শ্রীলঙ্কায় দখল করা সরকারি ভবনগুলো ছেড়ে দেবেন বিক্ষোভকারীরা

কয়েক ঘণ্টার চেষ্টার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢুকতে পেরে বিক্ষোভকারীদের উচ্ছ্বাস। কলম্বো, শ্রীলঙ্কা, ১৩ জুলাইছবি: রয়টার্স

প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়—শ্রীলঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ও সরকারি বিভিন্ন ভবন এখনো বিক্ষোভকারীদের দখলে রয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা এসব ভবনের দখল ছেড়ে দিতে চান। কিন্তু ভবনগুলোর দখল ছাড়লেও প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলমান থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের একজন মুখপাত্র আজ বৃহস্পতিবার এএফপিকে বলেন, ‘আমরা দ্রুত ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দখল ছেড়ে দিতে চাই। তবে আমাদের লড়াই চলবে।’

আরও পড়ুন

অর্থনৈতিক সংকটের জেরে কলম্বোয় গত শুক্রবার সরকারবিরোধী তুমুল গণ-আন্দোলন হয়। এর পরদিন প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। গতকাল বুধবার তাঁর প্রথমে মালদ্বীপে আশ্রয় নেওয়ার খবর পাওয়া যায়। আজ সেখান থেকে রওনা হয়ে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন তিনি। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নিতে পারেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী রনিল কোথায় আছেন, তা জানা যায়নি।

জানা গিয়েছিল, দেশ ছাড়ার আগে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া তাঁর পদত্যাগপত্রে সই করে গেছেন। কিন্তু তাঁর পদ ছাড়ার বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে পদত্যাগ করেননি রনিলও। বরং পালানোর আগে রনিলকে দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের পদে বসিয়ে গেছেন গোতাবায়া।

আরও পড়ুন

এ পরিস্থিতিতে বিক্ষোভকারীরা তাঁদের পদত্যাগের দাবিতে অনড় রয়েছেন। সরকারি ভবনগুলো দখলে নিয়ে চলছে হাজারো মানুষের টানা প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছে। দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা ও কারফিউ।

এদিকে শ্রীলঙ্কার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় দেশটির সেনাবাহিনীকে শক্তি প্রয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকারি সম্পত্তি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং মানুষের জীবন রক্ষা করার জন্য শক্তি ব্যবহার করার ক্ষমতা পেয়েছেন সেনাসদস্যরা।

আরও পড়ুন

শ্রীলঙ্কার জ্যেষ্ঠ বৌদ্ধ ভিক্ষু ওমালপি সবিথা সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘২০০ বছরের বেশি পুরোনো প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। ভবনটি আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ। প্রাসাদটি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।’

এদিকে শ্রীলঙ্কার পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতেও কলম্বোয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পার্লামেন্ট ভবনের সামনে সংঘর্ষে একজন সেনাসদস্য ও একজন কনস্টেবল আহত হয়েছেন। কলম্বোর প্রধান হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বুধবারের সংঘর্ষে আহত ৮৫ জন হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছেন। এদিন একজন বিক্ষোভকারীর মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন