এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল ইরান

ইরানের তেহরনে নারীদের বিক্ষোভ
ছবি : এএফপি

মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানে চলমান বিক্ষোভে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে এই প্রথম এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। তাঁর বিরুদ্ধে তেহরানে এক নিরাপত্তাকর্মীকে ছুরিকাঘাতে আহত করা ও রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করার অভিযোগ আনা হয়। দেশটির সংবাদ সংস্থা তাসনিম এ তথ্য জানায়।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর দেশটির নীতি পুলিশের হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে হিজাব নীতি না মানার অভিযোগ আনা হয়েছিল। মাসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশটিতে বিক্ষোভের শুরু হয়, যা দেশটির কর্তৃপক্ষকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।

তাসনিমের প্রতিবেদনে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ওই বিক্ষোভকারীর নাম মহসেন সেকারি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তাঁর বিস্তারিত পরিচয় জানানো হয়নি।

ইরানের কর্তৃপক্ষ কঠোরভাবে বিক্ষোভ দমন করছে। দেশটির বিশেষ বাহিনী রেভল্যুশনারি গার্ড গত সোমবার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় দেশটির বিচার বিভাগের প্রশংসা করেছে। বিচার বিভাগের মুখপাত্র মাসুদ সেতায়েশি মঙ্গলবার বলেন, বাসিজ মিলিশিয়ার এক সদস্যকে হত্যার অভিযোগে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

গত বুধবার ইরানে ‘স্টুডেন্ট ডে’ পালিত হয়। দেশটির মানবাধিকার গ্রুপগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বুধবার কর্মীরা কাজে যোগ না দিয়ে ধর্মঘট পালন করেন। শিক্ষার্থীরাও ক্লাস বর্জন করেন। দেশটির সাবেক সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ খাতামি এদিন বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানান। তিনি বলেন, ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ একটি সুন্দর বার্তা, যা উন্নত ভবিষ্যতের আন্দোলন বোঝায়। স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তাকে পরস্পরের বিরুদ্ধে নেওয়া উচিত নয়। একই দিনে বিক্ষোভে দমন-পীড়ন চালানোর ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বোন বাদরি হোসেইনি খামেনি। দেশবাসীর উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে তিনি ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রতি বিক্ষোভকারীদের দিকে তাক করা অস্ত্র নামিয়ে ফেলার আহ্বান জানান।

বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি তেহরান ইউনিভার্সিটি পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সেখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে দাঙ্গার পরিবেশে পরিণত হতে না দেওয়ার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। যাঁরা বিক্ষোভ করছেন, তাঁরা দাঙ্গাবাজ। নিশ্চয়ই আপনারা বিক্ষোভকারী ও দাঙ্গাবাজের তফাত বোঝেন।’

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন