলাম যে তিনি মুসলিম, তাঁকে দাফন করা হলে মুসলিম উপায়ে করতে হবে। আর তোমরা কাউকে খুঁজে না পেলে আর দাফন করতে না পারলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করো।’

আহসানউল্লাহর বিষয়ে ওহিদুল বলেন, ‘যত দূর মনে পড়ে তাঁর বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছিলেন। অনেক চেষ্টার পর ৫ থেকে ৭ বছর আগে তিনি স্থায়ী বাসিন্দার ভিসা পেয়েছিলেন। তাঁর একটি কিডনি অকেজো হয়ে গিয়েছিল। একজন অস্ট্রেলিয়ান তাঁকে কিডনি দান করলে তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়।’

প্রবাসে বাংলাদেশির এমন মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ক্যাম্বেলটাউন কমিউনিটির বাংলাদেশি সমাজসেবক আবুল সরকার। তিনি বলেন, ‘এটি খুবই মর্মান্তিক, যা কারও জন্যই কাম্য নয়। আমরা কমিউনিটির পক্ষ থেকে তাঁর দাফন কার্য সম্পাদনের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।’

একই ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম সিমেন্ট্রি বোর্ডের সভাপতি প্রবাসী বাংলাদেশি কাজী আলী। তিনি বলেন, ‘পুলিশ তদন্ত শেষ করে কমিউনিটির কাছে মরদেহ হস্তান্তর করলে আমরা দাফন সম্পাদনে সর্বাত্মক সহায়তা করব।’